আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

সুদ পরিশোধ করলে কি সুদের টাকার নির্মিত বাড়ী হালাল হয়ে যাবে?

প্রশ্নঃ ৯৬১৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে অথবা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তি নিয়ে যদি কোন ব্যবসা করা হয় এবং ওই লোন বা কিস্তি পরিশোধ করে দেওয়ার পরে ওই ব্যবসা আমার জন্য বৈধ হবে কিনা?, অথবা লোন বা কিস্তি নিয়ে যদি বাড়ি নির্মাণ করা হয় এবং পরবর্তীতে ওই লোন বা কিস্তি পরিশোধ করা হয়, তার পর ওই বাড়ি আমার জন্য বৈধ হবে কিনা?,এবং বাড়ির ভাড়া উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করা বৈধ হবে কিনা? তাড়াতাড়ি জানালে খুবই উপকৃত হবো।,

৩১ অক্টোবর, ২০২৩

Al Hadithah

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সুদ দেয়া এবং নেয়া উভয়ই কবিরা গোনাহ। কুরআন ও হাদীসে এ বিষয়ে কঠোরসব ধমকি এসেছে। সেই সাথে ভয়াবহ শাস্তির কথাও উদ্ধৃত হয়েছে।
সুতরাং এহেন পাপের সাথে জড়িত হওয়া কোনো মুসলমানের জন্য জায়েজ নাই। বাকি সুদী ঋণ নিয়ে যে বাড়ী বানানো হয়েছে তার কাজটি গোনাহ ও পাপের হলেও বিল্ডিংটিতে থাকা নাজায়েজ ও হারাম হবে না। কারণ, এখানে সুদ দেয়া হয়েছে। নেয়া হয়নি। তাই বাড়িটি নির্মাণে সুদের টাকা ব্যবহৃত হয়নি। বরং ঋণের টাকা ব্যবহৃত হয়েছে।
যেহেতু সুদ দেয়া এবং নেয়া দু’টিই গোনাহের কাজ। তাই কাজটি হারাম ও গোনাহের কাজ হলেও নির্মিত বাড়িটি হারাম ও নাজায়েজ হবে না।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَن جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥]

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। [সূরা বাকারা-২৭৫]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]

فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا فَأْذَنُوا بِحَرْبٍ مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَالِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ [٢:٢٧٩]
অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না। [সূরা বাকারা-২৭৯]

রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا، أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ أُمَّهُ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সুদের গুনাহর সত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মাকে বিবাহ (যেনা) করা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২৭৪, শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৫১৩১, মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-২২৫৯]

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَكَاتِبَهُ
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -সূদখোর, সূদ দাতা সূদের সাক্ষীদ্বয় ও সূদের (চুক্তি বা হিসাব) লেখককে অভিসম্পাত করেছেন। [সুনানে তিরমিজী-১/২২৯ হাদীস নং-১২০৬, সহীহ মুসলিম-২/৭২, হাদীস নং-১৫৯৮]

لأن القرض إعارة ابتداء، حتى صح بلفظها معاوضة انتهاء، لأنه لا يمكن الانتفاع به إلا باستهلاك عينه، فيستلزم إيجاب المثلي في الذمة، وهذا لا يتأتى في غير المثلي قال في البحر: ولا يجوز في غير المثلي، لأنه لا يجب دينا في الذمة ويملكه المستقرض بالقبض كالصحيح (رد المحتار، كتاب البيوع، باب المرابحة والتولية، فصل فى القرض-7/388)
(আহলে হক মিডিয়া থেকে ঈসৎ পরিবর্তিত)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৭০৭৬৬

সাউন্ড ইফেক্ট (Sound Effect) ব্যবহার করা জায়েজ?


২৮ আগস্ট, ২০২৪

কেরাণীগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৫৭৩১৭

নেশামুক্ত অ্যালকোহল মিশ্রিত পারফিউম, বডি স্প্রে, আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করার মাস'আলা


১১ মে, ২০২৪

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৭১৪৮১

মানুষের কঙ্কাল বিক্রি করার বিধান


২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জ ১৩৬১

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

৯১০৫৯

মৃত্যুর পর কি শরীর এর কোনো অঙ্গ মানুষকে দান করা যাবে


২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

Sylhet ৩১০০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy