আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কবর জিয়ারতের দোয়া

প্রশ্নঃ ৯১৩৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর কবর জিয়ারতের দোয়া টা একটু দিবেন প্লিজ বাংলা এবং আরবিতে।*হুজুর দ্বীনদার হতে গেলে কি কি করণীয় একটু জানাবেন প্লিজ। আমি ইসলামের শরীয়ত মেনে দ্বীনদার হতে চাই আমাকে একটু বিষয়গুলো জানাবেন প্লিজ।,

২১ জানুয়ারী, ২০২৫

লুটের চর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


১/ আরবি শব্দগুলো বাংলায় লিখে উচ্চারণ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়, তাতে শব্দের উচ্চারণ ভিন্ন হয়ে অর্থ পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও আপনার অনুরোধে এখানে একটি দোয়া এবং তার উচ্চারণ বাংলায় লিখে দেয়া হল, সাথে সাথে কবর জিয়ারতের সংক্ষিপ্ত নিয়ম দেয়া হলো, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখিত ব্যক্তির নিকট এই দোয়াটি সঠিক উচ্চারণসহ আরও বিস্তারিত জেনে নিবেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করেন—
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর; ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আ-সার।
অর্থ : হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন, তোমরা আমাদের আগে কবরে গিয়েছ এবং আমরা পরে আসছি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৩)
যেভাবে কবর জিয়ারত করবেন
কবরস্থানে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম জিয়ারতের দোয়া পড়বেন। এরপর কবরবাসীর ইসালে সওয়াবের নিয়তে দরুদ শরিফ ও বিভিন্ন সুরা ইত্যাদি পড়বেন। মৃতের বা কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।
হাদিসে কবর জিয়ারতের ক্ষেত্রে কিছু সুরার বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ হয়েছে। পাশাপাশি দরুদ শরিফের ফজিলতের কথাও এসেছে। তাই দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসি ও অন্য যেসব সুরা সহজ মনে হয়— সেগুলো পড়ে সওয়াব উপহার দেবেন।
কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে দোয়া উচিত নয়। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা চাই। আবার কেউ চাইলে হাত না তুলে মনে মনেও দোয়া করতে পারেন। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫০, কিতাবুল কারাহিয়্যা)

২/ আল্লাহ পাক কোরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ
وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ অর্থাৎ- হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও। (সূরা তাওবা- ১১৯ )
সুতরাং উক্ত আয়াতের নির্দেশনানুযায়ী আপনি প্রথমত হক্কানী-রাব্বানী, সুন্নাতের উপর আমলকারী এমন একজন আলেমে দ্বীনকে নির্বাচন করুন, যার মধ্যে (স্বাদেক্বীন) অর্থাৎ সত্যবাদিতার গুণ রয়েছে, যিনি কোরআন-হাদিস সম্পর্কে পারদর্শী হওয়ার সাথে সাথে বর্তমান যুগ সম্পর্কে সচেতন, যিনি উত্তম আখলাকের অধিকারি, যাকে দেখলে আপনার পরকালের কথা স্মরণ হয়। এমন একজন আলেমের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন, তার সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন, আপনার ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো থেকে শুরু করে সব বিষয়গুলো তার সাথে শেয়ার করুন, তার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন, তার পরামর্শানুযায়ি কাজ করুন। এতে করে অনেক ফায়দা হবে। ইনশাল্লাহ । সাথে সাথে নিচের কাজগুলোর উপরও আমল করুন- ১। সত্যবাদিতা অবলম্বন করুন ২। আমানতদারিতা রক্ষা করুন ৩। অঙ্গীকার পূর্ণ করুন ৪। মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করুন ৫। আত্মীয়তার সর্ম্পক বজায় রাখার প্রতি যত্নশীল হোন ৬। ধৈর্য্য, সহিষ্ণুতা ও বিনয় অবলম্বন করুন । উপরন্তু ইসলামে উত্তম আখলাকের অন্যতম বিষয় হচ্ছে চারিত্রিক পবিত্রতা। যা মানুষের সম্মান সংরক্ষণ এবং আল্লাহ পযর্ন্ত পৌছার রাস্তা সহজ করে দেয়। সুতরাং চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার প্রতি কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করুন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন- اضمنوا لي ستاً من أنفسكم أضمن لكم الجنة : اصدقوا إذا حدثتم ، وأوفوا إذا وعدتم ، وأدوا إذا ائتمنتم ، واحفظوا فروجكم ، وغضوا أبصاركم ، وكفوا أيديكم. অর্থাৎ-তোমরা আমার জন্য ছয়টি বিষয়ের জিম্মাদার হও। তাহলে আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হব। যখন তোমাদের কেউ কথা বলে সে যেন মিথ্যা না বলে। যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় তখন যেন খেয়ানত না করে। যখন প্রতিশ্রুতি দেয় তা যেন ভঙ্গ না করে। তোমরা তোমাদের দৃষ্টি অবনত কর। তোমাদের হস্তদ্বয় সংযত কর। তোমাদের লজ্জাস্থান হেজাফত কর।( মুসনাদে আহমাদ, বায়হাক্বী, মেশকাত, হাঃ নং -৪৮৭০) উপরোক্ত বিষয়গুলোর সাথে সাথে সাহাবায়েকেরামের জীবনীসহ আপনার নির্বাচিত আলেমের পরামর্শ অনুযায়ী আরো কিছু দ্বীনি বই-পুস্তকও অধ্যয়ন করুন। তবে এই সবগুলোবিষয়’ই নির্ভর করবে আপনার চিন্তা শক্তির উপর। সুতরাং উত্তম চরিত্র ও আখলাক গঠনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো অবসর ও একাকী সময়ে আপনি আপনার চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। কেননা মানুষের আখলাকের যত অবনতি ও অবক্ষয় সকল কিছুর শুরুটা হয় চিন্তাশক্তি নিয়ন্ত্রনহীন হওয়ার মাধ্যমে । সুতরাং অবসর ও একাকী সময়ে সকল প্রকার বাজে চিন্তা থেকে নিজের চিন্তাশক্তিকে হেফাজত করুন, সাথে সাথে উপরোক্ত বিষয়গুলোর উপর আমল করুন। আল্লাহ তা’আলা আপনাকে মানযিলে মাকাসিদে পৌঁছতে সহজ করে দিবেন, ‘ইনশাআল্লাহ’

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৬০৬৯

অমুসলিমরা কি জাহান্নামে চিরকাল থাকবে?


৯ জুলাই, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

১৮৯৪৮

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, পুরুষের জন্য রুপার আংটি পরার কি কুন পরিমাণ/পরিমাপ আছে কি আমি জতটুকু জানি ৬...

৮ জুন, ২০২২

জয়দেবপুর - টাঙ্গাইল মহাসড়ক

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৭৫৫৩

প্রেম করা হারাম কেন?


৬ জানুয়ারী, ২০২৩

সাভার

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪১৮৬

দুর্বল ঈমান শক্তিশালী করার আমল ও কৌশল


৩ জুন, ২০২৩

যশোর, Khulna, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy