দাড়িয়ে খাওয়া ও পান করা কি শয়তানের কাজ?
প্রশ্নঃ ১০৮৫২৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, জনাব মুফতি সাহেব আমরা জানি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন দাঁড়িয়ে খাওয়া ও পান করা শয়তানের কাজ। তাহলে মুফতি সাহেব যারা পান, বাদাম, বুট ইত্যাদি খাবারগুলো দাঁড়িয়ে বা হেঁটে হেঁটে খায় । শরিয়তের দৃষ্টিতে এর সমাধান কি এভাবে খেতে পারবে কি পারবেনা। দলিলসহ জানাবেন ইনশাআল্লাহ,
১৪ জুলাই, ২০২৫
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই! এক্ষেত্রে দু-ধরণের বর্ণনা রয়েছে। কোন কোন হাদীস দ্বারা বুঝা যায় দাড়িয়ে খাওয়া ও পান করা নিষেধ। কোন কোন বর্ণনা দ্বারা বুঝা যায় দাড়িয়ে খাওয়া ও পান করা জায়েজ।
এক্ষেত্রে উভয় হাদীসকে সামনে রেখে সমাধান হবে,
খাওয়া-দাওয়ার আদবের মধ্যে একটি আদব হলো — বসে খাওয়া ও পান করা।
যেমন: হযরত রাসূলুল্লাহ ﷺ, সাহাবায়ে কিরাম (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুম) এবং উম্মতের বড় বড় আউলিয়া ও নেককার ব্যক্তিদের সাধারণ অভ্যাস ছিল বসে থেকে দস্তরখান বিছিয়ে, তার উপর খাবার রেখে খাওয়া।
সাধারণ পরিস্থিতিতে হাঁটতে চলতে খাওয়া-পান করা মাকরুহে তানযীহি।
তবে যদি কোনো অক্ষমতা বা বসার জায়গা না থাকে, তাহলে দাঁড়িয়ে খাওয়ার অনুমতি রয়েছে।
একইভাবে, যদি কেউ মূলত বসে থেকেই খাচ্ছেন, কিন্তু এক-আধ লুকমা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চেখে ফেলেন বা খেয়ে ফেলেন, অথবা এমন কিছু ফলমূল, চকলেট ইত্যাদি, যেগুলো মৌজ-মজার জন্য সামান্য খাওয়া হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে চলতে ফিরতে খাওয়ারও রেওয়ায়েত (অনুমতি) হাদীসে পাওয়া যায়।
তবে এগুলোর মধ্যে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা, বারবার করা তা মর্যাদা, ভদ্রতা ও ইসলামি আদবের খেলাফ।
দাঁড়িয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং এমন অনুষ্ঠান করা যেখানে শুধুই দাঁড়িয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে, এটি ইসলামী শালীনতা ও আদবের বিরোধী এবং মাকরুহ।
তবে যদি কখনো হঠাৎ এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় বা কোনো নির্দিষ্ট অসুবিধা থাকে, তাহলে দাঁড়িয়ে খাওয়ায় গুনাহ হবে না।
এমন অনুষ্ঠানে যারা প্রধান আয়োজক বা দায়ী ব্যক্তি না, এবং এই পদ্ধতিতে খুশি হন না, বরং দিল থেকে অপছন্দ করেন এবং ইসলামী আদবের ধারক-বাহক হিসেবে গণ্য নন, তারা দাঁড়িয়ে খেলে — তাদের জন্য এটা মাকরুহ হবে না।
তবে কেউ দাড়িয়ে পান করলে এটা শয়তানের কাজ এভাবে দৃঢ়তার সাথে বলার অবকাশ নেই।
শরঈ দলীলঃ
کما قال الملا علي القاريؒ: والصواب فیہا أن النہي محمول علی کراہۃ النزیہیۃ، وأما شربہ قائمًا فبیان للجواز۔ (مرقاۃ المفاتیح ۸؍۲۱۷ المکتبۃ الأشرفیۃ دیوبند)
مسلم شریف :
"عن النبي صلی الله علیه وسلم نهى أن یشرب الرجل قائمًا. قال قتادة: فقلنا: فالأکل؟ فقال: ذاك أشر وأخبث". (کتاب الأشربة في باب کراهية الشرب قائمًا) ج۲ص۱۷۳)
شرح النووی علی مسلم :
"أن النهي فيها محمول علی کراهة التنزيه، وأما شربه صلی الله عليه وآله وسلم قائماً فبيان للجواز فلا اشکال ولا تعارض، وهذا الذی ذکرناه يتعين المصير إليه" . (شرح النووي علی صحيح مسلم، 13 / 195، ط: دار احياء التراث العربي بيروت)
فتاوی ہندیہ :
"لا بأس بالشرب قائماً، ولايشرب ماشیاً، ورخص للمسافرين، ولايشرب بنفس واحد" . (٥/ ٣٤١، ط: دار الفكر)
وما أن یقال: إن حدیث ابن عمر محمول علی أکلہ لقمۃ أو لقمتین، وأکل أشیاء لا یہتم لہا، وحدیث أنس محمول علی الطعام الذي یؤکل علی المائدۃ، وہذا عندي أوجہ۔ (تکملۃ فتح الملہم ۴؍۱۲، صحیح ابن حبان ۷؍۳۳۲)
وقد صح عنہ علیہ السلام الشرب قائمًا في غیر ما تقدم أیضًا، وکذا الأکل۔ (کبیري ص: ۹۳۶)
فالسنۃ أن یقعد جاثیًا علی رکبتیہ وظہور قدمیہ، أو ینصب رجلہ الیمنی ویجلس علی الیسریٰ۔ قال ابن القیم: إنہ کان یقعد للأکل متورکًا علی رکبتیہ یضع بطن قدمیہ الیسریٰ علی ظہر الیمنیٰ تواضعًا للّٰہ وأدبًا منہ، وہٰذہ الہیئۃ أنفع الہیئات للأکل۔ (جمع الوسائل ۱؍۱۹۱)
فالمستحب في صفۃ الجلوس للأکل أن یکون جاثیًا علی رکبتیہ، وظہور قدیمہ، أو ینصب الرجل الیمنیٰ ویجلس علی الیسریٰ۔ (فتح الباري ۹؍۵۴۲ بیروت)
فمعنیٰ مقع من الجوع محتبیًا مستندًا لما ورائہ من الضعف الحاصل بسبب الجوع الخ۔ (جمع الوسائل ۱؍۱۹۲، تکملۃ فتح الملہم ۴؍۴۸)
ویذکر عنہ أنہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم کان یجلس للأکل متورکًا علی رکبتیہ الخ۔ (زاد المعاد ۴؍۲۲۱ بیروت)
قال ابن القیم: ویذکر عنہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم أنہ کان یجلس للأکل متورکًا علی رکبتیہ الخ۔ (مرقاۃ المفاتیح ۸؍۱۶۴)
عن أنس رضي اللّٰہ عنہ قال: رأیت النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم مُقعِیًا یأکل تمرًا۔ (صحیح مسلم، کتاب الأشربۃ / باب استحباب تواضع الآکل وصفۃ قعودہ ۲؍۱۸۰ رقم: ۲۰۴۴ بیت الأفکار الدولیۃ)
আরো বিস্তারিত জানুন:
https://muslimbangla.com/hadith/28715
والله اعلم بالصواب
মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা
লেখক ও গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
২৮০৭৩
চাচা-চাচিকে আব্বু-আম্মু বলে ডাকা যাবে কি?
১৭ জানুয়ারী, ২০২৩
Assam 781316

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
২৬৩৩০
যেভাবে দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন
৭ ডিসেম্বর, ২০২২
নামবিহীন রাস্তা

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
২৫২৪৭
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লজ্জাস্থান লেহন করার বিধান
১৫ নভেম্বর, ২০২২
সাভার

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
২৫০৪৯
সহবাসের ইসলামি আদবসমূহ
১৩ নভেম্বর, ২০২২
৫১৮ Old Choa Chu Kang Rd

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে