প্রবন্ধ

তারাবীতে কুরআন তিলাওয়াত এবং হাফেয ছাত্রদের করণীয়

লেখক:মাসিক আলকাউসার
২১ মার্চ, ২০২৩
১৬৮৯ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য

তারাবীর নামাযে তিলাওয়াতে কুরআন সম্পর্কে কিছু কথা বলার ইচ্ছা আছেযেগুলো খেয়াল রাখলে ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ। এর মাধ্যমে আশা করি তারাবীর নামায সুন্দরভাবে আদায় হবে এবং অনেক ভুল-ভ্রান্তি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

তারতীলের সঙ্গে তিলাওয়াত

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন

وَ رَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِیْلًا.

কুরআন তিলাওয়াত করুন ধীরে ধীরেস্পষ্ট করে। সূরা মুয্যাম্মিল (৭৩) : ৪

কুরআন মাজীদ তিলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ একটি আদব হচ্ছে তারতীলের সঙ্গে তিলাওয়াত করা। অর্থাৎ তাজবীদের সঙ্গে থেমে থেমে পড়াযাতে প্রতিটি শব্দ প্রতিটি অক্ষর বুঝে আসে। এভাবে পড়লে কুরআন তিলাওয়াতের স্বাদ পাওয়া যায়কুরআন বুঝতে ও তাতে চিন্তা করতে সুবিধা হয় এবং দিলের উপর তাছীর হয়।

তারাবীর নামাযেও এ আদবটি খেয়াল রাখা চাই। তারাবীর নামায মাঝারি ঢঙে পড়াই সমীচীন খুব ধীরে নয়খুব দ্রুতও নয়। যেন তাজবীদের সঙ্গে একদম স্পষ্টভাবে প্রত্যেকটা অক্ষর উচ্চারণ করা হয়। মাখরাজ-সিফাত ও মাদ-গুন্নাহগুলো যেন যথাযথভাবে আদায় হয়। কিন্তু সাধারণ মুসল্লীদের অনেকে চাননামায সত্বর শেষ হোক। তারা প্রত্যাশা করেনঅনেকে তো সরাসরি মুখে বলেও ফেলেনহাফেয ছাহেবগণ যেন খুব দ্রুত পড়েন। কোনোদিন সময় তুলনামূলক একটু বেশি লাগলে হাফেয ছাহেবদের সমালোচনা করেন। এটা একদম অনুচিত। এতে যেমন অনেক সময় তিলাওয়াতে ভুল থেকে যায়তেমনি কুরআনের আযমত এবং হকও যথাযথভাবে আদায় হয় না। তারতীলের সঙ্গে তিলাওয়াত করলে কতটুকু সময়ই বা বেশি লাগে। বড়জোর দশ থেকে পনের মিনিট। অথচ কত সময় বেহুদা কাজে ও গল্পগুজবে নষ্ট করা হয়। ভেবে দেখুনমাত্র দশ-পনের মিনিটের কারণে কত বড় নিআমত হাতছাড়া করছেন।

আলহামদু লিল্লাহবর্তমানে শহরে কিছু কিছু মসজিদ এমন আছেযেখানে বিজ্ঞ আলেম ইমামগণ রমযানের পূর্ব থেকেঅর্থাৎ রজব ও শাবান থেকে তারতীলের সাথে তিলাওয়াতের ফাযায়েল বর্ণনা করতে থাকেন। ফলে সেসব মসজিদের মুসল্লীগণের অধিকাংশই ধীরেসুস্থে তারাবী পড়ার প্রতি আগ্রহী হন এবং তারতীলের সঙ্গে তারাবী পড়া যে অতি ফযীলত ও সৌভাগ্যের বিষয় তা জেনে আনন্দিত হন।

ইয়াদ পাকা করা

তারাবীতে পঠিতব্য অংশটুকু ভালোভাবে ইয়াদ করা চাই। সেজন্য অধিক পরিমাণে তিলাওয়াত করতে হবে। তিলাওয়াতের বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলা ও অলসতা করা যাবে না। কারো অবস্থা এমন যেপঠিতব্য পারাটি কয়েকবারহয়ত চার-পাঁচবার পড়েই মনে করে ইয়াদ হয়ে গেছে আর পড়ার দরকার নেই। কোনোরকম পড়তে পেরেই পড়া থেকে উঠে পড়ে। এটা একদম অনুচিত। এতে কেবল নিজের ক্ষতি নয়মুসল্লীদের হকও নষ্ট হয়। সেজন্য রমযানে তিলাওয়াতের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অতি প্রাচীনকালের কথা নয়আমাদেরই জীবনের প্রাথমিককালেএই ধরুন পঞ্চাশ-ষাট বছর আগের কথা আমাদের আকাবিরের অধীনস্থ ছেলেরা যে পারাটি যেদিন তারাবীতে পড়তেনসেই পারাটি দিন-রাতে বিশ-ত্রিশবার পড়ার কথা শুনেছি। হযরত শায়খুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া ছাহেব রাহ.ই তো তারাবীহ পড়ানোর কালে রাতদিনে পারাটি ত্রিশবার পড়তেন। এতে (রমযান) মাসে ত্রিশ খতম হত। ইয়াদ তো মাশাআল্লাহ তাঁদের বছরব্যাপী নিয়মিত তিলাওয়াতের ফলেই হয়ে থাকত। তার পরও তাঁরা পবিত্র রমযান মাসে বিশ-ত্রিশ খতম তিলাওয়াত করতেন। 

তো আমাদের হাফেয তালিবে ইলমগণ কি পবিত্র রমযানে দশ খতমও তিলাওয়াত করবেন নাএমনিতে যারা হাফেয ননতাদের মধ্যেও তো কতক মানুষ রমযানে দশ খতম কুরআন পড়েন। আমাদের মরহুমা শাশুড়ীআম্মা [হযরত শায়খুল হাদীস রাহ.-এর প্রথম স্ত্রী] রমযানে দশ খতমেরও বেশি তিলাওয়াত করতেন। মামা শ্বশুর হযরত মাওলানা আমিনুল ইসলাম ছাহেব রাহ. বলতেনবুবুজান রান্না করার সময়ও এক হাতে কুরআন শরীফ নিয়ে পড়েন আর এক হাতে চামচ নিয়ে তরকারি পাকান।

হযরত হাকীমুল উম্মত রাহ. তো বাদ ফজর কয়েক মাইল হাঁটতেন আর এক মনযিল তিলাওয়াত করে এক সপ্তাহে খতম করতেন। অথচ আমাদের হাফেজ তালিবুল ইলমদের তিলাওয়াতের কী অবস্থা! শোনা যায়কতক হাফেয শুধু রমযানে তারাবী পড়ার জন্য কিছুদিন আগ থেকে তিলাওয়াত শুরু করে! ফলে ইয়াদ কাঁচা থাকেযার প্রকাশ ঘটে তারাবীর লুকমার ক্ষেত্রে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

একারণেই এখন মসজিদে মসজিদে তিন-চারজন হাফেজ তারাবী পড়ায়। অথচ আমাদের বাল্যকালে প্রায় মসজিদে একজন হাফেয ছাহেবই তারাবী পড়াতেনবড়জোর আরো একজন হাফেয পেছনে শ্রোতা হিসেবে থাকতেনতিনি নামায পাড়ানোতে শরীক হতেন না। যতদূর মনে পড়েইমাম হাফেয ছাহেব কোথাও তেমন আটকাতেন নাফলে শ্রোতা হাফেয ছাহেবের কদাচিৎ মুখ খুলতে হত। এভাবেই নামায শেষ হত।

সেদিনের সঙ্গে বর্তমান কালের তুলনা করলে দুঃখের সীমা থাকে না। বর্তমানে হাফেযদের ইয়াদের কথাটাই বার বার মনে আসে। অনেক হাফেয ছাত্র সারা বছর পবিত্র কুরআন হয়ত ধরেই দেখে না আর পবিত্র রমযান এলেও ভালো করে ইয়াদ করার কষ্ট নেয় না। আল্লাহ্ই একমাত্র হেফাযতকারী।

তাই হাফেয তালিবে ইলম ভাইদের প্রতি দরখাস্ত আপনারা কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি যত্নবান হোন। সারা বছর ইহতিমামের সঙ্গে কুরআন তিলাওয়াত করুন। আর রমযান মাসের প্রধান কাজই তো কুরআন তিলাওয়াত। বিশেষত যারা তারাবীতে কুরআন শোনান তারা যত বেশি সম্ভব তিলাওয়াত করবেন এবং তারাবীতে পঠিতব্য অংশটুকু পাকাপোক্তভাবে ইয়াদ করবেন। মনে রাখবেনতারাবীতে মুসল্লীদের কুরআন শোনানো অনেক বড় যিম্মাদারি ও আমানত। এক্ষেত্রে অবহেলা খেয়ানতের শামিল।

তারাবীতে লুকমা দান ও গ্রহণ

যাইহোক প্রথম কাজ তো হলপঠিতব্য অংশটুকু ভালোভাবে ইয়াদ করা। এর পরও কদাচিৎ তিলাওয়াতে ভুল হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক বিষয়। সেজন্য কখনো পেছন থেকে লুকমা দেওয়ার প্রয়োজন হয়।

এক্ষেত্রে মুসল্লিদের মানসিকতারও সংশোধন প্রয়োজন। তারা হাফেয ছাহেবদের লুকমা আদান-প্রদানকে গুরুতর নিন্দার বিষয় হিসেবে দেখে এবং এর কঠোর সমালোচনা করতে থাকে। ফলে হাফেয ছাহেবগণ লজ্জায় পড়ে যান।

মনে রাখতে হবেভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। অনেক সময়ই ইয়াদ করার পরও ভুল হয়ে যায়প্যাচ লেগে যায় বা হঠাৎ আটকে যায়। ভুল সংশোধনের উন্মুক্ত পরিবেশ থাকলে শুধরে নেওয়া সহজ হয়।

যাইহোকহাফেয ছাহেব তিলাওয়াতে আটকে গেলে বা ভুল পড়লে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেযগণ সংশোধনের জন্য লুকমা দেন। এই লুকমা সম্পর্কিত কিছু উসূলী বা মৌলিক বিষয় মেনে চলা কর্তব্যযাতে তিলাওয়াতে কোনো ত্রুটি না থাকে এবং নামাযে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়।

প্রথম থেকেই শ্রোতা হাফেযদের তিলাওয়াতকারী হাফেযের পড়ার প্রতি চৌকান্না ও পূর্ণ মনোযোগী হতে হবে। যে আয়াতে ভুল হবেহাফেয ছাহেব নিজেই তা সংশোধনের চেষ্টা করবেন। ভুল পড়ার বা কোথাও আটকে যাওয়ার সাথে সাথে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেয ছাহেব লুকমা দেবেন না। হাফেয ছাহেব চেষ্টা করেও ভুল সংশোধন করতে না পারলে অথবা আয়াতের যেখানে আটকে গেছেন তা ছুটাতে না পারলে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেযগণ লুকমা দেবেন।

এভাবে তিলাওয়াতকারী হাফেয শ্রোতা হাফেযদের সহায়তা নিয়ে হলেও চলতি রাকাতের ভুলটা সে রাকাতেই সংশোধন করে নেবেন।

প্রথম রাকাতের ভুল যদি ঐ রাকাতেই সংশোধন করা না যায়তাহলে দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতেই ভুলটা সংশোধন করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। চলতি দুই রাকাতেও যদি ভুল সংশোধন করা না যায় বা ভুলটা দ্বিতীয় রাকাতে হয় এবং সে রাকাতে সংশোধন করা না যায়তাহলে পরবতীর্ দুই রাকাতের প্রথম রাকাতেই ভুলটা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করবে।

ভুলটা যদি এমন হয় যেতাতে অর্থ এমনভাবে বিগড়ে যায় যেতা নামায ফাসেদ হওয়ার মততাহলে যে রাকাতে ভুল হয়েছে ঐ রাকাতেই সংশোধন করে নিতে হবেনতুবা নামায ফাসেদ হয়ে যাবে। এরকম অবস্থায় হাফেয ছাহেব মুসল্লীদের জানিয়ে ভুলের দুই রাকাতে পঠিত কিরাত দিয়ে পুনরায় দুই রাকাত পড়ে নেবেন।

আর অর্থ বিগড়ে যাওয়ার কথাটা যদি মুসল্লীদের নামায পড়ে চলে যাওয়ার পর বুঝে আসেতবে উপস্থিত যাদের পাওয়া যায় তাদের নিয়ে ইমাম ছাহেব সেই দুই রাকাত নামায পুনরায় পড়ে নেবেন এবং পরদিন আগের দিনের সেই দুই রাকাতে পঠিত কেরাতটুকু তারাবীর শুরুতে পড়ে নিয়ে তারপর এদিনের নির্ধারিত অংশ পড়বেন। তাতে এই মসজিদের নিয়মিত মুসল্লীদের খতমে কুরআন ঠিক থাকবে ইনশাআল্লাহ।

অন্যান্য নামাযের মতোই কিছু নিয়ম তারাবীতেও পালনীয়

নামাযে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পঠিতব্য সূরার প্রথম থেকে হোক বা মাঝখান থেকেউভয় অবস্থায় বিসমিল্লাহ পড়তে হয়। দ্বিতীয় রাকাতে ফাতিহার পর সূরার শুরু হলে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়মাঝখান থেকে হলে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না। অর্থাৎ যে রাকাতেই হোকসূরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় আর সূরার মাঝ থেকে হলে প্রথম রাকাতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়পরবর্তী রাকাতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না।

সূরা তাওবা (বারাআত) সম্পর্কে এতটুকু কথা যেএকই রাকাতে আগের সূরার সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না। আর সূরা ফাতিহার পর (যে কোনো রাকাতে) বারাআত (প্রথম থেকে) পড়লে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়।

অন্যান্য নামাযের মতো তারাবীতেও রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোদুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা অর্থাৎ তাদীলে আরকান রক্ষা করা এবং তাশাহ্হুদ পড়া ওয়াজিব। তাই এগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া খুবই জরুরি। আর রুকু-সিজদায় কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করা সুন্নতে মুআক্কাদা। তেমনিভাবে দরূদ শরীফ ও দুআয়ে মাছুর পাঠ করাও সুন্নতে মুআক্কাদা। তাই এগুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে।

তিলাওয়াতে সিজদাসিজদায়ে সাহুসহ সংশ্লিষ্ট মাসায়েল ভালোভাবে আত্মস্থ রাখা কর্তব্য। যারা সবেমাত্র হিফয সম্পন্ন করেছেন তাদের এসব বিষয়ে বেশি যত্নবান হওয়া জরুরি। সবচেয়ে ভালো হয়তাদের উস্তাযগণ যদি তাদের প্রতি লক্ষ রাখেনযাতে তারাবীহ সংক্রান্ত জরুরি মাসআলাগুলো তাদের আত্মস্থ হয়ে যায়।

চার রাকাত পর পর তারবীহা ও বিশ্রাম

تَرَاوِيْحُ শব্দটি হচ্ছে تَرْوِيْحَةٌ -এর বহুবচনযার অর্থ হচ্ছেবিশ্রাম নেওয়া বা আরাম হাসিলের জন্য একটু বসা। অতএব দেখা যাচ্ছেতারাবী শব্দের অর্থের মধ্যেই কিছু সময় (চার রাকাত) পর পর একটু আরাম হাসিলের জন্য বসার কথা রয়েছে। তাই তারাবী নামাযের মধ্যে চার রাকাত পর পর খানিক বিশ্রাম গ্রহণের নিয়ম রয়েছে। সুতরাং তারাবীতে চার রাকাত পর পর এই বিরতিটুকুর মানসিকতা না রাখা মোটেই ভালো কথা নয়।

হযরত শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রাহ.-এর জীবদ্দশার ঘটনা। একবার রমযানে ২৭ তারিখের পর তাঁর নাতীদের ঘরোয়া তারাবীতে হাফেয ছাহেব প্রথম চার রাকাত পর একটু আরামের বৈঠক না করে উঠে গেলে তিনি রাগ করলেন। অতঃপর উল্লিখিত শরঈ ভিত্তির কথা আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে আরামের বৈঠক করলেন। আর খালি খালি না বসে থেকে তাতে দুআ-দরূদও পড়লেন।

উল্লিখিত আরামের বৈঠকে নির্দিষ্ট ওযীফা বা দুআর কথা হাদীসে বর্ণিত নেইতবে এ সময়টুকুতে অনর্থক কথাবার্তায় লিপ্ত হওয়া অনুচিত। এর মধ্যে আমরা নিজেদের জরুরত সারতে পারিক্লান্তি দূর করতে পারি। জরুরত না থাকলে বিভিন্ন তাসবীহ-তাহলীলযিকির-আযকারদরূদ শরীফ ও দুআ পড়তে পারি।

শেষকথা

পরিশেষে হাফেয ছাত্রভাইদের আবারো অনুরোধ করছিআপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর রহমতের দিকে তাকান। তাঁর কত বড় রহমত যেতিনি পবিত্র কুরআনের ত্রিশটি পারা আপনাদের বুকে ধারণ করার তওফীক দিয়েছেন। আপনাদের উপর তো কুরআনের হক আপনারা রমযান মাস ছাড়াই সারা বছর অন্তত এতটুকু করে পড়বেনযাতে কুরআন ইয়াদ থাকে।

একদা বাংলাদেশে আগত মেহমান হযরত মাওলানা হাফেয সলিমুল্লাহ খান (শায়খুল হাদীস) রাহ.কে আমাদের সামনে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর উস্তাযঅধমের কনিষ্ঠ বান্দাযাদা হাফেয সাঈদ আহমদ জিজ্ঞাসা করলহযরত! একজন আলেম হাফেযের কতটুকু করে কুরআন শরীফ পড়া উচিত।

উত্তরে হযরত ইরশাদ করলেনদৈনিক তিন পারা করে পড়বেন।

এখন চিন্তা করে দেখুনএত বড় হাফেয আলেমের পবিত্র মুখ থেকে শোনা গেলহাফেয আলেমের উপর কর্তব্যদৈনিক তিন পারা করে পড়া। অতএব হাফেয তালিবুল ইলমদের কাছে সবিনয় আরযÑ আপনারা পবিত্র রমযানে অন্তত দশ খতম কুরআন পড়ন। সাথে সাথে সারা বছর নিয়মিত তিন পারা তিলাওয়াত করুন।

আল্লাহ আপনাকে যে মহা নিআমত দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করুন।

وما علينا إلا البلاغ.

টীকা :

০১। অবশ্য এ ক্ষেত্রে একটি ছাড় হতে পারে। তা হল, যে অংশটুকু ভুল পড়া হয়েছে শুধু সে অংশটুকু দোহরানোই যথেষ্ট। পুরো দুই রাকাতে যতটুকু পড়া হয়েছে, সবটুকু না দোহরালেও খতম সম্পন্ন হয়েছে বলে ধর্তব্য হতে পারে ইনশাআল্লাহ।বান্দা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ