আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬৯- শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
৬২৫৩। মুহাম্মাদ ইবনে মাহবুব (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কি ব্যাপার? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলা) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার রোযা পালন করতে সক্ষম? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে পারবে? লোকটি বলল, না। রাবী বলেনঃ এমন সময় এক আনসার ব্যক্তি একটি আরক নিয়ে উপস্থিত হল। আর আরক হচ্ছে পরিমাপ পাত্র; তার মাঝে খেজুর ছিল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদ্কা করে দাও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার চেয়ে যে অভাবী তাকে কি দান করব? সে আরও বললঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যিনি আপনাকে হকের (দ্বীনের) সাথে প্রেরণ করেছেন; মদীনার দুই উপত্যকার মধ্যবর্তী স্থানে আমার চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্ত আর কেউ নেই। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যাও, এগুলো তোমার পরিজনকে আহার করাও।
হাদীসের ব্যাখ্যাঃ
রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। কাফফারা আদায়ের নিয়ম একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪ কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬ #সংগৃহীত

তাহকীক:
তাহকীক নিষ্প্রয়োজন