শিশুর দুধ ছাড়ানো না গেলে দুই বছরের অধিক পান করানো যাবে কি?
প্রশ্নঃ ২৬২৮৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার মেয়ের ২ বছর ৭ মাস বয়স। এখনো বুকের দুধ খাওয়া ছাড়াতে পারি না। দুধের জন্য অনেক কান্না করে। আমরা এখন কী করবো?
৬ ডিসেম্বর, ২০২২
Dhank
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এক. বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে চান্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ
মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সূরা বাকারা ২৩৩)
উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েয হবে না এবং সন্তানের জন্য উপকারী হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী, যেটা উপাদেয়, যেটা স্বাস্থ্যকর, সেটাই আল্লাহু তাআলা বিধান দিয়েছেন।
দুই. তবে যেহেতু এক্ষেত্রে কিছু ইমামের মত অনুযায়ী বিশেষ প্রয়োজনে আড়াই বছরের কথাও বলা আছে, তাই বিশেষ প্রয়োজনে দুই বছরের পরেও দুধ পান করালে তা যদিও নিশ্চিতভাবে হারাম বলা যাবে না; কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে কোনোভাবেই তা যেনো আড়াই বছরের অধিক এক দিনের জন্যও না হয়।
আদ্দুররুল মুখতার-এ এসেছে,
هُوَ (حَوْلَانِ وَنِصْفٌ عِنْدَهُ وَحَوْلَانِ) فَقَطْ (عِنْدَهُمَا وَهُوَ الْأَصَحُّ) فَتْحٌ وَبِهِ يُفْتَى
শিশুর জন্য মায়ের দুধ পানের সর্বোচ্চ সময়সীমা ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর মতে আড়াই বছর। আর ইমাম আবু ইউসুফ রহ. ও ইমাম মুহাম্মদ রহ.-এর মতে দুই বছর। এই দ্বিতীয় মতটাই বিশুদ্ধতম মত এবং এর উপরই ফতওয়া। (আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৩০)
আলজাওহারাতুন নাইয়ারা-তে এসেছে,
فِي الذَّخِيرَةِ : مُدَّتُهُ – أي الرضاع – ثَلَاثَةُ أَوْقَاتٍ : أَدْنَى ، وَوَسَطٌ ، وَأَقْصَى ، فَالْأَدْنَى حَوْلٌ وَنِصْفٌ ، وَالْوَسَطُ حَوْلَانِ ، وَالْأَقْصَى حَوْلَانِ وَنِصْفٌ ، حَتَّى لَوْ نَقَصَ عَنْ الْحَوْلَيْنِ لَا يَكُونُ شَطَطًا ، وَإِنْ زَادَ عَلَى الْحَوْلَيْنِ لَا يَكُونُ تَعَدِّيًا
যাখীরাগ্রন্থে রয়েছে, শিশু মায়ের দুধ পানের সময়সীমা তিনটি। সর্বনিম্ন, মধ্যবর্তী ও সর্বোচ্চ। সর্বনিম্ন সীমা হল, দেড় বছর। মধ্যবর্তী সীমা হল, দুই বছর। সর্বোচ্চ সীমা হল, আড়াই বছর। সুতরাং দুই বছরের কম হলে অন্যায় হবে না এবং দুই বছরের অধিক হলে সীমালঙ্ঘন হবে না। (আলজাওহারাতুন নাইয়ারা ২/২৭)
والله اعلم بالصواب
শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১