আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

বাবা মায়ের হুকুম পালনের সীমারেখা

প্রশ্নঃ ২৫৭৪৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি মুসলমান,ইসলাম এর সবকিচু মানার আপ্রান ইচ্চা,অনেক সময় আম্মুর জন্য সবকিচু মানতে বা করতে পারি না, এমনকি বুজাতে অ পারি না, অনেক সময় আম্মুর কতা অমান্ন করে ইসলামিক জিনিস মানি, এইসব করে ইসলাম মানলে আল্লাহ কি আর পতিদান দিবেন, নাকি আর জন্য আর গুন্নাহ হবে।,

৮ ডিসেম্বর, ২০২২

সিলেট

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী!
বর্তমানে সেক্যুলার সমাজে এটি একটি মারাত্মক সমস্যা যে, পিতামাতা তাঁর সন্তানদেরকে ইসলামী বিধিবিধান পালনে তো উৎসাহী করে তোলেনই না, উল্টো কোন সন্তান যদি আল্লাহর অসীম দয়া আর করুণায় প্রকৃত ইসলাম বুঝতে পেরে একজন প্র্যাকটিসিং মুসলিম/মুসলিমাহ হতে চায়, তাকে বাঁধা দেন। মনে রাখবেন, আনুগত্যের সবচেয়ে বড় দাবিদার সন্তানের জন্য বাবা-মা অবশ্যই কিন্তু এ দাবী বিকল হয়ে যাবে, যখন তাঁরা এমন কিছু দাবী করবেন, যা আল্লাহর আদেশ-নিষেধের সীমা লঙ্ঘন করবে। কারণ ইসলামের শিক্ষা হল,لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق অর্থাৎ, আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতা যেখানে আসবে, সেখানে সৃষ্টির আনুগত্য কোনো অবস্থাতেই করা যাবেনা।

সৃষ্টির আনুগত্যের সীমারেখা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূল ﷺ বলেন, فَإِنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ অসৎকাজে আনুগত্য নয় ;আনুগত্য কেবলমাত্র সৎকাজের ক্ষেত্রেই হতে হবে। (বুখারী ৭১৪৫ মুসলিম ১৮৪০)

সুতরাং আলোচ্য ক্ষেত্রে আপনার উচিত, বাবা মায়ের সঙ্গে অসদাচারণ না করে, বেশি বেশি করে আল্লাহর কাছে দুআ করা, যেন আপনার পিতামাতার মন-মানসিকতার পরিবর্তন হয়, শয়তানের ধোঁকা থেকে যেন তাঁরা পরিত্রাণ লাভ করতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে একটি সূক্ষ্ম সতর্কতা পুণরায় উল্লেখ করছি তাহলো, গুনাহের কাজে তাদের আনুগত্য না করা মানে তাদের সঙ্গে অসদাচারণ করা নয়; বরং তাঁরা যে গুনাহের কাজের আদেশ দিয়েছেন তা না করা এবং অন্যান্য বৈধ আদেশগুলো মান্য করা। কারণ পিতামাতার সেবা ও সদ্ব্যবহারের জন্য তাঁদের মুসলমানও হওয়া জরুরী নয়।

এসম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক বলেন, وَإِن جَاهَدَاكَ عَلى أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ

যদি তাঁরা (পিতামাতা) তোমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করে আমার সাথে কাউকে শরীক করার জন্য যা (শিরক) তোমার বোধগম্য নয়, তাহলে তুমি তাঁদের কথা অমান্য করো, (অর্থাৎ আমি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না) আর পার্থিব জীবনে উৎকৃষ্ট পন্থায় তাঁদের সাথে সৎ সম্পর্ক বজায় রেখো। আর তুমি তাঁদের পথ অনুসরণ করো যারা (আমি এক) আমার প্রতি অবিচলভাবে আকৃষ্ট রয়েছে।’ (সূরা লুকমান ১৫)

রাসূল ﷺ বলেন, عَلَى الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ فِيمَا أَحَبَّ وَكَرِهَ، إِلَّا أَنْ يُؤْمَرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَإِنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ.

মুসলিমের ওপর অপরিহার্য কর্তব্য হচ্ছে আমীরের কথা শোনা এবং আনুগত্য করা, চাইতা তার মনঃপূত হোক বা না হোক। তবে যদি গুনাহের কাজের নির্দেশ দেওয়া হয় (তাহলে স্বতন্ত্র কথা)। যদি গুনাহের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয় তাহলে তা শোনাও যাবে না, আনুগত্যও করা যাবে না। (বুখারী ৭১৪৪ মুসলিম ১৮৩৯)

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৯৩২৮৩

বছরের শুরু শেষ নেসাব ঠিক ছিলো, মাঝে যে সম্পদ বেড়েছে তার যাকাতের জন্য বৎসর পূর্ণ হতে হবে?


৫ মার্চ, ২০২৫

Mahini

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৮৭৩৭

মুদারাবার পদ্ধতি


১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

খাগড়াছড়ি

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯০৪৯৮

ইমামের সাথে একজন /দুইজন মুকতাদী কিভাবে দাড়াবে?


২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

Bethua

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৩৬৫৯

কোন নামাজে কোন সূরা


৪ জানুয়ারী, ২০২৫

চাঁদপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শফিকুল ইসলাম হাটহাজারী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy