প্রশ্নঃ ১৪৫০৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম ও রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু আমার জিজ্ঞাসা হলো মশা কুকুর সাপ পিঁপড়া ইত্যাদি মারাঠি গুনাহের কাজ এবং মশার রক্ত কি নাপাক একটু বিস্তারিত বলবেন,
৬ মার্চ, ২০২২
ফুলবাড়ীয়া
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যেসব কুকুর দ্বারা মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেগুলো মেরে ফেলার সুযোগ রয়েছে। সেগুলো ক্ষতিকারক প্রাণী হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু অহেতুক কোনো কুকুরকে হত্যা করা যাবে না।
২. সাধারণত পিপিলিকাকে হত্যা করা হারাম ও নাজায়েয।
ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال: "نهى رسول الله صلى الله عليه سلم عن قتل أربع من الدواب النملة، والنحلة، والهدهد، والصرد"
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার প্রকার প্রাণী হত্যা করতে বারণ করেছেনঃ পিঁপড়া, মধুমক্ষিকা, হুদহুদ পাখি এবং চড়ুই সদৃশ বাজ পাখি।সুনানু আবি-দাউদ-৫২৬৭, সুনানু ইবনি মা'জা-৩২২৪
তবে কষ্টদায়ক পিপড়া যা মানুষের শরীরে কামড় দেয় বা যা খাদ্যকে নষ্ট করে দেয়,সেই সব পিপড়াকে হত্যা করা জায়েয আছে।যেমন সাদা পিপড়া,বা লাল পিপড়া।হাদীসে পিপড়া হত্যাকে নিষেধ করা হয়েছে,সেগুলো মূলত সেসব পিপড়াকে কেন্দ্র করে বলা হয়েছে,যেগুলো মানুষকে কোনো প্রকার ক্ষতি পৌছায় না।
সুতরাং ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো পিপড়াকে হত্যা করা যাবে না,যতক্ষণ না সেই পিপড়া কষ্টদায়ক প্রমাণিত হবে।এবং উক্ত পিপড়াকে হত্যা ব্যতিত সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা থাকবে না।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " نَزَلَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ تَحْتَ شَجَرَةٍ فَلَدَغَتْهُ نَمْلَةٌ فَأَمَرَ بِجَهَازِهِ فَأُخْرِجَ مِنْ تَحْتِهَا ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَأُحْرِقَتْ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ فَهَلاَّ نَمْلَةً وَاحِدَةً " .
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন এক নবী (আঃ) এক গাছের নিচে বসবাস করছিলেন। একটি পিঁপড়া তাঁকে কামড় দিলো। তিনি বিছানাপত্র সরানোর নির্দেশ দিলে তা তাঁর নিচ হতে সরানো হলো। তারপর তিনি আদেশ দিলে সব পিঁপড়া জ্বালিয়ে দেয়া হলো। আল্লাহ তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠালেনঃ একটি মাত্র পিঁপড়া নয় কেন?
শরীয়তের বিধান মতে মশার রক্ত নাপাক নয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, ‘আবু জাফর এবং আতা (রাহ.) মশা ও বুরগুসের (পাখাবিহীন এক প্রকার ক্ষুদ্র কীট) রক্তে কোনো সমস্যা মনে করতেন না।’ [মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ২০৩১]
৩. আমাদের একটা নিন্দনীয় স্বভাব হলো, সাপ দেখলেই তা মেরে ফেলা। এ কথা সত্য যে সাপ একটি প্রাণসংহারী প্রাণী। পৃথিবীতে এমন সাপও আছে, যার এক ফোঁটা বিষ এক মিনিটের মধ্যে একাধিক মানুষের প্রাণনাশে সক্ষম। কিন্তু সব সাপ বিষধর নয়। তা ছাড়া বেশির ভাগ সাপ কেউ উত্ত্যক্ত না করলে সহসা কামড় বসায় না। তার পরও সাপের দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে তা মারতে বাধা নেই। তবে সাপ মারার আগে আমাদের করণীয় হলো ওই সাপ আমাদের ক্ষতি করবে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। এ ব্যাপারে হাদিসেও খুব সুন্দর নিয়ম উল্লেখ রয়েছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো সাপ মারার আগে তিনবার তাকে সাবধান করবে। এর পরও যদি সে (গর্ত থেকে) বের হয়, তখন তাকে মেরে ফেলবে। কেননা সে শয়তান। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৬৮)
হজরত সালিম (রহ.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সেই সাপ মারবে, যার পিঠে দুটি সাদা রেখা আছে এবং যার লেজ নেই। কেননা এরা বিষধর হওয়ার কারণে দর্শনশক্তি বিনষ্ট করে দেয় এবং গর্ভস্থিত সন্তান ধ্বংস করে দেয়। ’ বর্ণনাকারী বলেন, এর পর থেকে আবদুল্লাহ (রা.) যেকোনো সাপ দেখতে পেলে তা মেরে ফেলতেন। একবার আবু লুবাবা (রা.) অথবা জায়েদ ইবনে খাওয়াব (রা.) তাঁকে একটি সাপ মারতে উদ্যত দেখে বললেন, নবী করিম (সা.) ঘরে বসবাসকারী সাপ মারতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৬২)
অনেক সময় সাপের রূপ ধারণ করে নেককার জিনরা বিচরণ করে থাকে। যেমনটি হাদিস থেকেও জানা যায়। হজরত ইয়াজিদ ইবনে মাওহাব (রহ.) আবু সাইদ (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন—একদা আমি আবু সাঈদ খুদরি (রা.)-এর কাছে এসে বসি। এ সময় আমি তাঁর চৌকির নিচে কিছুর আওয়াজ শুনতে পাই। আমি তাকিয়ে দেখি যে একটি সাপ। তখন আমি দাঁড়ালে আবু সাইদ (রা.) জিজ্ঞাসা করেন, তোমার কী হয়েছে? তখন আমি বললাম, এখানে একটা সাপ আছে। তিনি বলেন, তুমি কী করতে চাও? তখন আমি বললাম, আমি তাকে মেরে ফেলব। তখন তিনি তাঁর বাড়ির একটি ঘরের দিকে ইশারা করে বলেন, এখানে আমার চাচাতো ভাই থাকত। খন্দকের যুদ্ধের সময় সে রাসুল (সা.)-এর কাছে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুমতি চায়। কেননা সে তখন নতুন বিয়ে করেছিল। তখন রাসুল (সা.) তাকে অনুমতি দেন এবং বলেন, তুমি তোমার হাতিয়ার নিয়ে যাও। সে নিজ ঘরে ফিরে তার স্ত্রীকে ঘরের দরজার ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে তার (স্ত্রীর) প্রতি কলম দিয়ে ইশারা করে। তখন তার স্ত্রী বলল, তাড়াহুড়ো কোরো না। এসে দেখো কী যেন আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। তখন সে ঘরে ঢুকে একটি কুিসত সাপ দেখতে পায়। সে তাকে বল্লম দিয়ে হত্যা করে এবং বল্লমে তার দেহ ফুঁড়ে বাইরে নিয়ে আসে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি জানি না, এরপর কে আগে মারা গিয়েছিল—লোকটি, না সাপটি। তখন তার জাতির লোকেরা রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলেছে, আপনি দোয়া করুন, যাতে আমাদের সঙ্গী বেঁচে যায়। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করো। ’ এরপর তিনি বলেন, ‘মদিনার একদল জিন ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাই তোমরা যখন তাদের (সাপ) কাউকে দেখবে, তখন তাকে তিনবার ভীতি প্রদর্শন করবে যে আর বের হবে না, অন্যথায় মারা পড়বে। এরপর যদি সে (গর্ত থেকে) বের হয়, তখন তাকে মেরে ফেলবে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৬৭)
তাই আসুন! সাপ দেখামাত্রই না মেরে নবীজির এই হাদিসের অনুসরণ করি। অযথা এদের উত্ত্যক্ত না করি। সাপকে সাপের মতোই বেড়ে উঠতে দিই। কারণ এরাও আমাদের জীববৈচিত্র্যের অন্যতম অংশীদার। পরিবেশ রক্ষায় এদের ভূমিকাও অনস্বীকার্য।
والله اعلم بالصواب
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৩৪১৩৫
শরীরের ঘামে নাপাক বিছানা বিছানা ভিজে গেলে শরীর নাপাক হবে কিনা?
১৬ জুন, ২০২৩
ঢাকা ১২১৯

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আবু সাঈদ
৮৯১৫৬
পিরিয়ড চলাকালীন অজু অবস্থায় থাকার লাভ
১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
চট্টগ্রাম ৪২১৭

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২৯০২০
লন্ড্রিতে কাপড় ধোলাই করা কি জায়েজ?
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
কুতুবদিয়া

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে