আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৮৬৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,কারো ভালো চাকরি হইছে শুনলে দিলের ভিতর জ্বলে। তার কাছে যাইতে এমনকি তার নাম শুনলেও দিলের ভিতর খারাপ লাগে। নিজেরে খুব ছোট মনে হয়। এর থেকে কিভাবে বাঁচতে পারি। যেটা নিজে পছন্দ করি না সেটা অন্য কেউ করলে খুব রাগ হয়। ভিন্ন মতাদর্শের অর্থাৎ আহলে হাদীস, সাদ গ্রুপ এর কাউরে দেখলে বা তাদের কথা শুনলে খুব রাগ হয়। হক্কানী আলেম নিয়ে কেউ কিছু বললে খুব রাগ হয়। এখন কি করনীয়।

২০ মে, ২০২২
কুতুবদিয়া

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন,
{لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ } [المجادلة: 22]
অর্থাৎ, যে সব লোক আল্লাহ ও আখেরাত দিবসে ঈমান রাখে, তাদেরকে তুমি এমন পাবে না যে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখছে। হোক না তারা তাদের পিতা বা তাদের পুত্র বা তাদের ভাই কিংবা তাদের স্বগোত্রীয়। তারাই এমন, আল্লাহ যাদের অন্তরে ঈমান খোদাই করে দিয়েছেন এবং নিজ রূহ দ্বারা তাদেরকে সাহায্য করেছেন। তিনি তাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত থাকবে। তাতের তারা সর্বদা থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেছেন এবং তাঁরাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেছে। তারা আল্লাহর দল। স্মরণ রেখ, আল্লাহর দলই কৃতকার্য হয়।
صحيح البخاري (1/ 133)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ، يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ: الإِمَامُ العَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي المَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ، فَقَالَ: إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ، أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ "
বুখারির এ হাদিসে সাত শ্রেণীর মানুষের কথা বলা হয়েছে, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা নিজ (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। চার নাম্বারে বলা হয়েছে, এমন দুই ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য।
صحيح البخاري (8/ 14)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ يَجِدُ أَحَدٌ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ حَتَّى يُحِبَّ المَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ، وَحَتَّى أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى الكُفْرِ بَعْدَ إِذْ أَنْقَذَهُ اللَّهُ، وَحَتَّى يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا»
বুখারির এ হাদিসে বলা হয়েছে, কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত ইমানের স্বাদ পাবে না যতক্ষণ না সে কাউকে ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে।
সুতরাং মুমিনের ভালোবাসা ও ঘৃণার মূল ভিত্তি হবে আল্লাহ। আল্লাহকে যে ভালোবাসে, আল্লাহর দ্বীনকে যে মেনে চলে, মুমিনের ভালোবাসা হবে তাদের সাথে। যে আল্লাহকে মানে না, তার দ্বীন মেনে চলে না, তার দ্বীনের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার সাথে মুমিনের হৃদ্যতা থাকতে পারে না।
এ ছাড়া দুনিয়াবি বা ব্যক্তিগত কারণে কারও প্রতি হিংসা বা বিদ্বেষ রাখা যাবে না। যদি এমনটি হয় তাহলে আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা করতে হবে। মন্দ এ মানসিকতা দূর করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করতে হবে। এক্ষেত্রে কার্যকরী পদ্ধতি হলো কোনো মুখলিস মুত্তাকি পরহেজগার আলেমের সাথে পরামর্শ করা, তার পরামর্শে চলার চেষ্টা করা। আশা করি এর মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন।

والله اعلم بالصواب

মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন