আহলে হাদিস, সাদীয়ানী বা কোনো পীরের মুরিদকে কি যাকাত দেওয়া যাবে না?
প্রশ্নঃ ১৬৭২৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, রমজানে বেশি বেশি সাদাকাহ করার কথা বলা আছে। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় সদকা করেছিলাম। কিন্তু এখন একজন আমাকে বলেছেন 'তুমি যেখানে সদকা করেছো ওরা একজন আহলে হাদীস আর আরেকজন তাবলীগের সাদপন্থি। এই সদকা দিয়ে ওরা ওদের আদর্শে ছাত্রদের গড়ে তুলবে'।তাহলে কি আমার সদকা গুলো হয়নি?সদকা পাঠানোর আগে কি যারা এগুলো নিয়ে কাজ করেন তাদের আকিদা সর্ম্পকে আগে জানতে হবে? যে তারা সাদপন্থি/আহলে হাদীস/পীরের মুরিদ কিনা? আমি দেখেছি উনারা এতিমখানা, হেফজখানা,নওমুসলিম, পাহাড়ী মুসলিম,প্রত্যন্ত এলাকার মুসলিমদের সাদাকাহগুলো দেন।
৩০ অক্টোবর, ২০২৩
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আপনি এখনে তিনটা শ্রেণি বা মতাদর্শের লোকদের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম দুইটির সাথে ওলামায়ে কেরামের গবেষণা এবং চিন্তাগত বেশকিছু দ্বিমত থাকলেও তারা কিন্তু মুসলমান। এবং আপনার বর্ণনামতে তারা জাকাতের অর্থ সংগ্রহ করে তার যোগ্য হকদারের কাছে পৌঁছে দেয়। কাজেই তাদের কাছে জাকাত দিলে জাকাত আদায় হবে না মর্মে আপনি যেই ধারণা করছেন তা সঠিক নয়। আপনার জাকাত আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আর্দশ প্রচার করবে সেটাও ঠিক। সেই হিসেবে আপনি যদি তাদের জাকাত না দিতে চান তাহলে না দিবেন সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু দিলে আদায় হবে না সেটা ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ তালায়া যাকাত-সদাকার খাত উল্লেখ করে বলেন,
انمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَٱلْمَسَٰكِينِ وَٱلْعَٰمِلِينَ عَلَيْهَا وَٱلْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِى ٱلرِّقَابِ وَٱلْغَٰرِمِينَ وَفِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِّنَ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
সাদাকা তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশিষ্ট কর্মচারীদের জন্যে, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্যে, দাসমুক্তির জন্যে, ঋণ ভারাক্রান্তদের, আল্লাহ্ র পথে ও মুসাফিরদের জন্যে। এটা আল্লাহ্ র বিধান। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তাওবা-৬০)
তৃতীয়টি অর্থাৎ পীর মুরিদীর বিষয়ে কথা হলো, যদি সকল প্রকার বিদয়াত, ভন্ডামী, মাজার পূঁজা, পীর পূঁজা, কবর পূঁজা এবং মুর্খতা পরিহার করে কুরআন সুন্নাহ প্রদর্শিত নিয়মে পীর-মুরিদী করে কেউ নিজের এবং উম্মতে মুসলিমার আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করে তাহলে এর বৈধতার ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মাঝে কোনো দ্বিমত নেই। বরং কুরআন হাদিসে এব্যাপারে অসংখ্য নির্দেশনা রয়েছে। আমাদের সমাজে বিষয়গুলো নিয়ে অনেক বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি আছে। কাজেই সকল কিছুকে শরীয়তের সীমার মধ্যে রাখা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১