প্রশ্নঃ ১২২৬৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি নামাজ পড়লাম আমার ফ্যামিলি নামাজ পড়লো না তাহলে আমার কী করিনিও?,
২ জানুয়ারী, ২০২২
পশ্চিমবঙ্গ ৭৪১১৬০
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তাআলা মানব ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছিন তার ইবাদতের জন্য। তিনি তাঁর পবিত্র কুরআনে বলেন,
{وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ} [الذاريات: 56]
অর্থাৎ, আমি মানব ও জিনকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্য। [যারিয়াত : ৫৬]
দুনিয়াতে যে ভালো করবে সে তার ভালোর ফলাফল আখেরাতে ভোগ করবে। আর যে মন্দ করবে আখেরাতে সে-ই তার মন্দের শাস্তি ভোগ করবে। কেউ অন্য কারও সাওয়াবের সুবিধা ভোগ করতে পারবে না, আবার কারও ওপর অপরের কোন অপরাধের শাস্তিও চাপিয়ে দেওয়া হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
{ وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى} [فاطر: 18]
অর্থাৎ, আর কোন বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। [ফাতির : ১৮]
সুতরাং বাবা আল্লাহর বিধান পালন করে কিন্তু ছেলে নাও করতে পারে। স্বামী আল্লাহর বিধান পালন করে কিন্তু স্ত্রী নাও করতে পারে। বিপরীতে স্ত্রী আল্লাহর বিধান পালন করে কিন্তু স্বামী নাও করতে পারে।
যেমন নূহ আ. নবি ছিলেন, কিন্তু তার ছেলে তার অনুসারী ছিল না। বরং সেই মাহপ্লাবনে ডুবে মরে। আল্লাহ তাআল নুহ আ.-এর সন্তানের ব্যাপারে বলেন,
{قَالَ يَانُوحُ إِنَّهُ لَيْسَ مِنْ أَهْلِكَ إِنَّهُ عَمَلٌ غَيْرُ صَالِحٍ} [هود: 46]
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে নুহ! সে (তার ছেলে) তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে তো নেককার নয়। [হুদ : ৪৬।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, নুহ আ.-এর নবুয়াতি যেমন তার ছেলের কোন উপকার করতে পারেনি। অপরদিকে তাঁর ছেলের মন্দ আমল নুহ আ.-এর মর্যাদায় কোন ঘাটতি আনতে পারেনি। কেননা, যার যার আমল তার তার।
আল্লাহ তাআলা আরও দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন, তিনি মুমিনদের জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে পেশ করেছেন ফিরাউনের স্ত্রীকে, ফিরাউনের মন্দ আমল তার স্ত্রীর মর্যাদা হ্রাস করতে পারেনি।
আর কাফেরদের জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন নুহ ও লুত আ.-এর স্ত্রীদ্বয়কে। উভয় নবির নবুয়াতি তাদের স্ত্রীদেরকে কোন উপকার করতে পারেনি।
যে দৃষ্টান্ত কুরআনে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে,
{ ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِلَّذِينَ كَفَرُوا امْرَأَتَ نُوحٍ وَامْرَأَتَ لُوطٍ كَانَتَا تَحْتَ عَبْدَيْنِ مِنْ عِبَادِنَا صَالِحَيْنِ فَخَانَتَاهُمَا فَلَمْ يُغْنِيَا عَنْهُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا وَقِيلَ ادْخُلَا النَّارَ مَعَ الدَّاخِلِينَ (10) وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِلَّذِينَ آمَنُوا امْرَأَتَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِنْدَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِنْ فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ} [التحريم: 10، 11]
মুমিনের দায়িত্ব হলো প্রথমে নিজেকে বাঁচানো, তারপর পরিবারকে বাঁচানোর চেষ্টা করা এবং তারপর নিজের দাওয়াতকে আরও প্রসারিত করা। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
{يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا} [التحريم: 6]
অর্থাৎ, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও নিজেদের পরিবারকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো।
তবে হ্যাঁ, নিজ সন্তানাদি ও স্ত্রী পরিবার পরিজনের ক্ষেত্রে আপনার ওপর যে দায়িত্ব আছে তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। আপনার দায়িত্ব পালন করার পরও তারা যদি আল্লাহর পথে না চলে তবে আপনি প্রশ্নের সম্মুখিন হবেন না, যেমনটি আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আর যদি আপনি আপনার দায়িত্ব না পালন করেন; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তাদেরকে অন্যায় পথে চলার জন্য সহযোগিতা করেন, তবে অবশ্যই আপনি প্রশ্নের সম্মুখিন হবেন এবং এটি তার আমলের কারণে নয়; বরং আপনি আপনার দায়িত্ব পালন না করার কারণে শাস্তির সম্মুখিন হবেন।
রাসূল সা. এক হাদিসে বলেছেন,
صحيح البخاري (3/ 151)
كُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِه
অর্থাৎ, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমরা সে দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।
সুতরাং, আপনার ফ্যামিলির ক্ষেত্রে আপনার করণীয় হলো, তাদেরকে প্রথমে নরমভাবে বুঝানোর চেষ্টা করা। কাজ না হলে আস্তে আস্তে কঠোরতা করা। সাধ্যানুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাওয়া। তারপরও না মানলে, আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিন, দুআ করতে থাকুন এবং চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকুন। যেমনটি রাসূল সা. চেষ্টা করেছেন আবু তালেব শেষ নিঃশাস ত্যাগ করার আয পর্যন্ত । কারণ, হিদায়াত আপনার হাতে না।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝার তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
উস্তাযুত তাফসির, মারকাযুল বুহুসিল ইসলামিয়া, বাড্ডা।
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
২৭২৫৫
ফজরের পর নামাজের স্থান ছেড়ে মসজিদের ভেতরেই আমলে মশগুল থেকে ইশরাক পড়লে কি একটি হজ্জ ও উমরা পালনের সাওয়াব হবে?
১৫ জানুয়ারী, ২০২৩
Building

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১৩২৪৩
১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
Dhaka

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
১৭৫৩৪
২৬ এপ্রিল, ২০২২
সাভার

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১১৯৩০
২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
চট্টগ্রাম

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে