و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

কোন মুসলমানের আনন্দে আনন্দিত হওয়া, বিপদে দুঃখিত ও ভারাক্রান্ত হওয়া ঈমানের দাবি।

حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا سَيَّارٌ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ، فَلَقَّنَنِي، فِيمَا اسْتَطَعْتُ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ.

৬৭১১। ইয়াকুব ইবনে ইররাহীম (রাহঃ) ... জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে তার কথা শোনা ও তাঁর আনুগত্য করা ও প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কল্যাণ কামনার ব্যাপারে বায়আত গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে এ কথা বলতে শিখিয়ে দিলেন যে, আমার সাধ্যের আওতাভুক্ত বিষয়ে।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৭১১ (আন্তর্জাতিক নং ৭২০৪)
বর্ণনাকারী: জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী (রাঃ) (মৃত্যু ৫১ হিজরী)

উক্ত হাদীসের আলোকে কারো জন্মদিনে বা বিবাহ বার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা নিষেধ হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু এসব ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক কয়েকটি নীতিমালা আমাদেরকে সর্বদা মনে রাখতে হবে।

১. আমাদের শরীয়তে যেসব বিষয় প্রমাণিত নয় এমন কোন কাজ ইবাদত মনে করে পালন করলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে।

عن عَائِشَة أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ " .

আয়েশা (রাযিঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করলো যা আমাদের ধর্মে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।
—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩৪৪

২. আমাদের প্রাত্যহিক কাজ থেকে শুরু করে ইবাদতের বিষয়াদিও যেন কাফির মুশরিকদের সাথে মিলে না যায় এই বিষয়ে হুশিয়ার থাকতে হবে।

عن ابن عمر رضي الله عنهما مرفوعا: من تشبه بقوم فهو منهم

ইবন উমার রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যদি কেউ কোনো জাতির অনুকরণ করে তবে সে সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।
—ফিকহুস সুনান, হাদীস নং ২৩৮৪

উপরোক্ত দুইটি হাদিসের আলোকে জন্মদিনে বা বিবাহ বার্ষিকীতে শুভেচ্ছা বার্তা ও শুভকামনা পাঠানোর সুযোগ নেই।
প্রথমত জন্ম ও বিবাহ বার্ষিকী পালন করা আমাদের শরীয়তের নীতি আদর্শের মধ্যে নেই।
দ্বিতীয়ত এই দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো কাফের মুশরিকদের রীতি হওয়ায় মুসলমানরা এর অনুকরণ করতে পারে না। বরং এক মুসলমান তো অপর মুসলমানের জন্য সব সময় শুভ কামনা করে দোয়া করবে, শুভেচ্ছা জানাবে। বছরের শুধু একদিন শুভেচ্ছা জানিয়ে বাকি দিন নিশ্চুপ বসে থাকবে? প্রতিটি মওকা তথা সুযোগে অপরের প্রতি শুভ কামনা করে দোয়া করতে পারলে বছরের ঐ সুনির্দিষ্ট দিনের জন্য কেন অপেক্ষা করতে থাকবে?
এক কাফির অপর কাফিরের জন্য যেহেতু দোয়া করার বিধান তাদের নীতিতে নেই। এজন্য বছরের শুধুমাত্র একদিন শুভ কামনা করে সান্তনা লাভ করে। আমরা মুসলমানেরা সকল মুসলমানের জন্য সব দোয়াতেই শুভ কামনা করি। সাক্ষাতে তার প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষণের অভিবাদন সালাম দেই। আমরা সারা বছরে একদিন কেন শুভেচ্ছা জানিয়ে তার প্রতি কার্পণ্য করব?

সুতরাং জন্মদিন ও বিবাহ বার্ষিকী পালন করে নিজের চিন্তা চেতনা বিধর্মীদের মত উৎসবমুখর করা উচিত নয়।
বছরে কেবলমাত্র একদিন শুভেচ্ছা পাঠিয়ে সংকীর্ণতা দেখানো সমচীন নয়।
বরং দুনিয়াতে মানুষ হয়ে জন্মানো সুস্থ হয়ে জীবন যাপন করতে পারায় আল্লাহর প্রতি সার্বক্ষণিক শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানানো চাই। বিবাহের সুখ শান্তি সার্বক্ষণিক অর্জন হয় সেই বিষয়ে যত্নশীল হওয়া চাই।

والله اعلم بالصواب