আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

যৌনশক্তিকে দমন করার উপায় কি?

প্রশ্নঃ ২৪৭৪৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার বয়স প্রায় ১৬ বছরআমি প্রচুর পরিমাণে যৌণ চাহিদা কিন্তু এই বয়সে আমার পক্ষে হালাল কোনো সম্পর্কে যাওয়া ও যাবেনাআর বর্তমান যুগ এ প্রচুর ফেৎনাআলহামদুলিল্লাহ আমি কোনো হারাম সম্পর্কে যায়নি ইনশাআল্লাহ যাবো ও নাকিন্তু আমি আমার নফস কে শান্ত করতে কী করতে পারি,

৩ নভেম্বর, ২০২২

হবিগঞ্জ

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


(১) প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,,,
প্রশ্নে বর্ণিত বিষয়টির জন্য আপনি রোযা রাখতে পারেন, কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم " يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ، فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ ".

উমর ইবনে হাফ্‌স ইবনে গিয়াস (রাহঃ) ... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাযিঃ) বলেন, আমরা যুবক বয়সে রাসূল (ﷺ) এর সাথে ছিলাম; অথচ আমাদের কোনো কিছু (সম্পদ) ছিল না। এমনি অবস্থায় আমাদেরকে রাসূল (ﷺ) বলেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা শাদী করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন শাদী করে। কেননা, শাদী তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে এবং যাদের শাদী করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোযা পালন করে। কেননা, রোযা তার যৌনতাকে দমন করবে।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৬

এছাড়াও রোযার বিশেষ ফায়দা হলো, রোযার মাধ্যমে তাকওয়া, খোদাভীতি ও পরহেজগারীর গুণ সৃষ্টি হয়, শাহওয়াত বা কামভাব ও প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে আনার শক্তি অর্জিত হয়। আল্লাহ পাকের হুকুমের মোকাবেলায় নফসের কামনা ও খাহেশকে উপেক্ষা করার সদভ্যাস গড়ে ওঠে এবং আত্মার জগতের উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।

প্রিয় দ্বীনি ভাই, তাই আপনি সাপ্তাহে দুটি রোযা একটি সোমবার, আরেকটি বৃহস্পতিবার। এবং মাসে তিনটি রোজা (আইয়্যামুল বীয) রাখার চেষ্টা করবেন।

★সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার ফজিলত★

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। নবীজির মুহব্বতে উম্মতের কেউ এই দিন রোজা রাখলে তার আমল নবীজির আমলে সঙ্গে মিলে যাবে। এর বহু ফজিলত রয়েছে।

حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْفَلاَّسُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَحَرَّى صَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ حَفْصَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏

আইশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি বেশি খেয়াল রাখতেন।
—জামে' আত-তিরমিজী, হাদীস নং ৭৪৫

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، فِيمَا قُرِئَ عَلَيْهِ عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا إِلاَّ رَجُلاً كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। এরপর এমন সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, যারা আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে না। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শত্রুতা বিদ্যমান। এরপর বলা হবে, এ দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এ দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও, এ দু’জনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪৩৮

حَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ، أَنَسٍ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ تُعْرَضُ أَعْمَالُ النَّاسِ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّتَيْنِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ إِلاَّ عَبْدًا بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ فَيُقَالُ اتْرُكُوا - أَوِ ارْكُوا - هَذَيْنِ حَتَّى يَفِيئَا ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, মানুষের ‘আমাল (সপ্তাহে দু’বার) সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহর দরবারে) উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রত্যেক মু’মিন বান্দাকে ক্ষমা করা হয়। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই-এর সাথে তার দুশমনি রয়েছে। তখন বলা হবে, এ দু’জনকে বর্জন করো অথবা অবকাশ দাও যতক্ষণ না তারা মীমাংসার প্রতি প্রত্যাবর্তন করে।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪৪১

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ، حَدَّثَنَا غَيْلاَنُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، بِهَذَا الْحَدِيثِ زَادَ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ صَوْمَ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمِ الْخَمِيسِ قَالَ ‏ "‏ فِيهِ وُلِدْتُ وَفِيهِ أُنْزِلَ عَلَىَّ الْقُرْآنُ ‏"‏ ‏.‏

আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদীস বর্ণিত। তাতে অতিরিক্ত রয়েছেঃ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সোমবার ও বৃহস্পতিবার সওম পালনের ব্যাপারে আপনার কি অভিমত? তিনি বললেনঃ ঐ দিন আমি জন্মগ্রহন করেছি এবং ঐ দিনই আমার উপর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২৪২৬

★আইয়্যামুল বীযের ফজিলত★

প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের রোজাকে আইয়্যামুল বীয" বলা হয়।

عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صِيَامُ الدَّهْرِ، وَأَيَّامُ الْبِيضِ صَبِيحَةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ.

জারীর ইব্‌ন আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেনঃ
প্রত্যেক মাসের তিন দিন সওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য।
আর আইয়্যামুল বীয -তের চৌদ্দ এবং পনের তারিখ।
—সুনানু নাসায়ী ২৪২০

আলহামদুলিল্লাহ বিগত কয়েক মাস থেকে আমাদের অ্যাপে এই রোজার নোটিফিকেশন দেয়া হচ্ছে।

(২) ★চোখ (নযর) হেফাজত করতে হবে।★

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

غُضُّوْا اَبْصَارَكمُ وَاحْفَظُوْا فُرُوْجَكُمْ

তোমরা দৃষ্টি অবনত রাখো এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত কর। (আলজাওয়াবুলকাফী, পৃষ্ঠা : ২০৪)

হাফেজ ইবনুলকাইয়িম রহ. লিখেছেন, দৃষ্টি জৈবিকচাহিদার পিয়ন ও রাহবার হয়ে থাকে। দৃষ্টির সংরক্ষণ মূলতঃ লজ্জাস্থান ও যৌনচাহিদা পূরণের অবাধ সুযোগের সংরক্ষণ হয়ে থাকে। যে দৃষ্টিকে অবাধে বিচরণ করতে দিয়েছে সে নিজেকে ধ্বংসের মাঝে ফেলে দিয়েছে। মানুষ যেসব আপদে নিমজ্জিত হয় এর মূলভিত্তি হল দৃষ্টি। (আলজাওয়াবুলকাফী, পৃষ্ঠা-২০৪)

সুতরাং নযর হচ্ছে শয়তানের তীর। এর দ্বারা সে শিকার করে বনী আদমকে। বরবাদ করে বনী আদমের ঈমান-আমল। ফাঁসিয়ে দেয় বনী আদমকে পাপের চোরাবালিতে। ডুবিয়ে দেয় পাপের সাগরে। নযর নামক এই তীর বনী আদমকে শিকার করার সবচেয়ে সহজ অস্ত্র শয়তানের জন্য। বনী আদম ভাবে, একটু নযরই তো! ব্যস! কখনো কখনো এক নযরেই বনী আদম কুপোকাত।

আমার এ চোখ আল্লাহর মহা দান। তাঁর দেয়া অমূল্য নিআমত, যা দিয়ে আমি এই সুন্দর পৃথিবীটা দেখি। অবাক চেয়ে থাকি আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টির দিকে। চেয়ে থাকি ঐ নীল আকাশের দিকে, মিটিমিটি জ্বলে থাকা ঐ তারকারাজির দিকে। উপভোগ করি চাঁদের আলো। রং বে-রঙের ফুলের সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ হই। এ চোখ দিয়েই আমি আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করি। (আর আমি যদি আল্লাহ্র হুকুম ও সন্তুষ্টি মোতাবেক এ চোখ ব্যবহার করি, তাহলে আল্লাহর কাছে আশা রাখি, আখিরাতে আমি আল্লাহকে দেখব।) আবার স্মরণ করি, এ চোখ আমার রবের মহা নিআমত। এ চোখ আমার কাছে আমার সৃষ্টিকর্তার আমানত।

তিনি এ নিআমত সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন; এর কী শুকরিয়া আমি আদায় করেছি। এ আমানত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন; আমি কি তাঁর দেয়া এ আমানত রক্ষা করেছি?

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,

إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.

...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬

কত মানুষের চোখ নেই। আবার কত মানুষের আমার মতই চোখ আছে; দেখতে একেবারে আমার চোখের মতোই। কিন্তু তার দৃষ্টিশক্তি নেই; সে দেখতে পায় না। সুন্দর এ পৃথিবীটা দেখতে পায় না। তোমার শোকর হে আল্লাহ! আমাকে তুমি এ নিআমতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান কর।

আমার ভয় করা উচিত, আমি যদি এ চোখ দিয়ে আল্লাহর নাফরমানি করি, হারাম জিনিস দেখি, আর আল্লাহ আমার এ চোখ অন্ধ করে দেন, ছিনিয়ে নেন দৃষ্টিশক্তি!

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) “আমি চাইলে তাদের চোখ (দৃষ্টিশক্তি) লোপ করে দিতাম। তখন তারা পথ চলতে চাইলে কীভাবে দেখতে পেত!” [সূরা ইয়া সীন (৩৬) : ৬৬] সুতরাং হে আল্লাহ, আমাকে রক্ষা কর চোখের যাবতীয় গুনাহ থেকে। সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গুনাহ থেকে।

আমি পথ চলি আর চোরা চোখে এদিক ওদিক তাকাই। আমি ভাবি কেউ আমাকে দেখছে না। আল্লাহ আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন; না বান্দা! কেউ দেখছে না, এমন নয়। তোমার সাথে চলতে থাকা মানুষ বা পৃথিবীর কোনো মানুষ যদি না দেখে, তোমাকে যিনি এ চোখ দান করেছেন, তিনি কিন্তু দেখছেন

يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ.

তিনি (আল্লাহ) জানেন চোখের চোরাচাহনি এবং সেইসব বিষয়ও, যা বক্ষদেশ লুকিয়ে রাখে। Ñসূরা মুমিন (৪০) : ১৯

কেউ কেউ মনে করে যে, একবার দেখলে সমস্যা নেই (সুতরাং একবার তাকাই)। এটা তাদের বুঝার ভুল। প্রথম কাজ তো দৃষ্টি অবনত রাখা, যার নির্দেশ আল্লাহ কুরআনে কারীমে দিয়েছেন। এটি রক্ষা করার পরও যদি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায় তাহলে করণীয় কী এ সম্পর্কে এক সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, اصْرِفْ بَصَرَكَ ‘তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নাও’। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২১৪৮

আর আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,

يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.

হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭

আমার প্রিয় চোখ। আমি যদি তা আল্লাহর হুকুম মতো ব্যবহার না করি, হারাম জিনিস দেখি, তাহলে আমার চোখই কাল কিয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে আমার নামে নালিশ করবে হে আল্লাহ! সে আমার দ্বারা অমুক পাপ করেছে। অমুক হারাম বস্তুর দিকে তাকিয়েছে। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে, (তরজমা) ...তাদের কান, তাদের চোখ, তাদের ত্বক তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে সাক্ষী দিবে, তাদের বিরুদ্ধে। সূরা হা-মীম আসসাজদাহ (৪১) : ২০

চোখের ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য নবীজী দুআ শিখিয়েছেন,

اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِيْ، وَمِنْ شَرِّ بَصَرِيْ، وَمِنْ شَرِّ لِسَانِيْ، وَمِنْ شَرِّ قَلْبِيْ، وَمِنْ شَرِّ مَنِيِّيْ.

হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই; আমার শ্রবণশক্তির অনিষ্ট হতে। আমার দৃষ্টির অনিষ্ট হতে। যবানের অনিষ্ট হতে...। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫৫১

আল্লাহ তাআলা আপনাকে দুনিয়ার নিত্য নতুন ফিতনা-ফাসাদ থেকে হেফাজত করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আরিফুর রহমান
'মুসলিম বাংলা' ফাতওয়া বিভাগ।

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৫০০৫১

ইবনে জুরাইজ এর ঘটনা


২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাজিতপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯৩১৮৬

রমজান মাসে কারা ক্ষমা পাবে না?


৫ মার্চ, ২০২৫

বগুড়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৭৩৫১

আল্লাহ কেন অমুসলিমদেরকে এমন অনেক বিষয় দান করেন যা অনেক সময় মুসলিমরা পায়না?


২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

বগুড়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার

৪৫৬৩০

হরতাল-অবরোধ:ইসলামী দৃষ্টিকোণ


১৩ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা ১২১৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy