হাদিসে দেবর সম্পর্কে হুশিয়ারী!
প্রশ্নঃ ১৮৯৭২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ১) শ্বশুড় বাড়িতে স্বামি ও তার পরিবার আমাকে বার বার স্বামির ভাইকে গিয়ে সালাম, মিনিমাম কুশলাদি বিনিময়ের জন্য যেতে বলছিলেন (নিকাব পড়ে) কিন্তু আমি যাইনি৷তাছাড়া কালো থান কাপড়ে বড় খিমার ঘরে গায়রে মাহরাম থাকবে বলে পড়ে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাতেও বাধাগ্রস্ত৷ তারা চায়, জামার সাথে যে ওরনা থাকে সেটা পড়ে থাকবো,দেবর আসতে লাগলে আমি মাথার উপর থেকে কাপড় টেনে সালাম দিয়ে যেনো সড়ে যাই৷তাও আমি অনড় থাকায়, পরে শাশুড়ি তার লিলেন কাপড়ের কালোর উপর প্রিন্টের কাজ করা খিমার দিলেন৷ যদিও তাও বুঝিয়ে চলেছিলেন ওটাও না পড়তে কারন ওনার ভাই তেমন আসবেনা রুমের বাইরে৷আমার কি করা উচিত?দেবর তেমন আসেনা সত্য৷ কিন্তু একবার আসলেই তো শেষ৷ ১দিন তিনি মুখ দেখে ফেলসেন,এরকম আকস্মিক ঘটনা যদি ঘটে আবার?এখন আমার কি করা উচিত? আরআমার স্বামি বলছেন,যেহেতু আমি তাদের বাসায় নতুন,আমার উচিত পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষের সংগে আমার কথা বলা, সে হিসেবে তার ভাইয়ের সংগেও কথা বলা উচিত(সালাম দিয়ে মিনিমাম কুশলাদি)এখন আমি যদি তার কথা না মানি, আমার গুনাহ হবে কিনা?২) স্বামির ভাইয়ের কাপড় ধুয়ে দিতে প্রচন্ড গায়রতে লাগে,এক্ষেত্রে স্বামি যদি বলে তার ভাইয়ের কাপড় ধুয়ে দিতে, রোদে দিতে ও ভাজ করতেতাহলে গায়রতের জন্য আমি যদি না করি তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?প্রশ্ন ১এর উত্তম মাশওয়ারা পেতে পরিস্থিতি আরেকটু তুলে ধরছিঃঘর ঝাড়ু দেয়ার সময় স্বামির ভাইয়ের ঘড় ঝাড়তাম না,তিনি একবারে ঘরে না থাকলে তখন করতাম,এর আগে ঝাড়তাম না বলে শাশুড়ী indirectly বার বার বলছিলো রুম টা কি ময়লা ঝাড়ু দেয়া হয়না৷ ১দিন ফুল এনেছিলাম,ঘরের মেয়েদের দিতে৷ কিন্তু স্বামি বললেন,তার ভাইকেও পর্দার মধ্যে থেকে ফুল টা দিয়ে আসতে, এই সুযোগ সালামো দিয়ে আসতে পারবা৷আমি রাজি না হওয়ায়, উনি আমার প্রতি বিরক্ত হোন এবং রাগান্বিত হোন৷ তাই আমি তখন হেকমাহ অবলম্বন স্বরূপ বলেছিলাম,স্বামি যেনো ফুল টা নিজের পক্ষ থেকে দেয় কিন্তু স্বামি ওনার ভাইকে গিয়ে বলেছে ফুল টা তার ভাবি দিয়েছে৷ অর্থাৎ আমি দিয়েছি৷
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী বোন!
আল্লাহ তায়ালা আপনার হিম্মত, সাহস ও হিকমাহ আরো বাড়িয়ে দিন। এগুলো প্রয়োগ করে আপনি নিজেও দীনের পথে এগিয়ে যান এবং পরিবারস্ত সকলের জন্য একজন আদর্শ ও দীনদার স্ত্রী, বধু এবং নারী, হিসেবে নিজেকে পরিচালিত করুন। আপনি এখানে কতগুলো সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন শরীয়তের দৃষ্টিতে তার সবগুলোই গুনাহের কাজ। এর কোনটিই শরীয়ত আপনার ওপর আবশ্যক করেনি। বরং হাদিস শরীফে রাসুলুল্লাহ সা দেবীকে মৃত্যুর সাথে তুলনা করে নারীদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাজেই আপনিও কিছুতেই দেবরের সাথে দেখা সাক্ষাত করবেন না। তাকে আপনার চেহারা প্রদর্শন করা কিংবা আপনি তার চেহারা দেখা কোনটাই জায়েজ হবে না। তবে কখনো যদি অনন্যোপায় অবস্থার সম্মুখীন হোন তাহলে কোমলতা পরিহার করে সংক্ষিপ্তাকারে প্রয়োজনীয় কথাগুলো বলতে পারবেন।
দেবরের কাপড় ধুয়ে দেওয়া আপনার গায়রতে লাগে এর জন্য আপনি অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তার কাপড় ধুয়ে দেওয়া আপনার জন্য আবশ্যক নয় এমনকি এটা উচিতও নয়। কেননা গায়ের মাহরামের পোশাক স্পর্শ করাও তাকওয়া পরিপন্থী।
এর কারনে যদি স্বামী আপনার প্রতি অসন্তুষ্টও হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ একী কারণে আপনি গুনাহগার হবেন না। কেননা হাদিস শরীফে রাসুলুল্লাহ সা বলেছেন, لا طاعة لمخلوق في معصيه الخالق আল্লাহর অবাধ্যতা করে মাখলুকের অনুসরণ করা জায়েজ নাই।
আপনার জন্য করণীয় হলো-
# যথাসম্ভব আদর, সোহাগ, ভালোবাসা দিয়ে শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে স্বামী-শাশুড়ীর মন জয় করে নেওয়া।
# পর্দার বিষয়টি নিয়ে হিকমতের সাথে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা।
# ঘরে তালিমের ব্যবস্থা করা।
# পরিবারের মাহরাম পুরুষ এবং বৃদ্ধ, নারী শিশুদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করা।
এভাবে চলতে থাকলে ইনশা আল্লাহ দেখা যাবে কিছুদিনের মধ্যেই তারা আপনার অনুগত হয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তৌফিক দান করুন।
مرقات المفاتیح شرح مشکوٰۃ المصابیح :
"وعن عقبة بن عامر قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - إياكم والدخول على النساء) أي عند المحرمات على طريق التخلية أو على وجه التكشف (قال رجل: يا رسول الله! أرأيت الحمو) بفتح الحاء وسكون الميم بعدها واو وهمز قال ابن الملك: " أي أخبرني عن دخول الحمو عليهن وهو بفتح الحاء وكسرها وسكون الميم واحد الإحماء وهم أقارب الزوج غير آبائه وأبنائه قال القاضي: الحمو قريب الزوج كابنه وأخيه وفيه لغات حما كعصا، وحمو على الأصل، وحمو بضم الميم وسكون الواو، وحم كأب وحم بالهمز وسكون الميم والجمع أحماء (قال الحمو الموت) أي دخوله كالموت مهلك يعني الفتاة منه أكثر لمساهلة الناس في ذلك وهذا على حد الأسد الموت والسلطان النار أي قربهما كالموت والنار أي فالحذر عنه كما يحذر عن الموت. قال أبو عبيد: معناه فليمت ولا يفعل ذلك أو معناه خلوة الرجل مع الحمومة يؤدي إلى زناها على وجه الإحصان فيؤدي ذلك إلى الرجم، وفي شرح السنة: وهذه الوجوه إنما تصح إذا فسر الحمو بأخ الزوج ومن أشبهه من أقاربه كعمه وابن أخيه ومن فسره بأبي الزوج حمله على المبالغة فإن رؤيته وهو محرم إذا كان بهذه المثابة فكيف بغيره أو أول الدخول بالخلوة".
(كتاب النكاح ، باب النظر ، ج:5، ص: 51، رقم الحديث:3102، ط:دار الفكر)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন