আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

গাড়িতে নামাজ পড়ার পদ্ধতি

প্রশ্নঃ ২৬৭৮৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, গাড়িতে থাকলে কিভাবে নামাজ আদায় করব? এবং গাড়িতে কিবলামুখী না হয়ে কি নামাজ আদায় করা যাবে? তারপর কি আবার বাসায় এসে নামাজ পড়তে হবে?

২০ ডিসেম্বর, ২০২২
ঢাকা ১২১৪

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


এক- নামাজে সমস্যা হতে পারে এমন সময় গাড়িতে উঠা উচিত নয়, তবে প্রয়োজনে রওনা করতে হলে যেন নামাজ কাযা না হয় এ ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। গাড়ি থেকে বার বার ওঠানামা কষ্টকর হওয়ার কারণে নামাজ কাযা করা যাবে না; বরং নামাজের সময়গুলোতে গাড়ি থামিয়ে নীচে কোনো স্থানে কিয়াম ও রুকু-সিজদার দ্বারা নামাজ আদায় করবে।
এক্ষেত্রে আরেকটি সংশোধনযোগ্য বিষয় হল অনেক সময় পুরুষেরা বাস থামিয়ে নামাজ পড়লেও মহিলারা পর্দার দোহাই দিয়ে অথবা লজ্জার কারণে নামায পড়ে না। অথচ এটা চরম অন্যায় ও গোনাহের কাজ। বরং তারা যথা নিয়মে ওযু করে মসজিদের এক কিনারায় বা অন্য কোনো স্থানে বোরকা পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করবে।

দুই- কিন্তু যদি গাড়ি থামানো না যায় কিংবা গাড়ি থেকে নামলে সঙ্গী-সাথী ও গাড়ি চলে যাবে এবং পরবর্তীতে সে আর গাড়িতে একা উঠতে পারবে না বা তাকে নেয়া হবে না-এমন আশঙ্কা থাকে; এমতাবস্থায় গাড়িতে নামাজ পড়া জায়েয। এ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকলে দাঁড়িয়ে নামা্জ পড়ে নিবে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ বসে নামাজ পড়ে, তবে নামাজ হবে না। যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে কিছুতে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে। কারণ হাত বাঁধা সুন্নত আর দাঁড়ানো ফরজ। তাই ফরজ রক্ষার্থে সুন্নতের ক্ষেত্রে শীথিলতা মার্জনীয়। পক্ষান্তরে দাঁড়ানোর কোনোপ্রকার সুযোগ না থাকলে বসে ইশারা করে নামাজ পড়ে নিবে। এই নামাজ পরে আর দোহরাতে হবে না।
কিবলামুখী হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি গাড়ি কিবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায় তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলামুখী ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে ফিরেই নামাজ শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে এই নামাজ পরে আবার পড়ে নিতে হবে। কিবলামুখী ফিরে নামাজ আদায় করতে পারলে পরে তা আবার আদায় করার প্রয়োজন নেই।
অনুরূপভাবে যদি পানি না থাকে তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নিবে। এই নামাজও পরে দোহরাতে হবেনা।
আর যদি তায়াম্মুম করারও সুযোগ না থাকে, তবু ইশারায় নামাজ পড়ে নিবে। অবশ্য পরে এই নামাজের কাযা করতে হবে। (মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪-৯৬; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮৮. ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার ২/১০২,৪৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮,১৪৪)

والله اعلم بالصواب

শাইখ উমায়ের কোব্বাদী সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন