আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯৯৪৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি আমার বউকে মৌখিক ভাবে তিন তালাক দিয়েছি, কারণ আমি তার ব্যবহারে অখুশি ছিলাম, তিন তালাক দেওয়ার পর ঠিক ওই সময় আমাকে সে বলতেছিলো মুখে বলো দেও নাই, আমি ওই সময় বলছিলাম দেই নাই। আমি জানতে চাচ্ছি যে ওই কথা বলার কারনে কি তালাক হবে না? আমার বউ আমাকে মানসিক ভাবে অনেক কষ্ট দিচ্ছে সে বলতেছে তালাক হয়নি। আমাকে সঠিক মাসায়ালা টা জানালে খুব উপকার হবে।

২ নভেম্বর, ২০২১
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




সাংসারিক জীবনে তালাক একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। কেউ তালাকের অপব্যবহার করলে অথবা ভুল পন্থায় তা প্রয়োগ করলে একদিকে যেমন তা কার্যকর হয়ে যাবে, তেমনি উক্ত ব্যক্তি গুনাহগার ও হবে। তাই একজন বিবেকবান স্বামীর কর্তব্য হল তালাক বা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে খুবই সতর্কতার সাথে বিরত থাকা।
তালাক খুবই জঘন্য একটি শব্দ। হাদিসে একে নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে। এ শব্দটি এমন যে, নিয়ত থাকুক বা না থাকুক, রাগে বলুক আর ভালোবেসে বলুক, স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।
এ সম্পর্কে রাসূলসাল্লাল্লাহু (আ) ইরশাদ করেছেন, “তিনটি বিষয় এমন আছে যে, ইচ্ছেকৃত করলেও ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও তা ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল ১) তালাক, ২) বিবাহ এবং ৩) তালাকে রেজয়ী প্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। (ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ)
সুতরাং, এ কথার সারমর্ম হলো- রাগান্বিত অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যাবে।
স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য জরুরি বিয়ে, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের সকলবিধান ও মাসআলা ভালোভাবে শিক্ষকরা। বিশেষ করে স্বামীর কর্তব্য হল, তালাকের মাসআলা ও এর পরিণতি সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত না হয়ে মুখে কখনো তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। তবে যদি কোনো কারণে তালাক দেয় এবং এমনভাবে দেয় যে, তখন আর তাদের একসাথে বসবাস করা শরীয়তে বৈধ নয়। তাদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা। বিভিন্ন টাল-বাহানা বা অজুহাত দেখিয়ে কিংবা ভুল কথার উপর ভিত্তিকরে অথবা মূলঘটনা গোপন রেখে তাদের আর একসাথে বসবাস করা উচিত নয়। বিয়ে শুধু একটি সময়ের বিষয় নয়, বরং এটি সারাজীবনের বিষয়।
বাস্তবেই যদি তালাক পতিত হয়ে যায় এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যায়; কিন্তু এরপর ও যদি স্বামী স্ত্রী একসাথে বসবাস করে তবে তা হবে কবীরা গুনাহ এবং উভয়েই হবে জিনা বা ব্যভিচারের গুনাহে লিপ্ত।
মোটকথা- আপনারা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে, শরীয়ত নির্ধারিত পন্থা (হালালা) ব্যতীত আপনারা একে অপরের জন্য বৈধ হওয়ার আর কোনভাবে সুযোগ নেই।

والله اعلم بالصواب

মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন