যাদু কাটানোর জন্য নাভি খোলা এবং মুক্তির সহিহ তরিকা
প্রশ্নঃ ২৫৯৭২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমি আল্লাহকে ভালোবাসি। হুজুর, আমি কিছু দিন ধরে বুঝতে পারছি, আমাকে কেউ যাদু করেছে। আমি আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। এখন মুরুব্বিরা আমাকে নাভি খোলাতে বলছে। আমি মানা করছি। তাও সবাই আমাকে ধরে বলছে, নাভি খোলাতে। আমাকে কালকে সকালেই নিয়ে যাবে। আমি কিছু করতে না পেরে আপনাকে মেসেজ দিলাম। আমার জানার বিষয় হলো নাভি খোলা কি ইসলামিক শরিয়তে যায়েজ আছে? আর আমি যাদু টোনা থেকে বাঁচার জন্য কিছু আমল জানতে চাচ্ছিলাম। হুজুর প্রশ্নের উওরটা আজকে অথবা কালকে সকালের মধ্যে দিলে ভালো হয়। আমি তাহলে আপনার কথা বলতে পারবো। কোরআনের আয়াত দিয়ে বুঝাতে পারবো। এটা শিরকি গুনাহ। তাই হুজুর দলিলসহ যদি কালকে সকাল ৬ টায় দিতেন তাহলে খুবই ভালো হতো। আমার জন্য দোয়া করবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এক- পুরুষের সতর হল নাভির নিচ থেকে নিয়ে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। অর্থাৎ, নাভি সতরের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং হাঁটু সতরের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং পুরুষ প্রয়োজনে নাভি খুলতে পারবে, তবে নাভির নীচের অংশ কাউকে দেখাতে পারবে না। এর দলিল হচ্ছে,
فَلَا يَنْظُرَنَّ إِلَى شَيْءٍ مِنْ عَوْرَتِهِ فَإِنَّ كُلَّ شَيْءٍ أَسْفَلَ مِنْ سُرَّتِهِ إِلَى رُكْبَتِهِ مِنْ عَوْرَتِهِ
কোন ব্যক্তি যেন কারো সতরের দিকে না তাকায়। নিশ্চয় নাভির নিচ থেকে নিয়ে হাঁটু নিচ পর্যন্ত সব কিছুই সতর। (সুনানে কুবরা লিল বাইহাকী ৩২৩৫)
প্রকাশ থাকে যে, মহিলাদের হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَة
নারীর আপাদমস্তক সতর। ( তিরমিজী ১১৭৩)
সুতরাং কোন নারী আরেকজনের সামনে নাভি খুলতে পারবে না।
দুই- যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর পদ্ধতি হচ্ছে-
~ যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে। বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
~ জিব্রাইল আ. নবী ﷺ-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দুআটি হচ্ছে-
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)
এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন।
~ আলেমগণ বলেছেন, এ দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন