আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ঘুষ দিয়ে চাকুরী নেওয়ার বিধান

প্রশ্নঃ ২৩৯৫১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যদি কেউ ঘুষ দিয়ে চাকুরি নেবার পর তার দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করে তাহলে কি তার চাকরির টাকা হালাল হবে?

২০ জুলাই, ২০২৫
৪F৭P+WV৩

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া স্পষ্ট হারাম। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহণকারী উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন।

لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي
(তিরমিজি, হাদিস : ১৩৩৭)

হাদিসের আলোকে বোঝা যায়, ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়া জায়েজ নয়। এভাবে চাকরি নিলে ঘুষ দেওয়ার কারণে কবিরা গুনাহ হয়, আবার ঘুষ গ্রহণের কারণেও বড় গোনাহে লিপ্ত হয়। অন্যদিকে ঘুষদাতা কর্মের অযোগ্য হলে অন্য যোগ্য চাকরিপ্রার্থীর অধিকার নষ্ট করার গুনাহও হয়।

বাধ্য হয়ে ঘুষ দেওয়ার বিধান:
হজরত ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হাবশা (ইথিওপিয়া) গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে সেখানে আটকে দেয়া হয়। পরে তিনি দু দিনার প্রদান করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন,
«إِنَّمَا الإِثْمُ عَلَى القَابِضِ دُونَ الدَّافِعِ»
“গ্রহণকারীর উপর গুনাহ বর্তাবে; প্রদানকারীর উপর নয়।”
সুনান কুবরা-বায়হাকী, ২০৪৮২, শরহুস সুন্নাহ-ইমাম বাগাভী ১০/৮৮, তাফসীর কুরতুবী ৬/১৮৪

কাজেই যদি কেউ বাস্তবেই চাকরির যোগ্য হয় এবং (ঘুষ প্রদান হারাম হওয়া সত্ত্বেও) ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়। আর পরে সে যদি যথাযোগ্য দক্ষতা ও নিপুণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে এভাবে চাকরি নেওয়া অবৈধ ও গোনাহ হলেও বেতন হালাল হবে। কিন্তু ঘুষদাতা যদি কর্মক্ষেত্রে অযোগ্য হয় এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জন্য ওই চাকরিতে থাকা বৈধ হবে না। আর ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করে বেতন নেওয়াও বৈধ হবে না।

مرقاة المفاتیح:
"(وعن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما) : بالواو (قال: «لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم الراشي والمرتشي» ) : أي: معطي الرشوة وآخذها، وهي الوصلة إلى الحاجة بالمصانعة، وأصله من الرشاء الذي يتوصل به إلى الماء، قيل: الرشوة ما يعطى لإبطال حق، أو لإحقاق باطل، أما إذا أعطى ليتوصل به إلى حق، أو ليدفع به عن نفسه ظلماً فلا بأس به، وكذا الآخذ إذا أخذ ليسعى في إصابة صاحب الحق فلا بأس به، لكن هذا ينبغي أن يكون في غير القضاة والولاة؛ لأن السعي في إصابة الحق إلى مستحقه، ودفع الظالم عن المظلوم واجب عليهم، فلايجوز لهم الأخذ عليه."
(7/ 295، کتاب الأمارة والقضاء، باب رزق الولاة وهدایاهم، الفصل الثاني، ط: دارالکتب العلمیة)

والله اعلم بالصواب

সাইদুজ্জামান কাসেমি শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন