আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মীকাতের পরিচয়

প্রশ্নঃ ১০০৯৬৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মীকাতের পরিচয় কি? এবং মীকাত কত প্রকার,

২৭ এপ্রিল, ২০২৫

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মীকাত এর আভিধানিক অর্থ হলো- নির্দিষ্ট সময় বা নির্দিষ্ট জায়গা।
হজ্বের মধ্যে মীকাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ঐ জায়গা যা ইহরাম বাঁধা ছাড়া অতিক্রম করা জায়েয নাই। আর এই মীকাত শুধুমাত্র আফাকী তথা মক্কার বাইরে যারা অবস্থান করে তাদের জন্য। মক্কায় যারা অবস্থান করে তাদের জন্য মীকাত নেই। তারা নিজেদের ঘর থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করতে যাবে। তবে মক্কাবাসীদের জন্য উমরার মধ্যে সামান্য ভিন্নতা রয়েছে। আর তা হলো- মক্কাবাসীরা উমরার জন্য ইহরাম বাঁধবে হিল(১) (মক্কার সীমানার বাহির) থেকে। কেননা হজ্বের মূল উদ্দেশ্যের একটি হলো সফর করা। আর উমরার মধ্যে সফর পাওয়া যায় না। তাই মক্কাবাসীরা হিল এ এসে ইহরাম বাঁধবে, যাতে করে সফর পাওয়া যায়। তবে হজ্বের মধ্যে যেহেতু সাফা-মারওয়া, মিনা, মুজদালিফা, আরাফার সফর পাওয়া যায়, তাই হজ্বের মধ্যে মক্কাবাসীদের জন্য আলাদা কোন সফর লাগে না।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে মোট ৫টি মীকাত নির্ধারণ করেছেন। সেগুলো হলো-
১. যুলহুলাইফা: বর্তমান নাম ‘আবয়ারে আলী’। এই জায়গাটা মদিনা থেকে মক্কার পথে ৬/৭ মাইল পরে অবস্থিত। কাবা শরীফ থেকে ৪১০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান।
এটি মদিনা বা উত্তর দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য। এখানে ‘মসজিদুল মীকাত’ নামে একটি শানদার মসজিদ আছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বিদায় হজ্বের জন্য এখান থেকে ইহরাম বেঁধেছিলেন।
২. জুহফা: বর্তমান নাম ‘রাবিগ। এ জায়গাটি মক্কা থেকে ৮২ মাইল তথা ১৮৭ কি.মি. দূরে, মদিনা থেকে ৩ মঞ্জিল তথা ৪৮ মাইল দূরে এবং লোহিত সাগর থেকে ৬মাইল দূরে অবস্থিত। এটি মিসর তথা পশ্চিম দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য।
৩. করনুল মানাযিল: বর্তমান নাম ‘আসসাইল’ নজদ। এখান থেকে মক্কা শরীফের দূরত্ব প্রায় ৮০ কি.মি.। এটি পূর্ব দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য।
৪. ইয়ালামলাম: বর্তমান নাম ‘সাদিয়া’। এটি মক্কা থেকে ৩০ মাইল (প্রায় ১২০ কি.মি. কিংবা তার চেয়ে কিছু বেশি) দূরে দক্ষিণে অবস্থিত। ইয়ামান এবং দক্ষিণ দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য।
৫. জাতুইরক: এটি মক্কা থেকে ৪২ মাইল দূরে অবস্থিত। ইরাক এবং উত্তর:পূর্ব দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য। রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭৮ যাকারিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/১০১
এই মীকাতগুলো হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত। এই মীকাতগুলো নির্ধারণের কারণ হলো- ইহরাম বাঁধা ব্যতিত এ সকল স্থান অতিক্রম করা নিষেধ।

বিঃদ্রঃ আমাদের বাংলাদেশের মানুষের জন্য ‘মীকাত’ হলো- যদি জাহাজ দিয়ে পানিপথ অতিক্রম করে যায়, তাহলে মীকাত হবে (يلملم) ইয়ালামলাম। আর যদি বিমান দিয়ে আকাশ পথ অতিক্রম করে যায়, তাহলে মীকাত হবে ( قرن المنازل) ক্বরনুল মানাযিল। আবার বাংলাদেশ থেকে বিমানে করে মদিনায় নামলে সেখান থেকে মক্কার পথে ‘মীকাত’ হবে (ذوالحليفة) যুলহুলায়ফা।
টিকা: (১) হিল—যা মক্কা নগরীর আশপাশের সীমানার বাহির বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন একটি স্থান বা এলাকা, যা হারাম এলাকার বাইরে এবং মীকাতের ভেতরে সাধারণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া
খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর
ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৬৬৬৩

জীবিত বা মৃত ব্যক্তির জন্য সওয়াব পাঠানোর বিধান


১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Dubai, United Arab Emirates

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

৬৩৫০৩

কোনো গরীব ব্যক্তি হজ করার পর, সম্পদশালী হলে পুনারায় হজের বিধান কী?


৭ জুন, ২০২৪

টঙ্গী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের

৩৪২০০

নারীর হজ ফরজ হওয়ার শর্ত


২২ জুন, ২০২৩

আশুগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy