আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নবীর কাছে উম্মতের গুনাহ পেশ করা হয়?

প্রশ্নঃ ৭৭১৪৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফেরপস্তারা নবী সাঃকে তার কোন উম্মাত কি গুনাহ করছে এটাও জানায়? এমন কোন হাদিস আছে? আমি পড়েছি ফেরেস্তারা দুরুদ পৌছে দেয় কিন্তু একজন কে বলতে শুনলাম তার কোন উম্মত কি গুনাহ করছে সেটাও ওনাকে জানায়,

২৪ নভেম্বর, ২০২৪

HHMC+F৪৭ - Old Umm Al Quwain - Umm Al Quawain - সংযুক্ত আরব আমিরাত (AE)

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


بسم الله الرحمن الرحيم
বিষয়টি কুরআনের একটি আয়াত থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়,
فَکَیۡفَ اِذَا جِئۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍۭ بِشَہِیۡدٍ وَّجِئۡنَا بِکَ عَلٰی ہٰۤؤُلَآءِ شَہِیۡدًا ؕ؃
তাদের কি অবস্থা হবে যখন হাশরের মাঠে প্রত্যেক উম্মতের নবীদের নিজ নিজ উম্মতের নেক-বদ ও সৎ-অসৎ আমলের সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত করা হবে এবং যখন আপনিও নিজের উম্মতের সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আর বিশেষ করে সেই কাফির-মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহর আদালতে সাক্ষী দান করবেন যে, তারা প্রকাশ্যে সব মো’জেযা প্রত্যক্ষ করা সত্ত্বেও মিথ্যারোপ করেছে এবং আপনার তওহীদ ও আমার রিসালতে বিশ্বাস স্থাপন করেনি।
বুখারী শরীফে বর্ণিত আছে যে, হুযূর (সা) হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদকে লক্ষ্য করে বলেছেন, আমাকে কোরআন শোনাও। হযরত আবদুল্লাহ্ নিবেদন করলেন, আপনি কি আমার কাছ থেকে শুনতে চান অথচ কোরআন আপনারই উপর অবতীর্ণ হয়েছে ? হুযূর বললেন, হ্যাঁ, পড়। হযরত আবদুল্লাহ্ বলেন, অতঃপর আমি সূরা আন্-নিসা পড়তে আরম্ভ করলাম। যখন فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ পর্যন্ত পৌঁছান, তখন তিনি বললেন, এবার থাম। তারপর যখন আমি তাঁর দিকে চোখ তুলে তাকালাম, দেখলাম, তাঁর চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে। (সহীহ বুখারী হাদীস নং: ৪২২৭, আন্তর্জাতিক নং: ৪৫৮২)
আল্লামা কুস্তলানী (র) লিখেছেন, এ আয়াত পাঠে হুযূর (সা)-এর সামনে আখিরাতের দৃশ্যাবলী উপস্থিত হয়ে যায় এবং স্বীয় উম্মতের শৈথিল্যপরায়ণ ব্যক্তিদের কথা স্মরণ হয়। আর সে জন্যই তাঁর চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে।
জ্ঞাতব্যঃ কোন কোন মনীষী বলেছেনঃ هَؤُلَاءِ - এর দ্বারা রাসূলে করীম (সা)-এর সময়ে উপস্থিত কাফির-মুনাফিকদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আবার অনেকের মতে কিয়ামত পর্যন্ত আগত গোটা উম্মতের প্রতিই এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ, কোন কোন রেওয়ায়েত দ্বারা বোঝা যায় যে, হুযূরের উম্মতের যাবতীয় আমল হুযূরের সামনে উপস্থিত করা হতে থাকে। (তাফসীরে মারেফুল কুরআন সূরা নিসা ৪১ নং আয়াত দ্রঃ)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা নবীজী এর সময়কার উম্মতদের সাক্ষীর কথা স্পষ্ট ‍বুঝা যায়। তবে প্রশ্ন থেকে যায় যে, তিনার ইন্তেকালের পর কেয়ামত পর্যন্ত আগত উম্মতের কৃতকর্মের ব্যাপারে নবীজি (ﷺ) কিভাবে সাক্ষী দিবেন?
১- উত্তরঃ আল্লাহ তা‘আলা নবীজিকে অবগত করেই সাক্ষী নিবেন। এবং তিনি কিভাবে নবীজিকে অবগত করাবেন আল্লাহ তা‘আলা অস্পষ্ট রেখেছেন সুতরাং তা অস্পষ্ট থাকাই উত্তম এর কারণের পিছনে না পড়া উত্তম।
২- উত্তরঃ এটি বর্ণনা করেছেন মুহাদ্দিসিন ও মুফাসসিরীন কেরামগণ। যে নবীজি (ﷺ) এর নিকট উম্মতের অবস্থা/আমলনামা পেশ করা হয়। সে ভিত্তিতে তিনি উম্মতের নেক আমল এবং বদ আমলের অবস্থা সম্পর্কে অবগত হন।
রওজা মোবারক এ উম্মতের আমল পেশ করা বিষয়ে হাদীস এবং আছার বর্ণিত আছে,
عن ابنِ مسعود رضی اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم حیاتی خیر لکم تحدثون ویحدث لکم ووفاتی خیر لکم تعرض علیّ أعمالکم فما رأیت من خیر حمدت اللّٰہ علیہ وما رأیت من شر استغفرت اللّٰہ لکم.(قال الحافظ الھیثمی فی مجمع الزوائد:9/24 رجالہ رجال الصحیح․ رواہ البزار فی مسندہ کما فی کشف الأستار عن زوائد البزار: 1/397 إسناد رجالہ رجال الصحیح․ قال الحافظ السیوطی فی الخصائص الکبریٰ: 2/281 سندہ صحیح)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণনা করেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার জীবিত থাকাও তোমাদের জন্য এদিক থেকে উত্তম যে, তোমাদের কোন নতুন মাসআলা জানার প্রয়োজন হলে তার সমাধান এসে যায়। এবং আমার দুনিয়া থেকে চলে যাওয়াও এদিক থেকে উত্তম যে, (আমার মৃত্যুর পর) তোমাদের আমলনামা আমার কাছে পেশ করা হবে। যদি তাতে নেক আমল দেখতে পাই তাহলে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করব। যদি তাতে বদ আমল দেখতে পাই তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব।
تعرض الأعمال یوم الاثنین والخمیس علی اللّٰہ، وتعرض علی الأنبیاء وعلی الأباء والأمہات یوم الجمعة، فیفرحون بحسناتہم، وتزداد وجوھھم بیاضاً وإشراقاً، فاتقوا اللّٰہ ولا تؤذوا موتاکم․“(الجامع الصغیر وزیادتہ، رقم الحدیث:6195)
فإن أعمال أمتہ علیہ الصلاہ والسلام تعرض علیہ بعد موتہ (روح المعانی، النساء، ذیل آیت:41)
”فإنہ یحتمل أن یخص نَبِیُّنَا بما یعرض علیہ کل یوم ویوم الجمعة مع الأنبیاء علیہ وعلیہم أفضل الصلاة والسلام“․(تفسیر ابنِ کثیر، النساء، ذیل آیت:41)

حکیم الامّت حضرت مولانا اشرف علی تھانوی رحمة الله علیہ حضور صلی الله علیہ وسلم پر اعمال کے پیش ہونے پر ایک سوال کا جواب دیتے ہوئے مختلف احادیث و آثار نقل کرنے کے بعد فرماتے ہیں:

”اس کے بعد جواب معروض ہے کہ یہ مضمون حدیثِ صحیح میں وارد ہے کہ رسول صلی الله علیہ وسلم پر بعد از وفات امت کے اعمال پیش ہوتے ہیں، نیک اعمال کو دیکھ کر آپ خوش ہوتے ہیں اور گناہوں کو دیکھ کر استغفار فرماتے ہیں، لیکن اس روایت میں کوئی خاص دن مذکور نہیں، بلکہ ایک ضعیف روایت سے معلوم ہوتا ہے کہ انبیاء علیہم السلام اور والدین کے سامنے جمعہ کے دن امت کے اور اولاد کے اعمال پیش کیے جاتے ہیں“۔(إمداد الأحکام، جلد:1، ص:162)
প্রিয় প্রশ্নকারী বোন! দরূদের বিষয়টি যেমন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তেমনি আমল নামার বিষয়টিও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে প্রিয় নবীজী (ﷺ) এর খাঁটি উম্মত হওয়ার তাওফিক দান করুক। গুনাহমুক্ত জীবন দান করুক। আমীন।
والله اعلم بالصواب

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৯৩২৮৩

বছরের শুরু শেষ নেসাব ঠিক ছিলো, মাঝে যে সম্পদ বেড়েছে তার যাকাতের জন্য বৎসর পূর্ণ হতে হবে?


৫ মার্চ, ২০২৫

Mahini

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৯০৫৮৩

ভিন্ন দেশ থেকে ৩০ রোযা রেখে বাংলাদেশে গেলে রোযা রাখতে হবে? রাখলে ৩১টা হয়ে যায়। করণীয় কি?


২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

대한민국 경기도 파주시 월롱면 통일로৬২০번길 ৮৯-৫৩ (KR)

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৫৭৪৫

ইল্লাল্লাহ জিকির করার বিধান


২০ জানুয়ারী, ২০২৫

কালিয়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৮০০৩৪

সাহাবীর নামে মায়ের অসন্তুষ্টির মিথ্যা গল্প!!


৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy