আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ২২২৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের এলাকার এক ব্যক্তির হজ্ব কাফেলা আছে। তিনি বলেন, মাহরাম ছাড়াও মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয আছে। তিনি নিজেও গত বছর এমন দুজন মহিলাকে হজে নিয়ে গেছেন, যাদের সাথে কোনো মাহরাম ছিল না। তাই আমি জানতে চাই- ক) মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয কি না এবং মাহরাম ব্যতীত মহিলাদেরকে হজ্বের সফরে নিয়ে যাওয়াটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন হয়েছে? অর্থাৎ কী ধরনের অন্যায় হয়েছে?,

২৮ অক্টোবর, ২০২০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বের সফরে যাওয়া নাজায়েয। এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, কোনো পুরুষ বেগানা মহিলার নিকট একাকীত্বে অবস্থান করবে না এবং কোনো মহিলা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত সফর করবে না। তখন জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো অমুক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্বের সফরে বের হয়ে গেছে (এখন আমি কী করব?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩০০৬)

আরেক বর্ণনায় এসেছে, আবু হুবায়রা রাহ. বলেন, রাই এলাকার অধিবাসীনি জনৈকা মহিলা ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর নিকট এ মর্মে পত্র প্রেরণ করলেন যে, তিনি একজন বিত্তবান নারী। তার স্বামী ও কোনো মাহরাম পুরুষ নেই এবং এ পর্যন্ত তিনি হজ্বও করেননি। (এখন তিনি স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্বে যেতে পারবেন কি?) প্রতি উত্তরে ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. লিখেছেন-

إن هذا من السبيل الذي قال الله وليس لك محرم فلا تحجي إلا مع بعل أو محرم

অর্থাৎ স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা হওয়া মহিলাদের হজ্বের সামর্থ্যের অন্তর্ভুক্ত, যে সামর্থ্যের কথা আল্লাহ তাআলা নিম্নোক্ত আয়াতে বলেছেন-

ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا

 (তরজমা : মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বাইতুল্লাহ শরীফ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্ব করা ফরয।) আর আপনার যেহেতু কোনো মাহরাম নেই তাই আপনি স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্ব করতে যাবেন না।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৫৪০০

সুতরাং স্বামী বা মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত মহিলা অপেক্ষা করবে। অবশেষে যদি মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হয় আর সে হজ্বে যেতে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করাবে কিংবা বদলি হজ্বের জন্য অসিয়ত করে যাবে। এর দ্বারাই তার হজ্বের ফরয দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে।

 

অতএব মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয- এ সংক্রান্ত প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি ঠিক নয়। আর মাহরাম ব্যতীত মহিলাদেরকে হজ্বে নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয কাজ ও অন্যায় হয়েছে। তাছাড়া মাহরাম ব্যতীত মহিলাকে হজ্বে নিয়ে যেতে হলে সৌদী দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অফিসগুলোতে অন্যকে মাহরাম পরিচয় দিতে হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকা। তাই ঐ ব্যক্তির কর্তব্য হল, এ সকল গুনাহ থেকে খাঁটি মনে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা।


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৭৭৬৭৬

মাসজিদুল হারামে ইমাম সাহেব যেখানে দাঁড়ান তাঁর চেয়ে এগিয়ে দাঁড়ানো যাবে?


২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ঢাকা ১২০৮

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার

৩১৯৯৯

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বদলি হজ্ব করানো


৫ এপ্রিল, ২০২৩

Abdullapur Banati

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪২০০

নারীর হজ ফরজ হওয়ার শর্ত


২২ জুন, ২০২৩

আশুগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy