আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৬৯৪৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ভাই সালাতের পাশাপাশি কোন আমল বা দোয়া করলে আল্লাহ পাপ বা গুনা ইত্যাদি ক্ষমা করেন। আমি কিভাবে বুঝব যে আমার দোয়া বা সালাত আল্লাহ দরবারে কবুল হইছে কি না। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করছে কি না?

১ জুলাই, ২০২১
চিলমারী

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


السلام عليكم ورحمة الله وبركاته



তাওবাহ এর নিয়তে দু'রাকাআত নামায পড়ার পর আল্লাহ তাআলার কাছে অতীত গুনাহের জন্য খাঁটি দিলে তাওবাহ করা চাই।

খাঁটি দিলে তাওবাহ করার জন্য-
ক. পূর্বের কৃত গুনাহের ব্যাপারে অনুশোচনা ও অনুতপ্ত হওয়া।
খ. এই মুহূর্তে থেকে সেসব গুনাহ পরিত্যাগ করা।
গ. ভবিষ্যতে এ ধরনের গুনাহ না করার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
ঘ. আল্লাহর হক নষ্ট করে থাকলে সেগুলো কাযা করা। যেমন নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, মান্নত, কুরবানী ইত্যাদি।
ঙ. কোন মানুষের হক নষ্ট করে থাকলে তার পাওনা তাকে পরিপূর্ণ পৌঁছে দেয়া এবং ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। ঐ ব্যক্তিকে পাওয়া না গেলে তার ওয়ারিশদের কাছে পৌঁছে দেয়া। এটুকুও সম্ভব না হলে ঐ ব্যক্তির নামে সমপরিমাণ সম্পদ আল্লাহর রাহে সাদাকাহ করে দেয়া।
এতে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা বান্দার তওবাহ কবুল করার জন্য ক্ষমার হাত প্রসারিত করে আছেন।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عُبَيْدَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا ‏"‏ ‏.‏

আবূ মূসা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রাতে আল্লাহ তা‘আলা তার নিজ দয়ার হাত প্রসারিত করেন যেন দিবসের অপরাধী তার নিকট তাওবাহ্‌ করে। এমনিভাবে দিনে তিনি তার নিজ হাত প্রশস্ত করেন যেন রাতের অপরাধী তার নিকট তাওবাহ্‌ করে। এমনিভাবে দৈনন্দিন চলতে থাকবে পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত।

—সহিহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৮৮২


সত্যি সত্যি যদি আমরা আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নেই, আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করবেন।
তওবাহ কবুল হওয়ার একটি নিদর্শন হল-
অন্তর প্রফুল্ল হবে। ইবাদত-বন্দেগির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে। গুনাহের প্রতি ভয়-ভীতি, আতঙ্ক ও আনাগ্রহ জন্মাবে।

প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় অত্যন্ত আন্তরিকতা ও দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে তিনবার তিনবার সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পড়ুন, আল্লাহ তাআলা গুনাহ মাফ করে দেবেন।

সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার :

(اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ

হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার বান্দা। আমি তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকারের উপর সাধ্যানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। আমি অনিষ্টকর যা কিছু করেছি তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উপর তোমার যে নিয়ামত আছে তার স্বীকৃতি দিচ্ছি। তোমার নিকট আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও; কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর