আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯১৪৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহশায়েখ অনেকে বলে যে- "ধর্মের সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নাই, ধর্ম এক বিষয় আর রাজনীত ভিন্ন বিষয়" কথাটা কতটুকু সত্যি? এবং ইসলামী রাজনীতি সম্পর্কে কি বলে??

২ অক্টোবর, ২০২১
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি করা যাবে কি যাবে না? এই আলোচনা করার আগে ইসলামের সাথে রাজনীতির সম্পর্ক বুঝতে হবে। রাজনীতির সাথে ইসলামের সম্পর্ক জানতে হলে যে জ্ঞান প্রথমেই অর্জন করতে হবে সেটি হচ্ছে, "ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবন ব্যবস্থা"। জীবনের এমন কোন দিক নেই যে-বিষয়ে ইসলামের দিক্‌-নির্দেশনা পাওয়া যায় না। প্রতিদিন সকালে ঘুমভাঙার পর থেকে ঘুমানো পর্যন্ত, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি বিষয়ে পরিষ্কার গাইডলাইন প্রদান করা জীবন ব্যবস্থার নাম ইসলাম। রাজনীতি যেহেতু জীবনের বাইরের কোন বস্তু নয় সেহেতু পরিপূর্ন এই জীবন ব্যবস্থা রাজনীতিতেও আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করে।

কুরআনুল কারীমের বহু আয়াতে ইসলামী রাজনীতির মূলনীতিগুলো আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেছেন। বরং এই কথা তো অত্যন্ত জোরালো ভাবে দাবি করা যায় যে, "একমাত্র ইসলামেই রয়েছে রাজনীতির পরিপূর্ণ বিধি-বিধান। যা পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে ধর্ম ভিত্তিক নেই।"
এজন্যই বিধর্মী কোন ব্যক্তি ঈর্ষার শিকার হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা তুলেছে যে, রাজনীতির সাথে ইসলামের সম্পর্ক নেই। আসলে ওদের ধর্মের সাথে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।

وَاَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ الۡکِتٰبَ بِالۡحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡہِ مِنَ الۡکِتٰبِ وَمُہَیۡمِنًا عَلَیۡہِ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَہُمۡ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ وَلَا تَتَّبِعۡ اَہۡوَآءَہُمۡ عَمَّا جَآءَکَ مِنَ الۡحَقِّ ؕ  لِکُلٍّ جَعَلۡنَا مِنۡکُمۡ شِرۡعَۃً وَّمِنۡہَاجًا ؕ  وَلَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَجَعَلَکُمۡ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّلٰکِنۡ لِّیَبۡلُوَکُمۡ فِیۡ مَاۤ اٰتٰىکُمۡ فَاسۡتَبِقُوا الۡخَیۡرٰتِ ؕ  اِلَی اللّٰہِ مَرۡجِعُکُمۡ جَمِیۡعًا فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ فِیۡہِ تَخۡتَلِفُوۡنَ ۙ

এবং (হে রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমি তোমার প্রতিও সত্যসম্বলিত কিতাব নাযিল করেছি, পূর্বের তার কিতাবসমূহের সমর্থক সংরক্ষকরূপে। সুতরাং তাদের মধ্যে সেই বিধান অনুসারেই বিচার কর, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন। আর তোমার নিকট যে সত্য এসেছে তা ছেড়ে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না। তোমাদের মধ্যে প্রত্যেক (উম্মত)-এর জন্য আমি এক (পৃথক) শরীয়ত ও পথ নির্ধারণ করেছি। আল্লাহ চাইলে তোমাদের সকলকে একই উম্মত বানিয়ে দিতেন। কিন্তু (পৃথক শরীয়ত এজন্য দিয়েছেন) যাতে তিনি তোমাদেরকে যা-কিছু দিয়েছেন, তা দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন। সুতরাং তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা কর। তোমাদের সকলকে আল্লাহরই দিকে ফিরে যেতে হবে। অতঃপর যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছিলে সে সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন।
—আল মায়িদাহ - ৪৮

অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে:

اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَاَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَنَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَلِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ

তারা এমন যে, আমি যদি দুনিয়ায় তাদেরকে ক্ষমতা দান করি, তবে তারা নামায কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, মানুষকে সৎকাজের আদেশ করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে। সব পরিণতি আল্লাহরই হাতে।
—আল হাজ্জ্ব - ৪১

উদাহরণস্বরূপ এখানে দুটি আয়াত উধৃত হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন:

চিফ জাস্টিস হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী লিখিত
"ইসলাম ও রাজনীতি"।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর