আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

অভিভাবক ছাড়া বিয়ে

প্রশ্নঃ ২৫২২৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন ডিভোর্সি মেয়েকে বিয়ে করেছি। বিয়েতে মেয়ের ছেলে বন্ধু অবিভাবক হিসাবে ছিল ( যদিও বাবা, মা বেচে আছে। আর আমার পক্ষে কোন অবিভাবক ছিল না। দুইজন ছেলে সাক্ষী ছিল। এখন আমাদের বিয়ে কি বৈধ হয়েছে।

২৮ নভেম্বর, ২০২২
৬৭৮১، ৩৩৮৯، الأندلس، مكة ২৪২৩৭، السعودية (SA)

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


শরয়ি দৃষ্টিকোণে বিবাহ সহিহ হওয়ার জন্য কিছু মৌলিক শর্ত রয়েছে। সেই শর্তগুলো পাওয়া গেলেই বিবাহ সহিহ হয়ে যায়। পক্ষান্তেরে তার কোনো একটি শর্তের অনুপস্থিতি শরিয়ত মোতাবেক নিকাহ অশুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মৌলিক শর্ত হচ্ছে-
১. বর-কনের ইজাব কবুল দুজন যোগ্য সাক্ষীর সামনে সম্পাদন হওয়া। ইজাব যেসব সাক্ষীর সামনে হবে; কবুল ঠিক সেই সাক্ষীদের উপস্থিতিতেই হতে হবে।
২. সাক্ষীদ্বয় বর-কনের ইজাব-কবুল সরাসরি শুনতে হবে।
৩. ইজাব ও কবুল একই বৈঠকে সম্পাদন হওয়া আবশ্যক।
৪. ইজাব-কবুল উভয় সাক্ষীর একসঙ্গে শুনতে হবে। । হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ
আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতীত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতীত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনার বা আপনাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন