আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১২৪২০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একটি মুসলিম বেক্তি নিজের দোকানে সন্ধ্যায় ধূপ ধরানো উচিত কি? এমন কোনো দুয়া আছে যেটা দিলে দোকানে কাস্টোমার বেশি হবে?

৯ জানুয়ারী, ২০২২
Dhaka

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




প্রথমত ধূপ হোক বা আগরবাতি সেটা যদি বরকতের কোন কারণ মনে করে জ্বালানো হয় তাহলে অবশ্যই পরিত্যাজ্য। আর যদি দূর্গন্ধ দূর করার জন্য হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই। তবে ধূপের বিষয়টি একটু ভিন্ন। এটি যদি হিন্দুদের ধর্মীয় কোন রীতি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন মুসলিমের জন্য তা থেকে বিরত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত আপনি ব্যবসার কাস্টমার বৃদ্ধি হওয়ার জন্য দুআ জানতে চেয়েছেন। আল্লাহ তাআলা মানুষকে কোন আমলের বিনিময়ে বরকত দান করবেন সে ব্যাপারে কুরআনে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আসুন দেখে নিই সে দিকনির্দেশনা কী।
এক. ইমান ও তাকওয়া।
সুতরাং আমাদেরকে পূর্ণ ইমান রাখতে হবে, সাথে সাথে আল্লাহভীতি থাকতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কোন ক্ষেত্রে অসদুপায় অবলম্বন করা যাবে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ وَلَـكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذْنَاهُم بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
‘আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন (তাকে ভয়) করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও দুনিয়ার নেয়ামতসমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৯৬)
দুই. যে কোন কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। হাদিসে এর গুরুত্ব এসেছে।
তিন. সাধ্যানুযায়ী দান সদকা করা। কেননা হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা দান সদকার মাধ্যমে বান্দার বিপদ আপদ দূর করে দেন।
চার. আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক রাখা। কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহর বরকত নেমে আসে।
পাঁচ. সকাল সকাল কাজ শুরু করা। রাসূল সা. তাঁর উম্মতের জন্য দুআ করেছেন, হে আল্লাহ, আপনি আমার উম্মতকে সকালে বরকত দান করুন।
ছয়. নামাযের গুরুত্ব দেওয়া। নিজে নামায পড়ার সাথে সাথে পরিবারকেও নামাযের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমি আপনাকে রিজিক দেই এবং আল্লাহকে ভয় করার পরিণাম শুভ তথা কল্যাণকার।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ১৩২)
সাত. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। আল্লাহ তাআলা ইস্তেগফারের মাধ্যমে বরকত দান করেন। কুরআনে এসেছে,
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا - يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا - وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
‘অতপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
সর্বশেষ কথা হলো আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখা। তার ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা। কেননা এমনও হতে পারে আমার যে অবস্থা আছে সেটিই তার কাছে কল্যাণকর। والله أعلم بالصواب।

والله اعلم بالصواب

মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম উস্তাযুত তাফসির, মারকাযুল বুহুসিল ইসলামিয়া, বাড্ডা।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন