আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১১৯৯২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সালাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পড়ে যে সুরা আমাদের পড়তে হয় সেগুলো কি সুরা এর কোরআন মাজিদের যেমন সিরিয়াল আকারে থাকে সেভাবে পড়ব?নাকি সুরা আগে পরে করে পড়া যাবে?আবার ছোট আয়াত ওয়ালা সুরা পড়ার পড়ে পরের রাকাতে বড় আয়াত ওয়ালা সুরা পড়া যাবে???মানে সুরা পড়তে গেলে ছোট বড় আকারের ক্রম বা কোন সুরার পর কোনটা কোরআনে আছে সেভাবে সিরিয়াল আকারে পড়ব?যেমন-প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা কাওসার এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস পড়া যাবে?,

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১

খুলনা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





১. আপনার প্রশ্নে উত্তর পেতে নিচের রেফারেন্স ‍উত্তরটি দেখুন।
২. এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে হলে নিচের প্রশ্নোত্তরটি পড়ুন।
**************************
প্রশ্ন: নামাজে সুরাগুলো কোনো ক্রম অনুসারে পড়তে হয় ?
যেমন , জোহরের ৪ রাকাত সুন্নত নামাজে ।
কোনটি সঠিক ?
১. ১ম রাকাত –> সুরা নাস ।
২য় রাকাত –> সুরা ফালাক ।
৩য় রাকাত –> সুরা ইখলাস ।
শেষ রাকাত – > সুরা ফিল ।


2. ১ম রাকাত – > সুরা ফিল ।
২য় রাকাত –> সুরা ইখলাস ।
৩য় রাকাত –> সুরা ফালাক ।
শেষ রাকাত –> সুরা নাস ।

৩). ১ম রাকাত –> সুরা ফালাক ।
২য় রাকাত- > সুরা ফিল ।
৩য় রাকাত –> সুরা নাস ।
শেষ রাকাত –> সুরা ইখলাস ।

বিস্তারিত জানালে খুশি হব ।

উত্তর: নামাযের রাকাতসমূহে সূরা পড়ার ক্ষেত্রে মৌলিক কয়েকটি কথা স্বরণ রাখলে আপনার কাছে পুরো বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। যেমন-

১. সূরা মিলানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কমপক্ষে তিন আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়। তিন আয়াতের সীমা হল, কমপক্ষে ত্রিশ হরফ হতে হবে।

(تنبيه) لم ار من قدر ادنى ما يكفى بحد مقدر من الآية الطويلة…….. وَقَدْرُهَا مِنْ حَيْثُ الْكَلِمَاتُ عَشْرٌ، وَمِنْ حَيْثُ الْحُرُوفُ ثَلَاثُونَ، فَلَوْ قَرَأَ – {اللَّهُ لا إِلَهَ إِلا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلا نَوْمٌ} [البقرة: 255]- يَبْلُغُ مِقْدَارَ هَذِهِ الْآيَاتِ الثَّلَاثِ، فَعَلَى مَا قُلْنَاهُ لَوْ اقْتَصَرَ عَلَى هَذَا الْقَدْرِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ كَفَى عَنْ الْوَاجِبِ، وَلَمْ أَرَ مَنْ تَعَرَّضَ لِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ فَلْيُتَأَمَّلْ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فصل فى القراءة قبيل مطلب فى الفرق بين فرض العين وفرض الكفاية-)

২. এক সূরা পড়ার পর মাঝখানে এক সূরা বাদ দিয়ে পরের সূরা পড়া মাকরূহ্ তবে দুই সূরা বাদ দিয়ে পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

যেমন, প্রথম রাকাতে সূরা ফীল পড়ার পর, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সূরা মা’ঊন পড়া মাকরূহ। কিন্তু সূরা কাউসার বা কাফিরূন বা এর পরের সূরাগুলো পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।

ويكره فصله بسورة بين سورتين قرأهما فى ركعتين لما فيه من شبهة التفضيل والهجر، (مراقى الفلاح على هامش الطحطاوى، فصل فى المكروهات-287، الدر المختار مع الشامى- 2/269)

৩. প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়বে, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সূরা পড়বে। কিন্তু প্রথম রাকাতে এক সূরা পড়ে, পরের রাকাতে উক্ত সূরা আগের কোন সূরা পড়া মাকরূহ। তাই প্রথম সূরা শুরু করবে, যেন উক্ত সূরার পর পরের রাকাতে পড়ার মত কোন সূরা থাকে।

যেমন প্রথম রাকাতে সূরা সূরা ফীল পড়া আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা হুমাজাহ পড়া মাকরূহ। কারণ এতে কুরআনের তারতীব পাল্টে দেয়া হচ্ছে।

তবে যদি ভুলে এমনটি করে তাহলে সমস্যা নেই।

কখনো ভুলে যদি সূরা নাস পড়ে ফেলে। তাহলে পরবর্তী সকল রাকাতে সূরা নাসই পড়বে। পূর্বের অন্য কোন সূরা পড়বে না। ভুলে অন্য সূরা পড়লে কোন সমস্যা নেই।

وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،

وقال ابن عابدين الشامى رح: (قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)

قَرَأَ فِي الْأُولَى – {قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ} [الناس: 1]- أَعَادَهَا فِي الثَّانِيَةِ إنْ لَمْ يَخْتِمْ نَهْرٌ لِأَنَّ التَّكْرَارَ أَهْوَنُ مِنْ الْقِرَاءَةِ مَنْكُوسًا بَزَّازِيَّةٌ، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة-2/268)

৪. বড় সূরা মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়া, আর পরের রাকাতে আরেক সূরার মাঝখান থেকে পড়া অনুত্তম। বরং তারতীব ঠিক রেখে পড়তে হবে।

এক্ষেত্রে ভুলক্রমে তারতীব উল্টাপাল্টা হয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছেকৃত এমন করা যাবে না।

لَوْ قَرَأَ فِي الْأُولَى مِنْ وَسَطِ سُورَةٍ أَوْ مِنْ سُورَةٍ أَوَّلَهَا ثُمَّ قَرَأَ فِي الثَّانِيَةِ مِنْ وَسَطِ سُورَةِ أُخْرَى أَوْ مِنْ أَوَّلِهَا أَوْ سُورَةً قَصِيرَةً الْأَصَحُّ أَنَّهُ لَا يُكْرَهُ، لَكِنْ الْأَوْلَى أَنْ لَا يَفْعَلَ مِنْ غَيْرِ ضَرُورَةٍ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع للقراءت مطلقا-2/268-269)

উপরোক্ত চারটি মাসআলা আপনার বুঝে এসে থাকলে আপনার প্রশ্নকৃত ৩টি সূরতের হুকুম আপনি নিজেই বের করে নিতে পারবেন।

আপনার প্রশ্নকৃত যোহরের নামাযের সূরা পড়া পদ্ধতির তিন সূরতের মাঝে কেবল ২য় সূরতের পদ্ধতিটি বিশুদ্ধ। বাকি ১ম ও ৩য় পদ্ধতিটি ভুল।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৮৮৯৯২

ভুলে প্রথম বৈঠকে সালাম


১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

আড়াইহাজার

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯০৭৩৭

ফরয নামাযের সিজদায় অতিরিক্ত দু‘আ করা


২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

মনাইর কান্দি

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মাহমুদুল হাসান

৯০৩৩৬

ভালোভাবে ধৌত করার পরও নাপাকির দাগ কাপড়ে লেগে থাকলে সে কাপড়ে নামায হবে কি?


২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

Kaliganj

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৬৩০৭০

প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড়ে নামাজ পড়ার জায়েজ হবে কি?


২ জুন, ২০২৪

ঢাকা ১২০৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy