আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নাপাক পানির পরিচয়

প্রশ্নঃ ২৩৭৮৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আজকাল ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই ওয়াশা কর্তৃক সাপ্লাইকৃত পানি এর অবস্থা খুবই শোচনীয়। যেমন- পানিতে খুবই দুর্গন্ধ এবং কখনো কখনো পানি হালকা কালো রং এরও হয়।অতএব, এ ধরনের পানি দ্বারা কি পবিত্রতা অর্জন করা যাবে??,

১৬ নভেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মৌলিকভাবে পানির তিনটি গুণ রয়েছে। রং, স্বাদ ও গন্ধ। এ তিনটি গুণ পরিবর্তন হওয়া না হওয়ার উপর পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা না করা নির্ভর করে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ الْمَاءَ لاَ يُنَجِّسُهُ شَىْءٌ إِلاَّ مَا غَلَبَ عَلَى رِيحِهِ وَطَعْمِهِ وَلَوْنِهِ " .

আবূ উমামাহ আল-বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন জিনিস পানিকে অপবিত্র করে না, যতক্ষণ না তার ঘ্রাণে, স্বাদে ও রং-এ পরিবর্তন আসে। — সুনানে ইবনে মাজাহ ৫২১

যদি ঐ পানির তিন গুণ তথা রং, স্বাদ, গন্ধ এর দুইটি গুণ পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে উক্ত পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না।
অনেক সময় বাহ্যিকভাবে পানি কালো দেখা গেলেও হাতে বা পাত্রে নিলে তা মোটামোটি পরিষ্কার দেখা যায়। তা থেকে বুঝা যায় যে, দূর থেকে কালো দেখা গেলেও মূলত তার রং পরিবর্তন হয়নি।
ওয়াসার পানির ক্ষেত্রেও বিষয়টি সাধারণত এমনই হয়ে থাকে।

حلبى كبير،صــــــــــ ৯০
(وتجوز الطهارة لماء…(والماء الذى يختلط به الأشنان أو الصابون أو الزعفران بشرط ان تكون الغلبة للماء من حيث الأجزاء ) (اذا لم يزل عنه إسم الماء) فحكمه (حكم الماء المطلق) يجوز الوضوء به والا فلا ولا عبرة بزوال اللون ولا الطعم ولاالريح…(ذكر فى الملتقط إذا القى الزاج فى الماء حتى اسود ولكن لم تذهب رقته جاز الوضوء به) مع تغير لونه وطعمه وريحه (وكذا العفص) إذا طرح فى الماء فاسود يجوز الوضوء به ما دامت رقته باقية.
সারমর্ম, যেই পানির সাথে সাবান, যাফরান ইত্যাদি মিশে গেছে আর সেখানে যদি পানির পরিমাণ বেশি থাকে এবংমিশ্রিত বস্তুর ফলে পানির নাম দূর হয়ে না যায় তাহলে সাধারণ পানির ন্যায় তার হুকুম হবে। তা দিয়ে অযু জায়েজ হবে।
পানির রং,স্বাদ,গন্ধ চলে গেলেও সমস্যা নেই।

পানির সাথে সালফেট রসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত হওয়া সত্ত্বেও যদি পানির প্রবাহ বহাল থাকে কিন্তু পানির রং, স্বাদ, গন্ধ চলে গেলেও সেই পানি দিয়ে অযু জায়েজ হবে।

হাশিয়াতুত তাহতাবী নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
و " أما إذا بقي على رقته وسيلانه: فإنه " لا يضر " أي لا يمنع جواز الوضوء به " تغير أوصافه كلها بجامد:" خالطه بدون طبخ " كزعفران وفاكهة وورق شجر

পানি যদি পাতলা এবং বহমানযোগ্য থাকে,তাহলে এই পানি দিয়ে অজু গোসল বৈধ হওয়া নাজায়েয নয় যদি সেই পানির সমস্ত গুনাগুন কোনো জামিদ জিনিষ (পাক করা নয় এমন) দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যায়।যেমন জাফরান, ফলমূল এবং গাছের পাতা ইত্যাদি দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।(হাশিয়াতুত তাহতাবী-১/২৫)

প্রশ্নোল্লিখিত পানির মধ্যে প্রবাহ শক্তি বিদ্যমান আছে। সেই পানি কিছুক্ষণ রাখলে রং নিচে চলে আসে,পানিতে নাপাকির গন্ধ নেই, এবং উক্ত কালো পানি হাতে নিলে পানির কালারের মতোই মনে হয়।

তাই সর্বিক বিবেচনা করে উক্ত পানি দিয়ে অযু গোসল করা যাবে। তবে দুর্গন্ধ/নাপাকির গন্ধ আসলে অযু গোসল করা যাবেনা।
(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৭১৮৮

সিজদায় ঘুমের ভাব আসলে অজু ভঙ্গ হবে কি?


৩০ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৬০৭৬

গর্দান বা ঘাড় মাসেহ করার হুকুম


৩ ডিসেম্বর, ২০২২

Gareya

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩১৮১৮

রক্ত দান করলে রোজা এবং অজুর বিধান


৩১ মার্চ, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫৬২৯

গোসলের পর অজু করা লাগবে?


২২ নভেম্বর, ২০২২

নামবিহীন রাস্তা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy