আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নামাজের সিজদায় কি কি দোয়া করা যাবে?

প্রশ্নঃ ১১১৩৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সালাতে সিজদায় কি কি দোয়া করা যাবে?আমি অনেক সময় সুন্নত নামাজে সিজদার তাসবীহ পাঠের পর দোয়ায়ে ইউনুস বা 'রব্বানা আ'তীনা...' এটা পড়ি।এটার দরুন কি আমার নামাজ ভেঙ্গে যাবে?সিজদাহ্ তে দোয়া গুলি জানালে খুবই উপকৃত হবো ইনশাআল্লাহ।,

৭ নভেম্বর, ২০২৩

যশোর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ফরজ নামাজের সেজদায় গিয়ে তাসবীহ পড়া সুন্নত। নির্ধারিত দোয়া ও তাসবীহ পড়াই বিধেয়। ইচ্ছামত দোয়া করা ফরজ নামাজে নিষিদ্ধ। সুন্নাহ অনুযায়ী মুজতাহিদগণ যেভাবে নামাজ সাজিয়েছেন, তাতে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই। নফল নামাজে বিশেষ করে শেষ রাতের তাহাজ্জুদে অনেক দোয়া দুরুদ সেজদারত অবস্থায়ও করা যায়। হাদীসে যেসব বর্ণনা আছে, তা খুব বড় আলেম ও মুহাক্কেক ব্যক্তিদের কাজ। সাধারণ মানুষের প্রচলিত পদ্ধতিতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। তা না হলে মুস্তাহাব বা জায়েজ আমল করতে গিয়ে, তারা নিয়ম ভেঙ্গে ফেলবেন। তাতে নামাজ নষ্ট হওয়ারও আশংকা থেকে যায়।

( ০১)
আপনি নামাযের বাহিরে বাংলায় দু'আ করবেন, অথবা আপনি আপনার অন্তরে সেই বিশেষ বিষয়কে উপস্থিত রেখে মুজমাল দু'আ যাতে দুনিয়া আখেরাতের সকল প্রকার কল্যাণ রয়েছে,যেমন "রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ" কুরআন-হাদীসে বর্ণিত এমন দু'আ করতে পারবেন।

বান্দার যে জিনিসটি রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার কাছে পছন্দনীয় তা হচ্ছে সিজদা। তাই বান্দা চাইলে যেকোনো সময় আল্লাহর দরবারে সেজদায় লুটিয়ে পরে নিজের কামনা বাসনা গুলো তার রবের কাছে পেশ করতে পারে ।


তবে, নামাযের সেজদায় শুধুমাত্র কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দু'আ গুলোই করা যাবে।
সেজদায় গিয়ে سبحان ربي الأعلى
ছাড়াও অন্যান্য দোয়া পড়া যাবে। সমস্যা নেই। কিন্তু দুনিয়াবি দোয়া বা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দুআ করা যাবে না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদায় অনেক দোয়া পাঠ করতেনঃ

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ,
.
(০২)
শরীয়তের বিধান হলো দুনিয়াবি দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়।

দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কাছে থেকেও পাওয়া যায়,যেমন হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দাও,বিবাহ দাও,এক লক্ষ টাকা দাও ইত্যাদি।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»

নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭]

قال العلامۃ التہانوي تحتہ: دل الحدیث علی أنہ لا یجوز في الصلاۃ شيء من کلام الناس، فتفرع علیہ أن الدعاء أیضاً إذا کان یشبہ کلامہم لا یجوز، وہو قول أبي حنیفۃ وأصحابہ وطاؤس وإبراہیم النخعي۔ (کذا في فتح الباري ۲؍۲۶۶، إعلاء السنن ۳؍۱۷۲ رقم: ۸۹۳ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
থানবি রহঃ বলেন উক্ত হাদীস দালালত করে যে নামাজের ভিতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই।সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,সেটি বলাও জায়েজ নেই।

ویفسد ھا التکلم الخ، عمدہ وسہوہ قبل قعودہ قدر التشہد سیان، وسواء کان ناسیا أو نائماً أو جاھلا أو مخطئاً أو مکرھاً ھو المختار۔ (درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۰ زکریا، مراقي الفلاح مع الطحطاوي ۱۷۵، بدائع الصنائع ۱؍۵۱۸، شرح الوقایۃ ۱؍۱۶۳، حاشیۃ الطحطاوي ۳۲۱)
সারমর্মঃ ইচ্ছাপূর্বক হোক,বা অনিচ্ছায় হোক,কথা বললে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

والدعاء بما یشبہ کلامنا نحو: اللّٰھم ألبسني ثوب کذا أو أطعمني کذا أو أقض دیني أو أرزقني فلانۃ علی الصحیح؛ لأنہ یمکن تحصیلہ من العباد۔ (مراقي الفلاح)
দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,যেমন হে আল্লাহ আমাকে উমুক কাপড় দাও,ঐ খাবার দাও,ওই মহিলার সাথে বিবাহ দাও,আমার করজ শোধ করে দাও ইত্যাদি।

وفي الطحطاوي: وذکر في البحر عن المرغیناني ضابطاً: فقال الحاصل أنہ إذا دعا في الصلاۃ بما جاء عن القراٰن أو في الماثور لا تفسد صلا تہ، وإن لم یکن في القراٰن أو الماثور فإن استحال طلبہ من العباد لا یفسد وإلاَّ یفسد۔ (طحطاوي ۱۷۶، درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۷ زکریا، شرح الوقایۃ ۱؍۱۶۴، حاشیۃ الطحطاوي ۳۲۱)
সারমর্মঃ কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া হলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া না হলে যদি সেটি "মানুষের কাছ থেকে চাওয়া সম্ভব হয়" জাতীয় দোয়া হয়, তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।



করআনে বর্ণিত কিছু দোয়া ,

[ ১ ] رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও।১

[২] رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِيْنَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْراً كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلا تُحَمِّلْنَا مَا لا طَاقَةَ لَنَا بِهৃ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنْتَ مَوْلانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না।

হে আমাদের রব! পূর্ববর্তীদের উপর যে গুরুদায়িত্ব তুমি অর্পণ করেছিলে সে রকম কোন কঠিন কাজ আমাদেরকে দিও না।

হে আমাদের রব! যে কাজ বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই এমন কাজের ভারও তুমি আমাদের দিও না। তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের ক্ষমা কর। আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি আমাদের মাওলা। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।[৬]


[৩] رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ

অর্থঃ হে আমাদের রব! যেহেতু তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করেছ, কাজেই এরপর থেকে তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করিও না। তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। তুমিতো মহাদাতা।[৭]


[৪] رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ

অর্থঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! তোমার কাছ থেকে আমাকে তুমি উত্তম সন্তান-সন্ততি দান কর। নিশ্চয়ই তুমিতো মানুষের ডাক শোনো।[৮]


[৫] رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দাও। যেসব কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন হয়ে গেছে সেগুলোও তুমি ক্ষমা কর। আর (সৎপথে) তুমি আমাদের কদমকে অটল রেখো এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।[৯]


[৬] رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَلاَ تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لاَ تُخْلِفُ الْمِيعَادَ

অর্থঃ হে রব! নবী-রাসূলদের মাধ্যমে তুমি যে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছো তা তুমি আমাদেরকে দিয়ে দিও। আর কিয়ামতের দিন আমাদেরকে তুমি অপমানিত করিও না। তুমিতো ওয়াদার বরখেলাফ কর না।[১০]


[৭] رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنْزَلْتَ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُولَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! তুমি যা কিছু নাযিল করেছো, তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আমরা রাসূলের কথাও মেনে নিয়েছি। কাজেই সত্য স্বীকারকারীদের দলে আমাদের নাম লিখিয়ে দাও।[১১]


[৮] رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের উপর যুলম করেছি। এখন তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আর আমাদের প্রতি রহম না কর তাহলে নিশ্চিতই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।[১২]


[৯] رَبَّنَا لا تَجْعَلْنَا مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

অর্থঃ হে রব! আমাদেরকে জালিম সম্প্রদায়ের সাথী করিও না।[১৩]


[১০] رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاূءِ

অর্থঃ হে আমার মালিক! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানাও এবং আমার ছেলে-মেয়েদেরকেও নামাযী বানিয়ে দাও। হে আমার মালিক! আমার দোয়া তুমি কবুল কর।[১৪]


[১১] رَبَّنَا اغْفِرْلِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ

অর্থঃ হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যেদিন চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশ হবে সেদিন তুমি আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সকল ঈমানদারদেরকে তুমি ক্ষমা করে দিও।[১৫]


[১২] رَبَّنَا آتِنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَداً

অর্থঃ হে আমাদের রব! তোমার অপার অসীম করুণা থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। আমাদের কাজগুলোকে সঠিক ও সহজ করে দাও।[১৬]


[১৩] قَالَ رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي – وَيَسِّرْ لِيْ أَمْرِي -وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِنْ لِسَانِيْ – يَفْقَهُوا قَوْلِيْ

অর্থঃ হে আমার রব! আমার বক্ষকে তুমি প্রশস্ত করে দাও। আমার কাজগুলো সহজ করে দাও। জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও, যাতে লোকেরা আমার কথা সহজেই বুঝতে পারে। [১৭]


[১৪] رَبِّ زِدْنِي عِلْماً

অর্থঃ হে রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও।[১৮]


[১৫] رَبِّ لاَ تَذَرْنِيْ فَرْداً وَأَنْتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ

অর্থঃ হে রব! আমাকে তুমি নিঃসন্তান অবস্থায় রেখো না। তুমিতো সর্বোত্তম মালিকানার অধিকারী।[১৯]


[১৬] رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ – وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ

অর্থঃ হে রব! শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। আমি এ থেকেও তোমার নিকট পানাহ চাই যে, শয়তান যেন আমার ধারে কাছেও ঘেষতে না পারে।[২০]


[১৭] رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَاماً ু إِنَّهَا سَاءَتْ مُسْتَقَرّاً وَّمُقَاماً

অর্থঃ হে আমাদের রব! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচিয়ে দিও। এর আযাব তো বড়ই সর্বনাশা। আশ্রয় ও বাস্থান হিসেবে এটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।[২১]


[১৮] رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَّاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَاماً

অর্থঃ হে আমাদের রব! তুমি আমাদেরকে এমন স্ত্রী-সন্তান দান কর যাদের দর্শনে আমাদের চক্ষুশীতল হয়ে যাবে। তুমি আমাদেরকে পরহেযগার লোকদের ইমাম (অভিভাবক) বানিয়ে দাও।[২২]


[১৯] رَبِّ هَبْ لِيْ حُكْماً وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِيْنَ – وَاجْعَلْ لِيْ لِسَانَ صِدْقٍ فِي الآخِرِينَ – وَاجْعَلْنِيْ مِنْ وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ – وَلا تُخْزِنِيْ يَوْمَ يُبْعَثُوْنَ

অর্থঃ হে রব! আমাকে জ্ঞান-বুদ্ধি দান কর এবং আমাকে নেককার লোকদের সান্নিধ্যে রেখো।


হাদিসে বর্ণিত কিছু দোয়া ,

- اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ- اَللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا - اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجَابُ لَهَا

। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, বার্ধক্য ও কবরের ‘আযাব থেকে।

হে আল্লাহ! তুমি আমার মনে তাকওয়ার অনুভূতি দাও, আমার মনকে পবিত্র কর, তুমি-ই তো আত্মার পবিত্রতা দানকারী। তুমিই তো হৃদয়ের মালিক, অভিভাবক ও বন্ধু।

হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই এমন ‘ইল্ম থেকে যে ‘ইল্ম কোন উপকার দেয় না, এমন হৃদয় থেকে যে হৃদয় বিনম্র হয় না, এমন আত্মা থেকে যে আত্মা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন দোয়া থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই যে দোয়া কবূল হয় না।[6]


اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ


হে আল্লাহ! তোমার দেয়া নেয়ামাত চলে যাওয়া ও অসুস্থতার পরিবর্তন হওয়া থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই তোমার পক্ষ থেকে আকষ্মিক গজব আসা ও তোমার সকল অসন্তোষ থেকে।[8]

- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَمِنْ شَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ

হে আল্লাহ! আমি আমার অতীতের কৃতকর্মের অনিষ্টতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যে কাজ আমি করিনি তার অনিষ্টতা থেকেও আশ্রয় চাই।

- اَللَّهُمَّ إِِنِّيْ أِعُوْذُبِكَ أِنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أِعْلَمُ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ

হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর যদি অজান্তে শিক হয়ে থাকে তবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو - فَلاَ تَكِلْنِيْ إِلٰى نَفْسِيْ طَرْفَةَ عَيْنٍ - وَأَصْلِحْ لِيْ شَأْنِيْ كُلَّه - لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ

হে আল্লাহ! তোমার রহমত প্রত্যাশা করছি। সুতরাং তুমি আমার নিজের উপর তাৎক্ষণিকভাবে কোন দায়িত্ব অর্পণ করে দিও না। আর আমার সব কিছু তুমি সহীহ শুদ্ধ করে দাও। তুমি ছাড়া আর কোন মা‘বুদ নেই।

اللَّهُمَّ اجْعَلِ الْقُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي وَنُورَ صَدْرِيْ وَجِلاَءَ حُزْنِيْ وَذَهَابَ هَمِّيْ

হে আল্লাহ! কুরআনকে তুমি আমার হৃদয়ের বসন্তকাল বানিয়ে দাও, বানিয়ে দাও আমার বুকের নূর এবং কুরআনকে আমার দুঃখ ও দুঃশ্চিন্তা দূর করার মাধ্যম বানিয়ে দাও।

- اللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوبِ صَرِّفْ قُلُوبَنَا عَلٰى طَاعَتِكَ

হে অন্তরের পরিবর্তন সাধনকারী রব! আমাদের অন্তরকে তোমার অনুগত্যের দিকে পরিবর্তন করে দাও।

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ

হে অন্তরের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তুমি তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ।[14]

- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ

হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা ও সুস্থতা কামনা করছি।[15]

- اللَّهُمَّ أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا فِي الأُمُورِ كُلِّهَا وَأَجِرْنَا مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الآخِرَةِ

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সকল কাজের পরিণতি সুন্দর ও উত্তম করে দাও এবং আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা, অপমান এবং আখেরাতের শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে দিও।

- رَبِّ أَعِنِّي وَلاَ تُعِنْ عَلَيَّ - وَانْصُرْنِي وَلاَ تَنْصُرْ عَلَيَّ - وَامْكُرْ لِي وَلاَ تَمْكُرْ عَلَيَّ وَاهْدِنِي وَيَسِّرْ هُدَايَ إِلَيَّ - وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ بَغَى عَلَيَّ - اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي لَكَ شَاكِرًا لَكَ ذَاكِرًا لَكَ رَاهِبًا لَكَ مِطْوَاعًا إِلَيْكَ مُخْبِتًا أَوْ مُنِيبًا - رَبِّ تَقَبَّلْ تَوْبَتِي - وَاغْسِلْ حَوْبَتِي - وَأَجِبْ دَعْوَتِي - وَثَبِّتْ حُجَّتِي - وَاهْدِ قَلْبِي - وَسَدِّدْ لِسَانِي - وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِي

হে আমার রব! তুমি আমাকে সাহায্য কর, আমার বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করো না। আমাকে সহায়তা কর, আমার বিপক্ষে কাউকে সহায়তা করো না। আমাকে কৌশল শিখিয়ে দাও, আমার বিপক্ষে কাউকে চক্রান্ত করতে দিও না। আমাকে হেদায়ত দাও, হেদায়তের পথ আমার জন্য সহজ করে দাও। আমার বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করে, তার বিপক্ষে আমাকে সাহায্য কর। আমাকে তোমার অধিক শুকরগুজার, যিকরকারী বান্দা বানিয়ে দাও। তাওফিক দাও যাতে তোমাকে অধিক ভয় করি। তোমার আনুগত্য করি। তাওফিক দাও যাতে আমি তোমার প্রতি বিনয়ী হই, তাওবাকারী প্রত্যাবর্তনশীল বান্দা হই।

হে আমার রব! তুমি আমার তাওবা কবূল কর। আমার অপরাধটুকু ধুয়ে ফেল। আমার দু‘আ কবূল কর। আমার যুক্তিগুলো অকাট্য করে দাও। আর অন্তরকে হেদায়েতের পথে পরিচালিত কর, আমার ভাষাকে সঠিক করে দাও এবং আমার কলব থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দাও।

- اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ مِنْهُ نَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ -صلى الله عليه وسلم- وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا اسْتَعَاذَ مِنْهُ نَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ -صلى الله عليه وسلم- وَأَنْتَ الْمُسْتَعَانُ وَعَلَيْكَ الْبَلاَغُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ

হে আল্লাহ! তোমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার কাছে যেসব কল্যাণকর জিনিস চেয়েছিলেন সেগুলো আমাকেও তুমি দাও। আর তোমার নিকট ঐ অমঙ্গল-অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই, যে অমঙ্গল থেকে তোমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্রয় চেয়েছিলেন। সাহায্য তো শুধু তোমার কাছে চাইতে হয় এবং সবকিছু পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্বও তোমার। তুমি আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন নেক কাজ করা কিংবা গুনাহ করার কোন শক্তি নেই।

- اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِيْ وَمِنْ شَرِّ بَصَرِيْ وَمِنْ شَرِّ لِسَانِيْ وَمِنْ شَرِّ قَلْبِيْ وَمِنْ شَرِّ مَنِيِّيْ

হে আল্লাহ! আমার শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তি আমার জিহবা ও অন্তর এবং আমার ভাগ্য এসব অঙ্গের অনিষ্টতা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই।[19]

- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئْ الأَسْقَامِ

। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট শ্বেতরোগ পাগলামি ও কুষ্ঠ রোগসহ সকল জটিল রোগ থেকে আশ্রয় চাই।

-اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ

। হে আল্লাহ! তোমার নিকট আমি অসৎ চরিত্র, অপকর্ম এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে আশ্রয় চাই।[21]

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ

হে আল্লাহ! তুমিতো ক্ষমার ভান্ডার, ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ কর। কাজেই আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।[22]

-اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ - وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي - وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً فِي قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ - وَأَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ - وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُنِي إِلَى حُبِّكَ

। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে নেক কাজ করা, অসৎ কাজ পরিত্যাগ এবং মিসকীনদের ভালবাসার গুণাবলী দাও। আরো প্রর্থানা করিছ যে, তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর। আর যখন তুমি কোন জাতিকে কোন প্রকার ফিতনায় ফেলার ইচ্ছা কর তখন আমাকে ফিতনামুক্ত মৃত্যু দান কর। তোমার ভালবাসা আমি চাই, যারা তোমাকে ভালবাসে তাদের ভালবাসাও চাই এবং এমন আমলের ভালবাসা আমি চাই, যে আমল আমাকে তোমার ভালবাসার নিকট পৌঁছে দেবে।[23]

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৭৫৭১

নবীজির রওজায় আমলের সাওয়াব পাঠানো কি জায়েজ?


২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

Gabtali - Adur Bazar Rd

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

৩৯৯৫০

মাগরিবের আগে নফল পড়ার বিধান


৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মহারাষ্ট্র ৪১০২১৮

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৪১০০০

১২ ই রবিউল আউয়ালে বিশেষ রোযা বা আমল আছে কি?


৬ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

৪৭৭৯৯

ইসলাহের ঠিকানা


২২ জানুয়ারী, ২০২৪

Dhaka

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy