আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

হিন্দুদের প্রথাগত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন

প্রশ্নঃ ১১২৭৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার বাসার পাশে হিন্দু থাকে।আগে তাদের সাথে আমার পরিবার এর কাছের সম্পর্ক ছিলো।তবে ইসলাম কে ভালো ভাবে জানার পর থেকে তাদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি।ওদের বাসায় ৭ মাস এ গর্ভবতী একজনকে ‘সাদ’ দিবে। আলাদা করে বাবুর্চি দিয়ে রান্না করাবে। মানুষদের দাওয়াত করেছে। আমার পরিবারকেও দিয়েছে। অনেক ভাবে না করেছি কিন্তু তারা মানছে না। এ দিকে আামার বউও ৭ মাসের গর্ভবতী। এখন না গেলে তারাও খুব কষ্ট পাবে বা জোর করে নিয়ে যাবে। এখন ওখানে ওই দাওয়াত টা বা খাবার টা খাওয়া ঠিক বা হালাল হবে?,

১৮ অক্টোবর, ২০২৩

Gaibanda

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


[১]- হিন্দু বা বিধর্মীদের তৈরি হালাল খাবার মুসলমানের জন্য খাওয়া জায়েয। তবে তাদের যবাইকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া হারাম। কেননা,সূরা আনআ’মের ১১৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিধান দিয়েছেন: فَكُلُواْ مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّهِ عَلَيْهِ إِن كُنتُمْ بِآيَاتِهِ مُؤْمِنِينَ ‘অতঃপর যে জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, তা থেকে ভক্ষণ কর যদি তোমরা তাঁর বিধানসমূহে বিশ্বাসী হও।’ সুতরাং তাদের বাড়িতে মুরগী ইত্যাদির গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৭৪)

[২]- অমুসলিমদের সাধারণ দাওয়াত এবং ওই দাওয়াত যার সঙ্গে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িত থাকে–উভয়টি এক নয়। তাদের সাধারণ দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে যদি নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা না থাকে তাহলে অংশগ্রহণ করা জায়েয। আর ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলে অংশগ্রহণ করা না-জায়েয।
পক্ষান্তরে ওই দাওয়াত যে জাতীয় দাওয়াতের সঙ্গে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি জড়িত থাকে, যেহেতু এ জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কাই প্রবল থাকে সেহেতু এজাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা সর্বাবস্থায় হারাম।

ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেন,

ولا يجوز للمسلمين حضور أعياد المشركين باتفاق أهل العلم الذين هم أهله . وقد صرح به الفقهاء من أتباع المذاهب الأربعة في كتبهم . . . وروى البيهقي بإسناد صحيح عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه أنه قال : (لا تدخلوا على المشركين في كنائسهم يوم عيدهم فإن السخطة تنزل عليهم) . وقال عمر أيضاً : (اجتنبوا أعداء الله في أعيادهم . )

যারা বাস্তবেই আলেম তাঁরা সকলেই এব্যাপারে একমত যে, মুসলিমদের জন্য মুশরিকদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা মোটেই জায়েয নেই। এবিষয়ে চার মাযহাবের ফকিহগণই তাঁদের কিতাবাদিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ইমাম বাইহাকি রহ. সহিহ সনদে উমর রাযি. বর্ণনা করেছেন যে, ‘মুশরিকদের অনুষ্ঠানের দিন তাদের উপাসনালয়গুলোতে প্রবেশ করো না। কেননা, ওই সময় তাদের উপর আল্লাহর গজব নাযিল হয়।’ উমর রাযি. আরো বলেন, আল্লাহর দুশমনদের থেকে তাদের অনুষ্ঠানের দিন দূরে থাকবে। (আহকামুযযিম্মাহ ১/৭২৩)

সুতরাং একজন মুসলিম হিসেবে উচিত, অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পূজার অনুষ্ঠানসহ যেকোনো প্রথাগত অনুষ্ঠানে কোনোভাবেই অংশগ্রহণ না করা। তারা কষ্ট পেলে ভালোভাবে তাদের বুঝিয়ে দিন। কিন্তু যেখানে গেলে আল্লাহ নারাজ হবে সেখানে যাওয়া কোনো মুসলমানের জন্য জায়েজ নাই।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মাহমুদুল হাসান

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৯০৪৪৭

কবরস্থানে গিয়েই কি কবর যিয়ারত করতে হবে?


২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সিলেট

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৮১৬৪

প্রাইভেট মাদরাসায় জুমার জামাত


৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৮১৭৯৯

অমুসলিমের সাথে বর্গা চুক্তি করলে উশর নাকি খারাজ দিবে?


২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

নামবিহীন রাস্তা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৭৭৭৮৭

জিমেইল ফেসবুক আইডি বিক্রি প্রসঙ্গ


২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

গাজীপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy