কুরআনের আয়াতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়
প্রশ্নঃ ১১৩৯১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পবিত্র কুরআনে কি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ের উল্লেখ আছে? থাকলে সুরা এবং আয়াত নম্বরসহ দিবেন। ধন্যবাদ।,
২৬ আগস্ট, ২০২৪
মাওনা ইউনিয়ন
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে ফরজকৃত এবাদতগুলোর মধ্যে তওহীদের পরেই নামাজের স্থান।
জীবনে চলার পথে মানুষের জন্য সকল ক্ষেত্রেই আল্লাহ সীমা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। অনুরূপভাবে তার এবাদত বন্দেগী করার জন্যও সময় নির্ধারিত। বিশেষত আল্লাহ্র ফরজ এবাদতগুলো পালন করার জন্য সময় নির্ধারিত, সে সময়ের বাইরে তা করার বিধান রাখা হয়নি। এ ফরজ এবাদতগুলোর মধ্যে প্রধান এবাদত হলো নামাজ, যা পালন করার জন্য ওয়াক্ত বা সময় ধার্য করা হয়েছে।
এ সময় নির্ধারণের উল্লেখ কোরআনে এইভাবে হয়েছে: ‘নিশ্চয়ই নামাজ মু’মিনদের জন্য ফরজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ’। (সূরা. নেসা, আয়াত- ১০৩)।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ‘আল কোরআনুল করীমে’ আয়াতটির অর্থ করা হয়েছে: ‘নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মু’মিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য’।
এ আয়াতে নামাজের সময় নির্ধারিত করা হয়নি, সাধারণভাবে নামাজের সময় নির্ধারিত বলা হয়েছে, কিন্তু অন্যত্র সময়ের বিবরণ বলে দেয়া হয়েছে।
সুরা বাকারার একটি আয়াতে আসর এর নামাজ বলা না হলেও উহাকে ‘ছালাতুল ওস্তা’ বলা হয়েছে। অপর দুই স্থানে নামাজের উল্লেখ করা হয়নি, তবে সময়ের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে, তাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকেই বুঝানো হয়েছে। আয়াতগুলো নিম্নরূপ:
১. আল্লাহর ইরশাদঃ
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
নামাজ কায়েম কর দিনের প্রথম ভাগে ও শেষ ভাগে এবং রাতের কিছু অংশে-(সূরা হুদ আয়াত- ১১৪)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, দিনের দুই দিক অর্থাৎ সূর্যের উদয়-অস্তের পূর্বে ফজর ও আসরের নামাজ অর্থ করা হয়েছে। অথবা একদিকে ফজর এবং অপরদিকে মাগরিবকে রাখা হবে। কেননা উহা একেবারেই অস্তমিত হওয়ার সময়।
কারো কারো মত হচ্ছে, এতে ফজর, জোহর ও আসর- এই তিন নামাজের সময় অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ দিনকে দুই ভাগে বিভক্ত করে প্রথম অংশে ফজরকে এবং দ্বিতীয় অংশে- যা অর্ধদিবস বা মধ্যাহ্ন হতে শুরু হয়ে অস্তমিত হওয়ার মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময়কে বুঝানো হয়েছে জোহর ও আসর এ সময়ের অন্তর্ভুক্ত। আর রাতের কিছু অংশ বলতে এশা অথবা মাগরিব ও এশা উভয়কে বুঝানো হয়েছে।
ইবনে কাসির রহঃ এই সম্ভাবনা ও লিখেছেন যে, দিনের দুইদিক দ্বারা ফজর ও আসর এবং রাতের এক ভাগ দ্বারা তাহাজ্জুদের নামাজ বুঝানো হয়েছে। কেন না ইসলামের প্রথম দিকে একটি নামাজই ফরজ ছিল। পরে তাহাজ্জুদের ফরজ বাতিল হয়ে যায় এবং বাকি দুইটির সাথে তৃতীয়টি বর্ধিত করা হয়। (তফসীরে উসমানী)
তাওযীহুল কুরআনে উল্লেখ হয়েছে, দিনের উভয় প্রান্ত দ্বারা ফজর ও আসরের নামায বােঝানাে হয়েছে। কোনও কোনও মুফাসসির এর দ্বারা ফজর ও মাগরিবের নামায় বুঝেছেন। আর রাতের কিছু অংশে যা আদায় করতে বলা হয়েছে, তা হল মাগরিব, ইশা ও তাহাজ্জুদের নামায।
২- সূরা রূম আয়াত – ১৭
فَسُبْحَانَ اللَّهِ حِينَ تُمْسُونَ وَحِينَ تُصْبِحُونَ
বাংলা ভাবার্থঃ সুতরাং আল্লাহর তাসবীহতে লিপ্ত থাক যখন তােমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও (মাগরিব ও ইশার নামাজ দ্বারা) এবং যখন তােমরা ভােরের সম্মুখীন হও। (ফজর নামাজ দ্বারা)।
এবং আয়াত – ১৮
وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَعَشِيًّا وَحِينَ تُظْهِرُونَ
বাংলা ভাবার্থঃ আসমান ও জমিনের সব প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। আর তাঁর তাসবীহ আদায় করো অপরাহ্নে (আসর নামাজ দ্বারা) ও জোহরের সময়ে।
আল্লাহ তাআলা সুরা রূমের উল্লেখিত দু'টি আয়াতে তাসবিহ বলতে নামাজ পড়াকে বুঝিয়েছেন। এ আয়াতদ্বয়ে যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তাহলো- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ের কথা।
মুফাসসিরগণ বলেন, সকাল দ্বারা ফজরের নামায, সন্ধ্যা দ্বারা মাগরিব ও ইশার নামায, বিকাল দ্বারা আসরের নামায ও জুহর দ্বারা জুহরের নামাযের প্রতি ইশারা পাওয়া যায়।
যেমন, – ১৭নং আয়াতে ( تُمسُون )'তুমসুনা' (সন্ধ্যা) শব্দ দ্বারা মাগরিব ও ইশা, ( تُصبِحُون ) 'তুসবিহুন' (সকাল) শব্দ দ্বারা ফজর নামাজকে বুঝিয়েছেন। আর ১৮নং আয়াতে ( عَشِيًا ) 'আশিয়ান' (বিকাল/অপরাহ্ন) শব্দ দ্বারা আসর নামাজ এবং (تُظهِرون ) 'তুজাহিরুন' (দুপুর) শব্দ দ্বারা জোহর নামাজের সময়ের উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, ইসলামের বিরুদ্ধচারণ, বিকৃতকরণ এবং নানাভাবে ইসলামে সংশয় ও সন্দেহের সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইহুদিদের অপপ্রচারগুলোর মাধ্যমেই ওদের বিকৃত মস্তিষ্কের বিকৃত চিন্তাধারা আধুনিক শিক্ষিত এক শ্রেণীর মুসলমানদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এবং ওরা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোকেও সংশয়যুক্ত করার অসাধু প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছে। ওদের ওইসব অপপ্রচারের মধ্যে ইসলামের পঞ্চ ভিত্তির অন্যতম নামাজ একটি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কথা কোরআনে বলা আছে কি- এগুমরাহ শ্রেণী এমন আজগুবি প্রশ্নও করে থাকে। ওদের ইসলাম সম্পর্কে সামান্যতম জ্ঞান থাকলেও এরূপ বলার সাহস পেত না।
কোরআন শরীফে যে সকল স্থানে নামাজ কায়েম করার কথা বলা হয়েছে এবং সাথে সাথে সেখানে জাকাত প্রদানের কথাও বলা হয়েছে। নামাজের ওয়াক্তের কথাও বলে দেয়া আছে। অন্ধদের তা দৃষ্টি এড়িয়ে গেলেও কোরআনে তা সুস্পষ্টভাবে তা বলে দেয়া হয়েছে।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন যে, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক ফরজের একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন একমাত্র ‘জিকির’ ব্যতীত, সেটার কোনো সময়সীমা রাখেননি বরং এরশাদ করেন, জিকির করো দন্ডায়মান হয়ে, বসে, করট সমূহের ওপর শুয়ে, রাতে হোক কিংবা দিনে, স্থলে হোক কিংবা জলে, সফরে কিংবা ঘরে, সচ্ছলতায় ও অভাবগ্রস্ত অবস্থায়, অসুস্থতায়, গোপনে এবং প্রকাশ্যে।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯০২১৪
রজব শব্দটি মুনসারিফ নাকি গায়রে মুনসারিফ?
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
৮P৩C+GV৭

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার
৯০৩৪৪
‘‘এক বলেই আউট হয়ে যাবে’’ ‘‘নিশ্চিত আজকে ওরা হারবে’’ এধরণের বাক্য বলার দ্বারা কি শিরক হয়?
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
CG৩X+VQ

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
৮১৭৯৯
অমুসলিমের সাথে বর্গা চুক্তি করলে উশর নাকি খারাজ দিবে?
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪
নামবিহীন রাস্তা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে