আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬৯- শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
আর ধনী ও দরিদ্র, কখন কার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়?
৬২৫২। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী (ﷺ) এর কাছে একব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তোমার কি অবস্থা? লোকটি বলল, রমযানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে (দিনের বেলা) সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার রোযা পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তা হলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে সক্ষম হবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ বস। লোকটি বসল। তারপর নবী (ﷺ) এর কাছে এক ‘আরক’ আনা হলো যাতে ছিল খেজুর। আর ‘আরক’ হচ্ছে বড় ধরনের পরিমাপ পাত্র/ঝুড়ি। তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদ্কা করে দাও। লোকটি বলল, এটা কি আমার চাইতে অধিকতর অভাবীকে প্রদান করব? তখন নবী (ﷺ) হেসে ফেললেন, এমনকি তার মাড়ির দন্ত মুবারক পর্যন্ত দেখা গেল। তিনি বললেনঃ এটা তোমার পরিবারকে খাওয়াও।
হাদীসের ব্যাখ্যাঃ
রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। কাফফারা আদায়ের নিয়ম একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪ কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬ #সংগৃহীত

তাহকীক:
তাহকীক নিষ্প্রয়োজন