আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৮৫৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তালাক দেওয়ার পুর্ব শর্তকি

১৯ মে, ২০২২
গোদাগাড়ী

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




যদি কোনো স্ত্রী স্বামীর অধিকার আদায় না করে; বরং উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত হয়, তাহলে স্বামীর দায়িত্ব হলো তাকে সংশোধনের সর্বাত্মক চেষ্টা করা। তালাক দেওয়ার আগে ইসলামে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। স্বামী সেগুলো অনুসরণ করবে। তার পরও যদি স্ত্রীর মধ্যে কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে চূড়ান্ত ফয়সালা তালাক দেওয়ার পথ বেছে নিতে পারবে।

প্রথম পদক্ষেপ : স্ত্রীর অবাধ্যতা দেখেই উত্তেজিত হবে না; বরং নিজেকে সংযত রাখবে ও তাকে মিষ্টি ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করবে। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে তার মন গলানোর চেষ্টা করবে। স্ত্রী কোনো ভুল ধারণায় থাকলে যথাসম্ভব তা দূর করার চেষ্টা করবে। স্বামী নিজেকে সংযত রেখে সব কিছু ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে। ছাড় দেওয়া ও মায়া-মমতার মাধ্যমে যত দূর সম্ভব দাম্পত্য জীবন স্থায়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ : উক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ না হলে স্ত্রীর ব্যবহারে রাগ-অনুরাগ, অভিমান প্রকাশ করার জন্য স্বামী স্ত্রীর সঙ্গে একত্রে রাতযাপন থেকে বিরত থাকবে। স্ত্রীর ঘুমানোর জায়গা পৃথক করে দেবে।

স্ত্রী যদি এতেই সতর্ক হয়ে যায় এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তাহলে দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। আল্লাহ বলেন, ‘স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা করো তাদের সদুপদেশ দাও। তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো। অতঃপর তাদের সামান্য প্রহার করো। (অর্থাৎ এমনভাবে হালকা প্রহার করবে, যাতে শরীরে কোনো যখম বা আঘাত না হয় এবং মুখে ও লজ্জাস্থানে কখনো প্রহার করবে না। মুজামে তাবরানি : হা. ২১৩০)
যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অন্বেষণ কোরো না। (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৪)

তৃতীয় পদক্ষেপ : উল্লিখিত দুটি পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও কোনো কাজ না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামের নির্দেশ হলো উভয় পক্ষ থেকে এক বা একাধিক সালিসের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করবে। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ সৃষ্টির আশঙ্কা করো, তবে মীমাংসার জন্য পুরুষের পরিবার থেকে একজন সালিস ও নারীর পরিবার থেকে একজন সালিস পাঠিয়ে দেবে। তারা দুজন যদি মীমাংসা করতে চায়, তবে আল্লাহ উভয়ের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞাত ও সর্ববিষয়ে অবহিত। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৫)

যদি পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছে যায় যে মীমাংসার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তখন ইসলামী শরিয়ত স্বামীকে তালাক দেওয়ার এখতিয়ার দিয়েছে। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে তালাক দেওয়া অত্যন্ত অপছন্দনীয় ও ঘৃণিত কাজ। হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে বৈধ কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ হলো তালাক। ’ (আবু দাউদ : হাদিস : ২১৭৮)

والله اعلم بالصواب

মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন