আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মানুষের আমলনামা কত বছর বয়সে খোলা হয়?

প্রশ্নঃ ১১৫০৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কত বছর বয়স থেকে আমল নামায় গুনাহ লেখা হয়? কেউ যদি চৌদ্দ-পনের বছর বয়সে বালেগ হয় তাহলে কি তার চৌদ্দ-পনের বছর আগের গুনাহ লেখা হবে না? দয়া করে কোরআন হাদীসের আলোকে জানাবেন।

২১ জানুয়ারী, ২০২৪
নোয়াখালী

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে বালেগ হওয়ার নির্দিষ্ট আলামত পাওয়া গেলে বা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌঁছলেই তাকে বালেগ গণ্য করা হয় এবং তখন থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম তার উপর প্রযোজ্য হয়। নেক কাজ করলে আমলনামায় সাওয়াব এবং গুনাহ করলে আমলনামায় শাস্তি লিপবদ্ধ করা শুরু হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِذَا بَلَغَ الأَطْفَالُ مِنْكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوا

তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়। (সূরা নূর ৫৯)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَحْتَلِمَ، وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ

‘তিন শ্রেণীর মানুষ থেকে কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে; ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত হওয়ার আগ পর্যন্ত, নাবালেগ বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ও পাগল ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত।’ (সুনান আবু দাউদ ৩০১৬)

ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বালেগ হওয়ার বয়সসীমা ও আলামত শরীয়তের পক্ষ থেকে নির্ধারিত রয়েছে। কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে বালেগ হওয়ার নির্দিষ্ট আলামত পাওয়া গেলে বা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌঁছলেই তাকে বালেগ গণ্য করা হবে এবং তখন থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম তার উপর প্রযোজ্য হবে।

ছেলেদের বালেগ হওয়ার আলামত হল:
ক) স্বপ্নদোষ হওয়া।
খ) বীর্যপাত হওয়া।

আর মেয়েদের বালেগ হওয়ার আলামত হল:
ক) স্বপ্নদোষ হওয়া।
খ) হায়েয (ঋতুস্রাব) আসা।
গ) গর্ভধারণ করা।
বালেগ হওয়ার উপরোক্ত নির্দিষ্ট আলামত যদি কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে উভয়ের বয়স যখন হিজরী বর্ষ হিসাবে পনেরো বছর পূর্ণ হবে তখন প্রত্যেককে বালেগ গণ্য করা হবে এবং পনেরো বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও সে বালেগ বলেই বিবেচিত হবে। (আল ইনায়া শারহুল হেদায়া ৮/২০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৫৩; তাফসীরে কুরতুবী ১২/১৫১)

হাদিস শরিফে এসছে, নাফে রহ. আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাকে (সবার সামনে) পেশ করেন, তখন আমি ১৪ বছরের বালক। রাসুলুল্লাহ ﷺ তখন আমাকে (যুদ্ধে গমনের) অনুমতি দেন নি। পরে খন্দকের যুদ্ধে তিনি আমাকে পেশ করেন ও অনুমতি দেন। তখন আমি ১৫ বছরের যুবক। নাফে রহ. বলেন, আমি খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজের কাছে গিয়ে এ হাদিস শুনালাম। তিনি বলেন, إِنَّ هَذَا لَحَدٌّ بَيْنَ الصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ এটাই হচ্ছে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়সের সীমারেখা। তারপর তিনি তাঁর গভর্নরদের লিখিত নির্দেশ পাঠালেন যে (সেনাবাহিনীতে) যাদের বয়স ১৫ হয়েছে, তাদের জন্য যেন ভাতা নির্দিষ্ট করা হয়। (বুখারি ২৬৬৪, ৪০৯৭ মুসলিম ১৮৬৮)

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১৮৮৩৫
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার গ্রামের বাড়িতে নারী পুরুষ অবাধে পুকুরে গোসল করে৷ এমন কি এই পুকুরে কোন পর্দার ব্যবস্থাও নেই। পুকুরের পার দিয়ে সারাক্ষণই পুরুষের আনাগোনা থাকে। আমি কয়েকবার পুকুরে পর্দার ব্যবস্থা করার কথা বলছি৷ কিন্তু কেউ আমলেই নেয় নি। তাই আমি চাচ্ছি। ঐ পুকুরের কাছে একটা ছোট ব্যানার বা পোস্টার লাগানোর। যাতে লেখা থাকবে নারীদের বেপর্দায় গোসল করার পরিণতি ও নারী পুরুষ একসাথে গোসল করার পরিণতি। যা কোরআন ও হাদিসের আলোকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে লেখা থাকবে। যা পুকুর গোসল করতে আসা নারী পুরুষের চোখে পড়বে এবং তারা সর্তক হবে।। এখন শাইখ আপনি যদি লিখে দেন তাহলে খুব উপকৃত হবো। আর আমি আমাদের মসজিদের খুদবার ইমাম কেউ এই বিষয় সর্তক করতে বলবো পাশাপাশি পোস্টারটি পুকুরের কাছে লাগিয়ে রাখবো যাতে তারা সর্তক হয় আর পর্দার ব্যবন্থা করে৷
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১ জুন, ২০২২
ঢাকা ১৩৬১