সন্তানের বিছানা পৃথক করে দেওয়া সম্পর্কিত হাদীস
প্রশ্নঃ ১৭৯২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, জনাব, নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন। ক) তোমাদের সন্তানদেরকে সাত বছর থেকে নামায শিক্ষা দাও এবং তাদের বিছানা আলাদা করে দাও। এটি হাদীস কি না? যদি হাদীসের কথা হয় তবে বিছানা আলাদা করার গুরুত্ব এবং পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী। খ) আমি চার সন্তানের মা। আমার ছেলেমেয়েরা সবাই বিবাহিত এবং উচ্চ শিক্ষিত। কিন্তু তারা নামায পড়ে না। এদেরকে আমি কীভাবে সৎ কাজে আদেশ করব এবং অসৎ কাজে নিষেধ করব? গ) বর্তমানে এই অশ্লীলতার যুগে শিশুরাও যেখানে অশ্লীল ছবি দেখতে অভ্যস্ত সেখানে ছেলেমেয়েদের বালেগ হওয়ার বয়স কত এবং আলামত কী কী? ,
২৪ জানুয়ারী, ২০২৫
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সন্তানের বিছানা পৃথক করে দেওয়া সম্পর্কিত হাদীসটি নিম্নরূপ-
مروا أولادكم بالصلاة وهم أبناء سبع سنين واضربوهم عليها وهم أبناء عشر وفرقوا بينهم في المضاجع
অর্থ : তোমাদের সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দাও যখন তাদের বয়স সাত বছর হবে। আর দশ বছর বয়স হলে নামাযের জন্য তাদেরকে প্রহার কর এবং তাদের পরস্পরের বিছানা আলাদা করে দাও। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪৯৫
এ হাদীসে সন্তানের বয়স দশ বছর হলে তার শোয়ার বিছানা পৃথক করার হুকুম এসেছে। অবশ্য একটি বর্ণনায় সাত বছর বয়সেই বিছানা পৃথক করে দেওয়ার কথা এসেছে। -মুসতাদরাকে হাকীম, হাদীস ৭৩৪ হাদীস ও ফিকহবিদগণ সুনানে আবু দাউদের উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে সন্তানের বয়স দশ বছর হলে তার শোয়ার বিছানা পৃথক করে দেওয়াকে ওয়াজিব বলেছেন। এ বয়সে ছেলের জন্য মার সাথে এবং মেয়ের জন্য বাবার সাথে একই বিছানায় শোয়া নিষেধ। অবশ্য বাবার সাথে এক ছেলে এবং মায়ের সাথে শুধু এক মেয়ে একই বিছানায় শোয়ার অবকাশ আছে।
বিছানা পৃথক হওয়ার পদ্ধতি:
বিছানা পৃথক হওয়ার অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রুমের ব্যবস্থা করে দিতে হবে; বরং একই রুমে ভিন্ন খাট, চকি বা ভিন্ন বিছানার ব্যবস্থা করলেও চলবে। আর যদি তাদের জন্য পৃথক পৃথক বিছানার ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় বরং সকলকে এক বিছানাতেই রাত্রিযাপন করতে হয় সেক্ষেত্রে এ বয়সের সন্তানদের মাঝে কোল বালিশ বা এ ধরনের কোনো কিছু দিয়ে হলেও আড়াল রাখা আবশ্যক। আর মেয়েদের বিছানা বাবা ও ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু কোল বালিশ রাখা যথেষ্ট নয়। -আদ্দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮২
খ) সন্তানরা দ্বীনী কথা না শুনলেও পিতামাতার কর্তব্য হল তাদেরকে নামায আদায়ের কথা হেকমতের সাথে বলতে থাকা। নামায পড়ার লাভ এবং না পড়লে কী ক্ষতি ও শাস্তি রয়েছে তা শোনানো। এছাড়া শরীয়তের অন্যান্য হুকুম-আহকাম মেনে চলার প্রতিও আদেশ উপদেশ ও উৎসাহ দিতে থাকা। ইনশাআল্লাহ এতে তাদের উপকার হবে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে- وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَى تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِينَ
(তরজমা) আর আপনি উপদেশ দিতে থাকুন। কারণ উপদেশ মুমিনদের উপকারে আসবে। -সূরা যারিয়াত ৫১ : ৫৫
এছাড়া এভাবে বলতে থাকলে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কিছুটা হলেও আদায় হয়। তাই তাদেরকে সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করতে থাকুন। পাশাপাশি নসীহতমূলক দ্বীনী কিতাবাদি থেকে পড়ে শোনান। হক্কানী আলেম ও বুযুর্গদের সোহবত গ্রহণের উপদেশ দিন।
মোটকথা, আপনাদের সাধ্যানুযায়ী সব ধরনের চেষ্টা আব্যাহত রাখুন এবং তাদের হেদায়াতের জন্য বেশী বেশী দুআ করতে থাকুন। ইনশাআল্লাহ এতে কোনো এক সময় তাদের মাঝে দ্বীনি বুঝ সৃষ্টি হবে এবং আমলেও পরিবর্তন আসবে।
প্রকাশ থাকে যে, সন্তানদেরকে নামাযসহ দ্বীনের জরুরি বিষয়াদি, কুরআন মাজীদ ও ঈমান-আকীদার কথা শেখানো, নেক ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করা, সুন্নত ও আদব আখলাক শিক্ষা দেওয়া, পিতা-মাতার দায়িত্ব। সন্তানকে দ্বীনিভাবে গড়ে তোলার জন্য শৈশবকাল থেকেই পিতা-মাতাকে যত্নবান হওয়ার প্রতি হাদীসে গুরুত্ব এসেছে। তাই সন্তানের লেখা-পড়ার বয়স হয়ে গেলে তখন থেকেই তাকে কুরআন মাজীদ শিক্ষা দিবে। আর সাত বছর বয়সে নামাযের আদেশ দিবে। আর দশ বছর বয়স হলে নামাযের জন্য জোর তাকীদ দিবে। নামাযের জন্য এ বয়সে প্রয়োজনে হালকা শাস্তিও দেওয়া যাবে। এভাবে শরীয়তের প্রত্যেকটা বিধি-বিধানের প্রতি শৈশব থেকেই যত্নবান হলে ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে সন্তান ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ নিয়েই বড় হবে। এক্ষেত্রে তার বিপথগামী হওয়া বা মা-বাবার অবাধ্য হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। -মুসতাদরাকে হাকীম, হাদীস ৭৭৫৩; ফয়যুল কাদীর ১/২২৬
গ) ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বালেগ হওয়ার বয়সসীমা ও আলামত শরীয়তের পক্ষ থেকে নির্ধারিত রয়েছে। কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে বালেগ হওয়ার নির্দিষ্ট আলামত পাওয়া গেলে বা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌঁছলেই তাকে বালেগ গণ্য করা হবে এবং তখন থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম তার উপর প্রযোজ্য হবে। ছেলেদের বালেগ হওয়ার আলামত হল: ক) স্বপ্নদোষ হওয়া। খ) বীর্যপাত হওয়া। আর মেয়েদের বালেগ হওয়ার আলামত হল: ক) স্বপ্নদোষ হওয়া। খ) হায়েয (ঋতুস্রাব) আসা। গ) গর্ভধারণ করা। বালেগ হওয়ার উপরোক্ত নির্দিষ্ট আলামত যদি কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে উভয়ের বয়স যখন হিজরী বর্ষ হিসাবে পনেরো বছর পূর্ণ হবে তখন প্রত্যেককে বালেগ গণ্য করা হবে এবং পনেরো বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও সে বালেগ বলেই বিবেচিত হবে।
প্রকাশ থাকে যে, কোনো ছেলে বা মেয়ের সাথে শরয়ী পর্দা করার হুকুম প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সাথে সীমাবদ্ধ নয়। যেমনটি কেউ কেউ ধারণা করে থাকে। বরং প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বেই যখন কোনো ছেলের নারী-পুরুষ সম্পর্কের বিষয়ে বোঝার বয়স হয়ে যায় তখন থেকেই তার সাথে পর্দা করতে হবে। আর মেয়েদের পর্দার বয়স শুরু হয় তার শরীরে মেয়েলী বৈশিষ্ট্য প্রকাশ হওয়ার সময় থেকেই। যখন তাকে দেখলে কোনো পুরুষ আকর্ষণ অনুভব করে। পিতা-মাতার কর্তব্য হল এমন বয়সী ছেলেমেয়েদের পর্দার ব্যাপারে সচেতন থাকা।والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৮১১৫
মেয়েদের চাকরি সংক্রান্ত
৭ নভেম্বর, ২০২৩
সোনারগাঁ

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার,মোহাম্মাদপুর!
১১৮৮৯
২৬ ডিসেম্বর, ২০২১
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
৬৬৫১৯
শশুর শাশুড়ীকে আব্বু-আম্মু ডাকার বিধান
৫ জুলাই, ২০২৪
খুলনা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৮১২৬
২০ আগস্ট, ২০২১
Libya

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে