আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

সাধারণ শিক্ষিতদের হিফজ প্রসঙ্গে

প্রশ্নঃ ১৩৬১৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, শাইখ আমি একজন জেনারেল লাইনের স্টুডেন্ট আমি কোরআনের 30 পারা হেফজ্ করতে চাই এজন্য আমার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং কি কি কৌশল অবলম্বন করা যায় সহজে মুখস্ত করার জন্য দয়া করে জানাবেন এবং আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশনে যেসব হাদিসগ্রন্থ বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে যেমন সহিঃ আল বুখারি এবং অন্যান্য হাদিস গ্রন্থসমূহ এগুলো আমি পড়তে পারব কি দয়া করে জানাবেন।

৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী!
প্রিয় ভাই আল্লাহ তায়ালা আপনার নেক তামান্ন পুরণ করুন। আপনাকে একজন হাফেজ হিসেবে কবুল করুন। আপনি চেষ্ট ও দুয়া অব্যহত রাখুন।

যেকোনো জিনিষই মুখস্ত করার জন্য পড়ার বিকল্প নেই । তাই আপনি রুটিনমাফিক পড়তে থাকুন। যদি আপনার তেলাওয়াত সহিহ না থাকে তাহলে আগে তেলাওয়াত সহিহ করার প্রতি মনোনিবেশ করুন তারপর হিফজের প্রতি মনযোগী হোন।

এর জন্য আপনি নিম্নোক্ত পরমর্শগুলো গ্রহন করতে পারেন।

(১) প্রতিদিন চার পাঁচ আয়াত (আয়াতের আকার হিসেবে) করে মুখস্ত করুন। মুখস্তের সবচে’ উত্তম সময় হলো,ফজরের আগে। ওই সময় মস্তিস্ক ঠান্ড যা মুখস্তের জন্য বড়ই জরুরী। সম্ভব হলে আপনি ফজরের আগে অন্তত আধাঘন্টা কুরআন মুখস্ত করুন। তারপর সারা দিন পড়াশোনার ফাঁকে সময় এবং সম্ভব হলে
তেলাওয়াত করতে থাকুন।

(২) মাগরিবের পরেও কিছু সময় দিন।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কিছু সময় কুরআনের জন্য বরাদ্দ করুন। সবকিছু মিস হলেও যেন সাপ্তাহিক তেলাওয়াত মিস না হয়।

(৩) প্রতিদিন সম্ভব না হলে, আন্তত সপ্তাহে একদিন হলেও পুরো সপ্তাহের মুখস্ত আয়াত/সুরাগুলো শুদ্ধ তিলাওয়াতকারী আলেম, মাদরাসার ছাত্র বা কোনো ইমাম-মুয়াজ্জিনকে শোনাবেন। হিফজকৃত পড়া কাউকে না শোনালে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কাজেই যেকোনো ভাবেই কাউকে শোনাতে হবে।

(৪) ভালো কোনো কারীর হদর তেলাওয়াতে আপনার
হিফজকৃত অংশটুকু বারবার শোনতে থাকুন। বারবার শোনতে থাকাও মুখস্তের জন্য বড় সহায়ক।

(৫) যথাসম্ভব নামাজে কিছুকিছু করে তেলাওয়াত করতে চেষ্টা করুন। কেননা নামাজের তেলাওয়াত সমচে বেশী মুখস্ত থাকে। সামনে রমজান মাস আসছে। পুরো রমজান কুরআনের সাথে লেগে থাকুন।


(৬) সময় নষ্ট হয় এমন যেকোনো বিষয়, বস্তু এড়িয়ে চলবেন। যেমন দোকানে আড্ডা দেওয়া, গল্প-গুজব করা বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

(৭) অতিরিক্ত রাগ পরিহার করবেন। কেননা যারা অতিরিক্ত রাগ করেন তারা অনেক কিছু মুখস্ত করতে এবং স্মরণ রাখতে পারেন না।

সর্বোপরি গুনাহ বর্জন করতঃ আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা, দোয়া ও সাহায্য কামনা করবেন। কারণ গুনাহ বর্জন করা এবং আল্লাহ তায়ালার সাহায্য ছাড়া এই বিশাল গ্রণ্থ হিফজ করা সম্ভব নয়।

আপনি অদম্য চেষ্ট চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ সফল হবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন,

أَحَبُّ الْاَعْمَالِ إِلَى اللهِ تَعَالٰى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ

‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যা সর্বদা করা হয় যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’ (সহিহ মুসলিম : ১৮৬৬)

এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বিশেষত রমজান মাসে বয়স্কদের কুরআন হিফজের কর্মশালা চালু থাকে সেগুলোর প্রতিও চোখ রাখুন।
আল্লাহ তায়ালাই উত্তম তাওফিকদাতা।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন