তালাক দেওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি
প্রশ্নঃ ১০৬৭১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, #_আল্লাহ_তাআলা পবিত্র কুরআনে বলছেন যে. স্ত্রী যদি খারাপ হয় তাহলে তাকে চার সিস্টেমে ভালো করার চেষ্টা করো ।#১তাকে ওয়াজ করো বা বুঝাও #২বিছানা আলাদা করে দাও#৩হালকা কিছু মারধর করো#৪ময়মুরুব্বি নিয়ে বসে সমাধান করোএরপরেও যদি ঠিক না হয় ভালো না হয় তাহলে তাকে তালাক দিয়ে দাও #_আল_কুরআনএটা কি সঠিকএই চারটা পথ অবলম্বন করার পর ঠিক না হলে তালাক দিয়ে দেওয়া উচিত নাকি অন্য কিছু করতে হবে ?,
৭ নভেম্বর, ২০২৩
কমলনগর
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
তালাক হলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
যদি পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছে যায় যে মীমাংসার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তখন ইসলামী শরিয়ত স্বামীকে তালাক দেওয়ার এখতিয়ার দিয়েছে। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে তালাক দেওয়া অত্যন্ত অপছন্দনীয় ও ঘৃণিত কাজ। হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে বৈধ কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ হলো তালাক। ’ (আবু দাউদ : হাদিস : ২১৭৮)
এর পরও তালাক দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা না থাকলে ইসলামী শরিয়ত সমর্থিত পদ্ধতি অনুসরণ করে তালাক দেবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করার অনেক সুফল রয়েছে।
তালাক দেওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি
****************************
এক. কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা এবং সাহাবা-তাবেঈনের কর্মপন্থা থেকে প্রমাণিত যে তালাক দেওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো, স্ত্রী যখন হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) থেকে পবিত্র হবে, তখন স্বামী তার সঙ্গে সহবাস না করে সুস্পষ্ট শব্দে তালাক দেবে। হায়েজ অবস্থায় তালাক দেওয়া এ জন্যই নিষিদ্ধ, যাতে তার উক্ত দুঃসময়ের কারণে তালাক সংঘটিত না হয়; বরং ভালো সময়ে বুঝে-শুনে তালাক সংঘটিত হয়। (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা : ২/১৩৯)
দুই. স্বামী সুস্পষ্ট শব্দে এক তালাক দেবে। এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে ইদ্দত চলা অবস্থায় ফিরিয়ে নেয় তাহলে ভালো। পুনরায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কায়েম হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহের প্রয়োজন হবে না। আর যদি ইদ্দত চলাকালে স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেয়, তাহলে ইদ্দত (তিন ঋতুস্রাব বা তিন মাস) শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্ত্রী স্বামী থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, তালাকের পরে উভয়েই অনুতপ্ত হয় এবং বৈবাহিক সম্পর্ক পুনর্বহাল করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। যদি ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী এক তালাক দেওয়া হয়, তাহলে এ আশা পূরণের সুযোগ থাকে এবং তারা পুনরায় বৈবাহিক জীবন শুরু করতে পারে। কিন্তু স্বামী একসঙ্গে তিন তালাক দিলে ইদ্দত চলাকালেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। ইদ্দতের পরেও নতুনভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অবকাশ থাকে না। তারা একে অন্যের জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়। এমতাবস্থায় অনুতপ্ত হওয়া এবং আপসের জন্য আগ্রহী হলেও তা কোনো কাজে আসে না।
তিন. যদি তারা চায় যে আর কোনো দিন তারা একে অন্যের সংসারে ফিরে আসবে না, সে ক্ষেত্রেও ইসলাম একসঙ্গে তিন তালাক দিতে নিষেধ করেছে। তাই হায়েজের পর প্রত্যেক পবিত্রতার সময় এক তালাক করে তিন তালাক দেবে। এভাবে তিন তালাকের মাধ্যমে তারা সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে। এ পদ্ধতিতে তালাক দিলে তালাক-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবে চিন্তাভাবনা করার সুযোগ পাওয়া যায়। ধীরস্থিরভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। তাড়াহুড়া করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। পক্ষান্তরে একসঙ্গে তিন তালাক দিলে এই অবকাশগুলো থাকে না এবং তা কোনো সুফলও বয়ে আনে না; বরং স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।
চার. ইসলামে তালাক দেওয়ার অধিকার কেবল স্বামীকেই দেওয়া হয়েছে, স্ত্রীর হাতে তা দেওয়া হয়নি। কেননা নারীদের স্বভাবে সাধারণত তাড়াহুড়ো করার প্রবণতাটা বেশি। তাই তাদের তালাকের ক্ষমতায় দিলে ছোটখাটো বিষয়েও তাড়াহুড়ো করে তালাক দিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা বেশি। সুতরাং অধিক পরিমাণে বিবাহবিচ্ছেদ রোধেই ইসলাম নারীদের তালাকের ক্ষমতা দেয়নি।
পাঁচ. তবে ইসলামে নারীদের সম্পূর্ণ আটক করে রাখতেও বলা হয়নি; বরং তারাও প্রয়োজনে যথাযথ নিয়মে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারবে। এ জন্য তাদের নির্দিষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যথা—ক. বিবাহের আগেই স্ত্রী এ শর্ত দিতে পারবে যে আমাকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিতে হবে, তখন স্বামী অধিকার দিলে স্ত্রী প্রয়োজনে সে অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
খ. যদি বিবাহের সময় শর্ত না-ও দিয়ে থাকে, তার পরও স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে তালাক নিতে পারবে।
গ. আর যদি তা-ও না করে, তবুও স্বামী নপুংসক হলে, পাগল, অস্বাভাবিক রাগসম্পন্ন হলে বা নিখোঁজ হয়ে গেলে অথবা যেকোনো কঠিন সমস্যায় পতিত হলে স্ত্রী বিচারকের মাধ্যমে নিজেই তালাক নিয়ে নিতে পারবে।
(সংগৃহিত)
লেখক : মুহাদ্দিস ও ফতোয়া গবেষক
والله اعلم بالصواب
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯৭৩৬৫
কাবিন নামার ১৮ ও ১৯ ধারা জানা অজানা কিছু বিষয়
২২ মার্চ, ২০২৫
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে