প্রবন্ধ

সুন্নাহ-সম্মত পোশাক (পর্ব দুই)

লেখক:মুফতী শাব্বির আহমাদ
১৭ জানুয়ারী, ২০১৭
৫৩৬২ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য

ষষ্ঠ মূলনীতি: পুরুষের পোশাক জাফরানী, কুসুমী কিংবা গাঢ় লাল রঙের না হওয়া।

পুরুষের জন্য জাফরানী রঙের পোশাক না হওয়া, অনুরূপ কুসুমী রঙ কিংবা গাঢ় লাল রঙ না হওয়া। অবশ্য লাল ডোরাকাটা হলে সমস্যা নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষদের জন্য সাদা পোশাক পছন্দ করতেন। ইরশাদ হয়েছে, البسوا من ثيابكم البياض فإنها من خير ثيابكم وكفنوا فيها موتاكم. অর্থ : তোমরা সাদা রঙের পোশাক পরিধান করো। কেননা, পুরুষের জন্য তা সর্বোত্তম। আর তোমাদের মৃতদেরও সাদা কাপড়ের কাফন পরাও।

(মুসনাদে আহমদ; হা নং ২২১৯, সুনানে আবূ দাউদ; হা.নং ৩৮৭৮, সুনানে তিরমিযী; হা.নং ৯৯৪, ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ, এছাড়াও বিভিন্ন শব্দে অসংখ্য বর্ণনা পাওয়া যায়।)


সপ্তম মূলনীতি : অহঙ্কার সৃষ্টিকারী এবং প্রসিদ্ধির পোশাক না হওয়া।

অহঙ্কার ও লোক দেখানো মানসিকতা সর্বাবস্থায় এবং সকল কাজেই পরিত্যাজ্য। লেবাস-পোশাকের ক্ষেত্রে বিধান এর ব্যতিক্রম নয়। মানুষকে দেখানোর জন্য বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য খুব জাঁকজমকপূর্ণ পোশাক বা ব্যতিক্রমধর্মী পোশাক পরিধান করাও নিষিদ্ধ। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠিন সতর্কবাণী এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,من لبس ثوب شهرة في الدنيا ألبسه الله ثوب مذلة يوم القيامة ثُمَّ تُلَهَبُ فِيهِ النَّارُ  অর্থ : যে ব্যক্তি দুনিয়াতে প্রসিদ্ধির পোশাক পরবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তাকে লাঞ্চনার পোশাক পরাবেন। অতঃপর তাকে অগ্নিদগ্ধ করা হবে।

(মুসনাদে আহমদ; হা. নং ৫৬৬৪, মুসনাদে আবূ ইয়ালা; হা. নং ৫৬৯৮, সুনানে নাসায়ী ফিল কুবরা; হা.নং ৯৫৬০, হাদীসটি হাসান পর্যায়ের।)

অন্য হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,كل ما شئت والبس ما شئت ما أخطأتك اثنتان سرف أو مخيلة অর্থ : নিজ রুচিমত আহার কর, রুচিমত পরিধান কর তবে দুটি জিনিস থেকে বেঁচে থাক— অপচয় এবং অহঙ্কার। 

(সহীহ বুখারী, ইমাম বুখারী রহ. ইবনে আব্বাস রাযি. এর এই বক্তব্যটি তা'লীক হিসেবে লিবাস অধ্যায়ের সাথে উল্লেখ করেছেন।)

অতএব নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ, অন্যের উপর নিজের বড়ত্ব প্রদর্শন কিংবা অপরের উপর প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্য থাকলে সে পোশাক হারাম।


অষ্টম মূলনীতি: পোশাক পরিষ্কার ও পরিপাটি হওয়া।

পোশাকের একটি উদ্দেশ্য সজ্জা গ্রহণ ও সজ্জিত হওয়া । আল্লাহ তা'আলা পোশাকের জন্য ريشا শব্দ ব্যবহার করেছেন। এর অর্থ হল সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা। পোশাকের মাধ্যমে মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, দেহাবয়ব সজ্জিত হয়। দৃষ্টিকটু এবং ঘৃণার উদ্রেক হয় এমন পোশাক শরীয়তের চাহিদা পরিপন্থী। সুনানে আবূ দাউদে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে ময়লা কাপড় পরিহিত দেখে বললেন, أما كان يجد هذا ما يغسل به ثيابه অর্থ : এই ব্যক্তির কাছে কি এমন কিছু নেই যা দিয়ে সে কাপড় ধৌত করে নিবে। 

(মুসনাদে আহমদ; হা. নং ১৪৮৯৩, সুনানে আবূ দাউদ; হা.নং ৪০৬২, মুসনাদে আবূ ইয়ালা; হা.নং ২০২৬, আল্লামা মুনাভী রহ. বলেন, قال العراقى: اسناده جيد ২/১৬৬।)

অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পোশাক পরিপাটি করতে বললেন এবং ইরশাদ করলেন,জেনে রাখো আল্লাহ তা'আলা স্বভাবগত নোংরামী বা ইচ্ছাকৃতভাবে নোংরা থাকা কোনটিই পছন্দ করেন না।

(সাহল ইবনে হানযালিয়্যাহ থেকে বর্ণিত হাদীসটির আরবী পাঠ নিম্নরূপ-وَأَصْلِحُوا لِبَاسَكُمْ حَتَّى تَكُونُوا كَأَنَّكُمْ شَامَةٌ فِي النَّاسِ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْفُحْشَ وَالتَّفَحُّشَ দেখুন- মুসনাদে আহমদ; হা. নং ১৭৬৬১, সুনানে আবূ দাউদ; হা.নং ৪০৮৯।)

আমাদের সমাজে কোন কোন মানুষ অপরিচ্ছন্ন থাকাকে দীনদারী মনে করে। রাস্তাঘাটে, মাজার, দরগায় এক শ্রেণীর মানুষকে দেখা যায় যারা অত্যন্ত নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন থাকে। মানুষ এদেরকে আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ মনে করে। অথচ বুযুর্গীর সাথে এর দূরবর্তী সম্পর্কও নেই। এগুলো সবই শরীয়ত পরিপন্থী কাজ। ইসলাম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড। শরীয়তের দৃষ্টিতে পরিচ্ছন্নতা সর্বাবস্থায়ই কাম্য। আর কারো সামর্থ্য থাকলে নিম্নমানের পোশাকও তার জন্য পছন্দযোগ্য নয়। হাদীস শরীফে এসেছে, একদা এক ব্যক্তি একেবারে নিম্নমানের পোশাক পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসেছিল। লোকটির অবস্থা দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,


أَلَكَ مَالٌ قَالَ نَعَمْ.  من أيِّ المالِ. قال قد آتاني اللهُ من الإبلِ والغنمِ والخيلِ والرقيقِ. قال: فإذا أتاك اللهُ مالاً فليُرَ عليك أثرُ نعمةَ اللهِ وكرامتِه.


অর্থ : তোমার কি কোন সম্পদ আছে? সে বললো, হ্যাঁ, আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কী সম্পদ আছে? সে বলল, উট, ছাগল, ঘোড়া, গোলাম সব ধরনের সম্পদই আল্লাহ তা'আলা আমাকে দান করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা'আলা যেহেতু তোমাকে সম্পদ দান করেছেন তাই এর কিছু আলামত তোমার পোশাকে প্রকাশ পাওয়া উচিত।

(মুসনাদে আহমদ; হা.নং ১৭২৬৮, সুনানে আবূ দাউদ; হা. নং ৪০৬৩, সুনানে তিরমিযী; হা. নং ২০০৬, ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। মুসতাদরাকে হাকেম; হা.নং ৬৫, হাকেম রহ. বলেন, صحيح الاسناد অর্থাৎ হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী রহ. উক্ত মন্তব্যের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন।)

বোঝা গেল, সামর্থ্যের চেয়ে নিম্নমানের পোশাক পরা প্রকারান্তরে আল্লাহ তা'আলার নেয়ামতের না-শোকরী করা। তবে অহঙ্কার প্রদর্শনের জন্য উন্নতমানের পোশাক পরিধান করা বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে দামী পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ।

কিন্তু অবহেলাজনিত অপরিপাটিতা ও এলোমেলোভাব পরিত্যাগ করে পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি, সুন্দর ও আর্থিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্যমানের পোশাক পরিধান করা উচিত। তবে পোশাকের গোছগাছ নিয়ে অতিব্যস্তও হবে না ।


নবম মূলনীতি : ছবি বা বিধৰ্মীয় প্রতীকযুক্ত না হওয়া।

ইসলামে সব ধরনের প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা, ব্যবহার করা ও পোশাকে প্রাণীর ছবি বহন করা কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ সকল কর্মে জড়িতদের সম্পর্কে কঠিন শাস্তির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। উপরন্তু এগুলো দেখলে ভেঙ্গে ফেলতে বা মুছে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত আয়েশা রাযি. বলেন,


قَدِمَ رَسولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وَسَلَّمَ مِن سَفَرٍ، وَقَدْ سَتَّرْتُ علَى بَابِي دُرْنُوكًا فيه الخَيْلُ ذَوَاتُ الأجْنِحَةِ، فأمَرَنِي فَنَزَعْتُهُ.


অর্থ : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফর থেকে ফিরে এসে দেখলেন যে, আমি আমার ঘরের দরজায় একটি পর্দা লাগিয়েছি যাতে পক্ষিরাজ ঘোড়ার ছবি আঁকা ছিল, তিনি আমাকে তা খুলে ফেলার নির্দেশ দেন, ফলে আমি তা খুলে ফেলি।

(সহীহ মুসলিম ২/২০০, সহীহ বুখারী ২/৮৮০।)

অন্য হাদীসে হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে দেখেন যে, আমি ঘরে একটি পর্দা টাঙিয়েছি যাতে ছবি রয়েছে, তা দেখে ক্রোধে তাঁর পবিত্র চেহারার রঙ পরিবর্তিত হয়ে গেল। এরপর তিনি পর্দাটি হাতে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, নিশ্চয় কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশি শাস্তি ভোগ করবে ঐ সকল মানুষ যারা আল্লাহর সৃজনকর্মের অনুকরণ করে (প্রাণীর ছবি আঁকে)। (সহীহ মুসলিম ২/২০০)

সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, আবুল হাইয়াজ আসাদী বলেন, আমাকে আলী রাযি. বলেন, আমি তোমাকে সে দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করছি, যে দায়িত্ব দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রেরণ করেছিলেন। যত মূর্তি-প্রতিকৃতি দেখবে সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেবে, কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে এবং যত ছবি দেখবে সব মুছে ফেলবে। (সহীহ মুসলিম ১/৩১২)

সহীহ বুখারীতে বর্ণিত আছে, হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাড়িতে ছবি, ক্রুশ চিহ্ন বা ক্রুশের ছবি সংবলিত কোন কিছু রাখতে দিতেন না, তা খুলে ফেলতেন বা ছবির অংশটুকু কেটে ফেলতেন। (সহীহ বুখারী ২/৮৮০ ) 

বর্তমানে প্রাণীর ছবিযুক্ত গেঞ্জি, টি-শার্ট ইত্যাদি ব্যবহার করার প্রবণতা যুবসমাজের মধ্যে বেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বলাবাহুল্য, যে কোন প্রাণীর ছবি সংবলিত পোশাক পরিধান করা নাজায়েয। অনুরূপ কোন ধর্মীয় প্রতীক যেমন ক্রুশ ইত্যাদি সংবলিত পোশাক পরিধান করাও নাজায়েয এবং হারাম।


দশম মূলনীতি : বড়দের জন্য নিষিদ্ধ পোশাক শিশুদেরকেও না পরানো। 

শিশুদেরকে ইসলামী আদব ও মূল্যবোধ শেখানো পিতামাতার দায়িত্ব। ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ বা হারাম তা থেকে তাদেরকে দূরে রাখা পিতামাতার কর্তব্য। নিষিদ্ধ খাদ্য, পানীয়, পোশাক ইত্যাদি সবধরনের অবৈধ জিনিস থেকে তাদের দূরে রাখা এবং এগুলোর প্রতি আকর্ষণ যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আমাদের সমাজে অনেক ধার্মিক পিতা- মাতা তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে ইসলামী মূল্যবোধ পরিপন্থী পোশাক পরিয়ে থাকেন, যেমন- আঁটসাঁট পোশাক, অমুসলিম মহিলা বা পুরুষদের পোশাক, সতর আবৃত করে না এমন পোশাক, ছবিযুক্ত পোশাক ইত্যাদি । তারা মনে করেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে- মেয়েদের জন্য শরীয়তের বিধিবিধান প্রযোজ্য নয়। কিন্তু শিশুদের ইসলামী মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া তো বড়দের উপর ফরয এবং এ বিষয়ে অবহেলা-উদাসীনতা মারাত্মক কবীরা গুনাহ। তাবেয়ী আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযিদ বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. এর সাথে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় তার একটি ছোট্ট ছেলে তার কাছে এল। ছেলেটিকে তার মা একটি রেশমী জামা পরিয়ে দিয়েছে। জামাটি পরে ছেলেটি খুব খুশী। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ছেলেটিকে বললেন, বেটা! কে তোমাকে এই জামা পরিয়েছে? এরপর বললেন, কাছে এসো। ছেলেটি কাছে আসলে তিনি জামাটি টেনে ছিড়ে ফেললেন এবং বললেন, তোমার মাকে গিয়ে বল, তোমাকে অন্য কাপড় পরিয়ে দিতে।

(শুআবুল ঈমান ৫/১৩৫) 

উল্লিখিত মূলনীতিসমূহের আলোকে আমরা বলতে পারি, যেসব পোশাকে উল্লিখিত সব শর্ত পাওয়া যাবে অর্থাৎ সতর আবৃত করবে, আঁটসাঁট বা পাতলা হবে না, কোন অমুসলিম বা পাপীগোষ্ঠীর ব্যবহৃত ডিজাইন হবে না, প্রসিদ্ধির পোশাক হবে না, ছবিযুক্ত হবে না, পুরুষের পোশাক মহিলাদের ডিজাইনে তৈরি হবে না আর মহিলাদের পোশাক পুরুষদের পোশাকের আদলে তৈরি হবে না, পুরুষের পোশাক রেশমের হবে না, পায়ের টাখনু ঢেকে রাখবে না ইত্যাদি— তাহলে সে পোশাক শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ পোশাক তথা সুন্নাহসম্মত / সুন্নাহস্বীকৃত পোশাক বিবেচিত হবে।


(ছয়) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পোশাক পরিচ্ছদ

দেহ আবৃত করাই পোশাক-পরিচ্ছদের মূল উদ্দেশ্য। পোশাক সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমত শরীরের নিম্নাংশ আবৃত করার পোশাক। দ্বিতীয়ত শরীরের ঊর্ধ্বাংশ আবৃত করার পোশাক এবং তৃতীয়ত মাথা আবৃত করার পোশাক।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন প্রকারের পোশাক ব্যবহার করেছেন। শরীরের নিম্নাংশের জন্য তিনি সাধারণত ইযার বা সেলাইবীহীন খোলা লুঙ্গি ব্যবহার করতেন। পাজামা বা সেলোয়ার ব্যবহার করেছেন বলে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। শরীরের ঊর্ধ্বাংশের জন্য তিনি 'রিদা', 'কামিস', 'জুব্বা', 'আবাকাবা' ইত্যাদি ব্যবহার করতেন। মাথা আবৃত করার জন্য তিনি টুপি, পাগড়ি, রুমাল, চাদর ব্যবহার করেছেন। নিম্নে আমরা এসব পোশাকের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরব। 


১। 'ইযার' ও 'রিদা'

শরীরের নিম্নাংশ আবৃত করার জন্য যে চাদর বা সেলাইবিহীন লুঙ্গি পরিধান করা হয় তাকে ইযার বলে। আর শরীরের উর্ধ্বাংশ আবৃত করার জন্য যে চাদর ব্যবহার করা হয় তাকে 'রিদা' বলে। তৎকালীন আরবদেশের সর্বাধিক প্রচলিত পোশাক ছিল 'ইযার' ও 'রিদা'। বর্তমানে হজ্জের সময় কেবল পুরুষগণ ইযার ও রিদা পরিধান করে ইহরাম ধারণ করে থাকেন। এছাড়া প্রাচীন এ আরবীয় পোশাক প্রায় অবলুপ্ত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন প্রকার পোশাক পরিধান করতেন। তিনি জামা (কামীস) বেশি পছন্দ করতেন। তবে ব্যবহারের আধিক্যের দিক থেকে তিনি ইযার ও রিদা বা খোলা লুঙ্গি ও চাদরই বেশি পরিধান করেছেন। বহু হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে যে, সাহাবীগণ তাকে ইযার ও রিদা পরিহিত অবস্থায় দেখেছেন। তবে তিনি ইযারের নিম্নপ্রান্ত নিসফে সাক বা পায়ের গোছার মাঝামাঝি রাখতেন। তাঁর মহান সাহাবীগণ তাঁর অবিকল অনুকরণে সর্বদা এভাবে লুঙ্গি পরিধান করতেন। হযরত সালামা ইবনে আকওয়া বলেন, أن عثمان إتزر إلى نصف الساق وقال هكذا إزرة رسول الله অর্থ : হযরত উসমান রাযি, 'নিসফে সাক' তথা পায়ের নলির মাঝামাঝি পর্যন্ত ঝুলিয়ে ইযার পরিধান করতেন এবং বলতেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে ইযার পরিধান করতেন। (মুসনাদে বাযযার ২/১৫) 


২। সারাবীল, সিরওয়াল

এ শব্দটি মূলত ফারসী ভাষা থেকে গৃহীত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল পাজামা, সেলোয়ার ইত্যাদি যেগুলো শরীরের নিম্নাংশ আবৃত করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় এবং এতে দুই পা পৃথকভাবে আবৃত হয়। পাজামা আরবদের মাঝে প্রচলিত ও পরিচিত পোশাক ছিল। পাজামা সতর আবৃত করার বেশি উপযোগী হওয়ার কারণে কোন কোন সাহাবী পাজামাকে বেশি পছন্দ করতেন। তবে সে যুগে শরীরের নিম্নাংশ আবৃত করার জন্য ইযারই বেশি প্রচলিত ছিল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাজামা দরদাম করেছেন বলে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু পরিধানের বিষয়টি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়নি। তবে বিভিন্ন বর্ণনার আলোকে বুঝে আসে যে, তিনি তা ব্যবহার করেছেন। অবশ্য সাহাবীগণের পাজামা ব্যবহারের বিষয়টি প্রমাণিত। (সুনানে তিরমিযী কিতাবুল বুয়ু ১/২৪৪)


৩। কামীস

হাতা, গলা ইত্যাদি সহ শরীরের মাপে কেটে ও সেলাই করে শরীরের ঊর্ধ্বাংশের জন্য প্রস্তুতকৃত পোশাককে কামীস বলে। সাধারণত কামীসের বুকের দিকে সামান্য ফাড়া থাকে যাতে বুতাম ব্যবহার করা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পোশাক হিসাবে কামীসকেই বেশি পছন্দ করতেন। সুনানে তিরমিযীতে বর্ণিত, كان أحب الثياب إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم القميص অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সবচেয়ে প্রিয় পোশাক ছিল কামীস বা জামা। (সুনানে তিরমিযী ১/৩০৬)

সাহাবাগণের মাঝেও কামীসের ব্যবহার ছিল ব্যাপক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কামীস পরিহিত অবস্থায়ই ইন্তেকাল করেছিলেন। (মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫০৫)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন প্রকারের জামা পরিধান করতেন। কোনটির ঝুল ছিল পায়ের টাখনু পর্যন্ত। আবার কোনটি খাটো ছিল। কোনটির হাতা ছিল হাতের আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত। কোনটির হাতা কিছুটা ছোট অর্থাৎ হাতের কবজি পর্যন্ত ছিল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কোন জামা হাঁটু পর্যন্ত বা এর চেয়ে কম ঝুলওয়ালা জামা ব্যবহারের কোন বর্ণনা পাওয়া যায়না। তাছাড়া সে জামাগুলো কলার বিহীন ছিল বলেই অনুমিত হয়। তবে তা বোতাম বিশিষ্ট ছিল বলে বর্ণনায় পাওয়া যায়।


৪। জুব্বা ও আবাকাবা

বুক খোলা, হাতাওয়ালা প্রশস্ত বহিরাবরণ। আরবীতে ঐ পোশাককে জুব্বা বলা হয়, যা সাধারণত মূল পোশাক জামা বা চাদরের উপরে পরা হয়। আল মু'জামুল ওয়াসীতের ১০৪ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,الجبة : ثوب سابغ واسع الكمين بشقوق المقدم، يلبس فوق الثياب. অর্থ : আবাকাবাও এক প্রকারের জুব্বা যা সাধারণত মূল পোশাকের উপর পরা হয় এবং যা সামনে বা পিছনে সম্পূর্ণ খোলা থাকে। আবাকাবাকে আরবীতে قرطة কোর্তাও বলা হয়। আল মু'জামুল ওয়াসীতে উল্লেখ আছে (পৃষ্ঠা ১০৪), রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময় জুব্বা বা আবাকাবা পরিধান করেছেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বিশেষত জুমআর দিনে বা সম্মানিত মেহমানদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য তিনি জুব্বা বা আবাকাবা পরিধান করতেন। (আল আদাবুল মুফরাদ- সহীহ বুখারী ১/১৪২)


৫। টুপি, পাগড়ি,রুমাল 

শরীরের অন্যান্য অংশের ন্যায় মাথা আবৃত করা প্রায় সকল জাতির নিকটই একটি মর্যাদাময় রীতি ও সৌন্দর্যের পূর্ণতা। আরবদের মধ্যে মাথা আবৃত করার জন্য প্রাচীন কাল থেকেই টুপি পাগড়ীর প্রচলন ছিল। আরবীয় কোন আচার-আচরণ পোশাক-আশাক ইত্যাদি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বহাল রাখেন তাহলে তা ইসলামী বলে গণ্য হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশের আলোকে এর গুরুত্ব নির্ধারিত হবে। আর আরবীয় কোন আচার, পোশাক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্জন করলে বা বর্জন করতে নির্দেশ দিলে তা বর্জন করা আবশ্যক হবে এবং ইসলাম পরিপন্থী সাব্যস্ত হবে। টাখনু আবৃত করে পোশাক পরিধান করা তৎকালীন আরবীয় কালচার ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা কঠিনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।


হাদীসের আলোকে একথা স্পষ্টভাবে জানা যায় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ টুপি ও পাগড়ী পরিধান করতেন এবং মাথা আবৃত করার জন্য কখনো চাদর ও রুমালও ব্যবহার করেছেন। এগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ পেশ করা হলো।


টুপি : টুপির জন্য হাদীসে তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।

১। قلنسوة (কালানসুওয়াহ) 

২। الكمة (কুম্মাহ) 

৩। برنس (বুরনুস) কালানসুওয়াহ সম্পর্কে আধুনিক আরবী অভিধান আল-মুজামুল ওয়াসীতে বলা হয়েছে,القلنسوة : لباس الرأس مختلف الأنواع والأشكال অর্থ : কালানসুওয়াহ মাথার পোশাক, বিভিন্ন প্রকারের ও আকৃতির।

কুম্মাহ সম্পর্কে তিন রকমের ভাষ্য রয়েছে। ১) টুপি, কালানসুওয়াহ এর প্রতিশব্দ, ২) ছোট টুপি, ৩) গোল টুপি আর বুরনুস হল পরিহিত পোশাকের সাথে সংযুক্ত মাথা ঢাকার লম্বা টুপি যা সাধারণত শীত থেকে রক্ষা করে থাকে। সাহাবীগণ বুরনুস জাতীয় টুপি পরিধান করেছেন বলে হাদীসে বর্ণনা এসেছে। (সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩)

অবশ্য কেউ কেউ বুরনুস এর অর্থ লম্বা বা উঁচু টুপি বলেছেন যা প্রথম যুগের আবেদ, সুফীগণ পরিধান করতেন।

নির্ভরযোগ্য বহু হাদীস দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবাগণের টুপি পরিধানের বিষয়টি জানা যায়। কিন্তু টুপির বিশেষ কোন আকৃতি ও রঙ নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা জানা যায় না। তবে কিছু হাদীস দ্বারা নবীজীর টুপি তার মাথার সাথে লাগোয়া ছিল, সাদা ছিল তা বুঝে আসে। (সুনানে আবূ দাউদ ১/২৪৯, সুনানে তিরমিযী ১/৩০৮)

তাই যে কোন আকৃতির টুপি পরিধান করা যাবে। তবে কোন বিশেষ আকৃতির টুপি কোন অমুসলিম বা পাপীসমাজের আলামত ও বিশেষ চিহ্নে রূপান্তরিত হলে তা পরা যাবে না।

যেমন ইয়াহুদীদের ছোট্ট টুপি। বুহরা শিয়াদের বিশেষ ডিজাইনের গোল টুপি ইত্যাদি।


পাগড়ী : টুপি সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসের তুলনায় পাগড়ী সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা অনেক বেশী। তাঁরা টুপির ন্যায় পাগড়ীও সাধারণ পোশাকের অংশ হিসাবে পরিধান করতেন। শুধু নামাযের সময় পাগড়ী পরা আর নামায শেষে তা খুলে ফেলার প্রচলন সাহাবা-তাবেয়ীদের যুগে ছিল না। পাগড়ীর বিভিন্ন ফযীলত সম্পর্কে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু সবগুলো যয়ীফ- অনির্ভরযোগ্য। যে কোন রঙের পাগড়ী পরা যাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কালো পাগড়ী পরার বিষয়টি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। পাগড়ীর দৈর্ঘ্য কত হবে সরাসরি তা কোন হাদীসে বর্ণিত হয়নি। তবে কেউ সাত হাত এবং কেউ দশ হাতের কথা বলেছেন। পাগড়ীর প্রান্ত পিছনে কাঁধের উপর সর্বোচ্চ এক হাত এবং সর্বনিম্ন চার আঙ্গুল ঝুলাতেন বলে সাহাবায়ে কেরামের আমল বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো প্রান্ত না ঝুলিয়ে পাগড়ী পরেছেন এমনটিও বর্ণিত হয়েছে। আবার উভয় প্রান্ত কাঁধের উপর দিয়ে পিছনের দিকে ঝুলানোর কথাও হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।


রুমাল: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগন কখনো কখনো পৃথকভাবে মাথার রুমাল বা চাদর ব্যবহার করেছেন, কখনো আবার গায়ের চাদর দিয়ে মাথা আবৃত করেছেন। হযরত আনাস রাযি. বলেন,كنت ألعب مع الصبيان إذ جاء النبي صلى الله عليه وسلم وقد منع رأسه بثوب فسلم على ثم دعاني فبعثني لحاجة وقعد في ظل حائط . অর্থ : আমি ছোট বালকদের সাথে খেলা করছিলাম। এমতাবস্থায় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করলেন। তিনি একটি কাপড় দ্বারা মাথা আবৃত করে রেখেছিলেন। তিনি আমাকে সালাম দিলেন এবং ডেকে নিয়ে একটি কাজে পাঠালেন এবং একটি বাগানের দেয়ালের ছায়ায় বসলেন। (মুসনাদে আবূ আওয়ানাহ ৫/২৪০)

তবে প্রথম যুগে কেউ কেউ মাথায় রুমাল ও শাল ব্যবহার অপছন্দ করতেন। অবশ্য সাহাবা যুগের শেষ দিক থেকেই আলেম ও ধার্মিক ব্যক্তিবর্গের মাথায় শাল বা রুমাল ব্যবহারের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়।


(সাত) নবীযুগে নারীদের পোশাক 

নবীযুগে মহিলাগণ শরীরের নিম্নাংশ আবৃত করার জন্য সাধারণত ইযার ব্যবহার করতেন। তবে সে যুগে মহিলাদের মাঝে সারাবীল তথা পাজামা সেলোয়ার ব্যবহারের ব্যাপক প্রচলন ছিল। হজ্জের সময় পুরুষের জন্য পাজামা ব্যবহার নিষেধ করা হলেও মহিলাদের জন্য এর অনুমতি দেয়া হয়েছে। মূলত মহিলাদের জন্য সারাবীল অত্যন্ত উপযোগী পোশাক। পাজামা পরিধানের উৎসাহ-জ্ঞাপক কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। তবে দুর্বল সনদে বর্ণিত কিছু হাদীসে এর ফযিলত ও উৎসাহ জ্ঞাপক নির্দেশনা বর্ণিত আছে। উর্ধ্বাংশের জন্য মহিলাগণ পায়ের পাতা পর্যন্ত নামানো ঝুলের কামিস পরিধান করতেন। মহিলাদের এ কামিসকে درع বলা হতো। درع তে সাধারণত কাঁধের দিকে ফাড়া থাকে। পুরুষগণ ইযারের সাথে যেরূপ খোলা চাদর ব্যবহার করতেন, মহিলাগণ সাধারণত সেরূপ খোলা চাদর ব্যবহার করতেন না। তারা কামিস ব্যবহার করতেন। তাদের এ কামিস ফুলহাতা বিশিষ্ট হতো। মাথা, চুল, গলা, কাঁধ, কান ইত্যাদি আবৃত করার জন্য তারা ওড়না ব্যবহার করতেন। আরবীতে একে خمار খিমার ও قناع বলা হয়। তা পাতলা বা সঙ্কীর্ণ হতো না। হযরত আয়েশা রাযি. বলেন,إنما الخمار ما وارى الشعر والبشر. অর্থ : ওড়না তো তাকেই বলা হবে, যা চুল ও চামড়া ঢেকে রাখবে। (মুসনাদে আব্দুর রায্যাক ৩/১২৯)

মাথা, মুখ, গলা আবৃত করার জন্য মাথার আকৃতিতে তৈরি পোশাককে برقع বুরকা বলা হতো। তারা মুখাবরণের জন্য বুরকাও ব্যবহার করতেন, আর জনসমক্ষে বের হওয়ার জন্য এসব পোশাকের উপর একটি বড় চাদর পরিধান করতেন যা মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীর আবৃত করে রাখত। একে জিলবাব বলা হতো।

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ

লেখকবৃন্দ

সকল লেখক →

বিবিধ

মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ দাঃ

শাইখ মুহাম্মাদ আওয়ামা

মাওলানা ইমদাদুল হক

আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.

মাওলানা মুহাম্মদ গিয়াসুদ্দীন হুসামী

আল্লামা মনযুর নোমানী রহঃ

মাওলানা শিব্বীর আহমদ

মাওলানা মাহমুদ বিন ইমরান

আল্লামা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম দাঃ

মাওলানা ইনআমুল হাসান রহ.

মাওলানা যাইনুল আবিদীন

আবদুল্লাহ আল মাসউদ

শাইখুল ইসলাম আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহ.

মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ

আল্লামা ইকবাল

হযরত মাওলানা মুহিউদ্দীন খান

মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী

শাইখ আলী তানতাভী

মাওলানা আতাউল কারীম মাকসুদ