আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

হিন্দু বাবা মায়ের সাথে মুসলিম সন্তানের আচরণ

প্রশ্নঃ ৮৭৪৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার মা বাবা যদি হিন্দু হয় আমি কি সম্পর্ক রাখতে পারবো ওনাদের সাথে? এতে কি কোনো গোনাহ হবে ?

১৮ অক্টোবর, ২০২৩
Kolkata

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


দুনিয়ার জীবনে তাদের সঙ্গে মা-বাবা হিসেবে আচরণ করবেন।
(আল্লাহ না করুক) কুফরীর উপর তাদের মৃত্যুবরণ হলে তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা যাবে না।
যারা কাফির, তারা আল্লাহর শত্রু। আল্লাহর শত্রুদেরকে বন্ধু বানাতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। দেখুন এই আয়াতটি-

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا عَدُوِّیۡ وَعَدُوَّکُمۡ اَوۡلِیَآءَ تُلۡقُوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ وَقَدۡ کَفَرُوۡا بِمَا جَآءَکُمۡ مِّنَ الۡحَقِّ ۚ یُخۡرِجُوۡنَ الرَّسُوۡلَ وَاِیَّاکُمۡ اَنۡ تُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ رَبِّکُمۡ ؕ اِنۡ کُنۡتُمۡ خَرَجۡتُمۡ جِہَادًا فِیۡ سَبِیۡلِیۡ وَابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِیۡ ٭ۖ تُسِرُّوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ ٭ۖ وَاَنَا اَعۡلَمُ بِمَاۤ اَخۡفَیۡتُمۡ وَمَاۤ اَعۡلَنۡتُمۡ ؕ وَمَنۡ یَّفۡعَلۡہُ مِنۡکُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ

হে মুমিনগণ! তােমরা যদি আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমার পথে জিহাদের জন্য (ঘর থেকে) বের হয়ে থাক, তবে আমার শত্রু ও তােমাদের নিজেদের শত্রুকে এমন বন্ধু বানিও না যে, তাদের কাছে ভালােবাসার বার্তা . পৌছাতে শুরু করবে, অথচ তােমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তারা তা এমনই প্রত্যাখ্যান করেছে যে, রাসূলকে এবং তােমাদেরকেও কেবল এই কারণে (মক্কা হতে) বের করে দিচ্ছে যে, তােমরা তােমাদের প্রতিপালক, আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছ। তােমরা গােপনে তাদের সাথে বন্ধুত্ব কর, অথচ তােমরা যা-কিছু গােপনে কর ও যা-কিছু প্রকাশ্যে কর আমি তা ভালােভাবে জানি। তােমাদের মধ্যে কেউ এমন করলে সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হল।
—আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - ১

প্রসঙ্গক্রমে পরের আয়াতগুলো শিক্ষনীয়।

اِنۡ یَّثۡقَفُوۡکُمۡ یَکُوۡنُوۡا لَکُمۡ اَعۡدَآءً وَّیَبۡسُطُوۡۤا اِلَیۡکُمۡ اَیۡدِیَہُمۡ وَاَلۡسِنَتَہُمۡ بِالسُّوۡٓءِ وَوَدُّوۡا لَوۡ تَکۡفُرُوۡنَ ؕ

তােমাদেরকে বাগে পেলে তারা তােমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং নিজেদের হাত ও মুখ বিস্তার করে তােমাদেরকে কষ্ট দেবে। তাদের কামনা এটাই যে, তােমরা কাফের হয়ে যাও।
—আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - ২

لَنۡ تَنۡفَعَکُمۡ اَرۡحَامُکُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ ۚۛ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ۚۛ یَفۡصِلُ بَیۡنَکُمۡ ؕ وَاللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ

কিয়ামতের দিন তােমাদের আত্মীয়- ' স্বজন ও তােমাদের সন্তান-সন্ততি তােমাদের কোন কাজে আসবে না। । আল্লাহই তােমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন। তােমরা যা-কিছু করছ। আল্লাহ তা ভালােভাবে দেখছেন।
—আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - ৩

قَدۡ کَانَتۡ لَکُمۡ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ فِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَالَّذِیۡنَ مَعَہٗ ۚ اِذۡ قَالُوۡا لِقَوۡمِہِمۡ اِنَّا بُرَءٰٓؤُا مِنۡکُمۡ وَمِمَّا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ۫ کَفَرۡنَا بِکُمۡ وَبَدَا بَیۡنَنَا وَبَیۡنَکُمُ الۡعَدَاوَۃُ وَالۡبَغۡضَآءُ اَبَدًا حَتّٰی تُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَحۡدَہٗۤ اِلَّا قَوۡلَ اِبۡرٰہِیۡمَ لِاَبِیۡہِ لَاَسۡتَغۡفِرَنَّ لَکَ وَمَاۤ اَمۡلِکُ لَکَ مِنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ رَبَّنَا عَلَیۡکَ تَوَکَّلۡنَا وَاِلَیۡکَ اَنَبۡنَا وَاِلَیۡکَ الۡمَصِیۡرُ

তােমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার সঙ্গীদের মধ্যে উত্তম আদর্শ আছে, যখন সে নিজ সম্প্রদায়কে বলেছিল, তােমাদের সঙ্গে এবং তােমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের উপাসনা করছ তাদের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তােমাদের (আকীদা-বিশ্বাস), অস্বীকার করি। আমাদের ও তােমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য শক্রতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়ে গেছে, যতক্ষণ না তােমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। তবে ইবরাহীম তার পিতাকে অবশ্যই বলেছিল, আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য মাগফিরাতের দুআ করব, যদিও আমি আল্লাহর সামনে আপনার কোন উপকার করার এখতিয়ার রাখি না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনারই উপর নির্ভর করেছি, আপনারই দিকে আমরা রুজু হয়েছি এবং আপনারই কাছে আমাদেরকে, ফিরে যেতে হবে।
—আল মুম্‌তাহিনাহ্‌ - ৪

তাফসীরঃ
অর্থাৎ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যদিও নিজ সম্প্রদায় ও জ্ঞাতী-গােষ্ঠীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ঘােষণা দিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রথম দিকে নিজ পিতার মাগফিরাতের জন্যদুআ করার ওয়াদাও করেছিলেন। তবে যখন তাঁর জানা হয়ে গেল তাঁর পিতা স্থায়ীভাবেই আল্লাহ তাআলার শত্রু এবং তার ভাগ্যে ঈমান নেই, তখন তিনি তার জন্য দুআ করা থেকেও ক্ষান্ত হয়ে যান। বিষয়টা সূরা তাওবায় (৯:১১৪) গত হয়েছে।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন