আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৭৮৮৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একজন সমকামী যদি সমকামিতা পরিহার না করে রোজা ও নামাজ আদায় করে । এগুলো কবুল হবে কী?? ইর বাংলাদেশে সমকামিতা বাড়ছে এর জন্য একজন মুসলিম হিসেবে আমার কি করনীয়??,

৪ মে, ২০২২

বরিশাল

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




আলহামদু লিল্লাহ।.

নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা জিনা ও সমকামিতাকে নিষিদ্ধ করেছেন। সমকামিতা স্পষ্ট কবিরা গুনাহ। শুধু তাই নয় এ জঘন্য অপরাধের কারণে আল্লাহ তাআলা একটি জাতিকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

তবে যে ব্যক্তি কোন কবিরা গুনাতে লিপ্ত হয়েছে- যেমন সুদি কারবারে জড়িত হওয়া বা উল্লেখিত সমকামিতায় জড়িত হওয়া- এমন ব্যক্তি রোযা রাখলে তার শরয়ি দায় খালাস হবে; তবে এতে কমতি থাকবে। হতে পারে সে ব্যক্তি রোযা রাখার সওয়াব পাবে না। আল্লাহ তাআলার এ বাণীটি একটু ভেবে দেখুন তো, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়াবানহতে পার।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩] এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য উল্লেখ করে দিয়েছেন, সেটা হচ্ছে- আল্লাহর নির্দেশ পালন ও নিষেধগুলো বর্জনের মাধ্যমে আল্লাহভীতি বা তাকওয়া অর্জন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা ও মিথ্যা কর্ম ত্যাগ করল না; তার পানাহার ত্যাগ করা তে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” [সহিহ বুখারি (১৯০৩)] অর্থাৎ রোযার মাধ্যমে আল্লাহর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, আমরা পানাহার থেকে উপবাস করব; বরং আল্লাহর উদ্দেশ্য হচ্ছে- আমরা আল্লাহকে ভয় করব। যেহেতু আল্লাহ বলেছেন, “যেন তোমরা তাকওয়াবানহতে পার”। [দেখুন ‘আল-শারহুল মুমতি (৬/৪৩৫)]

হাফেয ইবনে হাজার বলেন, হাদিসের বাণী: “قول الزور والعمل به” এর মধ্যে قول الزور দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- মিথ্যা কথা; আর والعمل به বা মিথ্যাকর্ম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- মিথ্যার দাবীর অনুযায়ী কাজ করা।

ইবনুল আরাবী বলেন, এ হাদিসের দাবী হচ্ছে- হাদিসে যে পাপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে ব্যক্তি এ পাপ করবে সে রোযার সওয়াব পাবে না। অর্থাৎ দাঁড়িপাল্লাতে রোযার সওয়াব মিথ্যা ও মিথ্যাকর্মের গুনাহর চেয়ে হালকা।

বায়যাবী (রহঃ) বলেন, নিরেট ক্ষুধার্ত বা পিপাসার্ত থাকা রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য নয়; বরং রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে- রোযা রাখার মাধ্যমে যৌন চাহিদাকে প্রশমিত করা, নফসে আম্মারাকে নফসে মুতমাইন্নাহর অনুগত করা। যদি এটি হাছিল না হয় তাহলে আল্লাহ তাআলা রোযার প্রতি কবুলের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

এ হাদিসটি দিয়ে দলিল দেয়া হয়ে থাকে যে, এ পাপগুলো রোযাকে অসম্পূর্ণ রাখবে।[ফাতহুল বারী থেকে সমাপ্ত]
দ্বিতীয়ত বাংলাদেশে সমকামিতার মত জঘন্য ধ্বংসাত্বক পাপকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জোড় প্রচারণা চালোনো হচ্ছে। একজন মুসলিম হিসেবে প্রথমত আমাদেরকে জিনা, সমকামিতার দিকে আকর্ষণ করে এমন সকল বিষয় ও উপকরণ থেকে দূরে থাকতে হবে। আর এটি হবে পূর্ণ পর্দা রক্ষা ও দৃষ্টি হেফাজত করার মাধ্যমে। নিজেকে বাঁচিয়ে চলার সাথে সাথে দ্বীনের উপর টিকে থাকার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি দুআ করে যেতে হবে।
আল্লাহ তআলা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৮৪৮৯

মালাকুল মাউত কি একাই জান কবয করেন ?


২০ আগস্ট, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৩১২৪৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

১৮৯৪৮

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, পুরুষের জন্য রুপার আংটি পরার কি কুন পরিমাণ/পরিমাপ আছে কি আমি জতটুকু জানি ৬...

৮ জুন, ২০২২

জয়দেবপুর - টাঙ্গাইল মহাসড়ক

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৪১৮৬

দুর্বল ঈমান শক্তিশালী করার আমল ও কৌশল


৩ জুন, ২০২৩

যশোর, Khulna, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy