আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মানসুখ আয়াত অস্বীকার করলে কাফের হয়ে যাবে?

প্রশ্নঃ ৬৮৭০৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার জানার বিষয় হল কিছু আয়াত মানসুখ অর্থাৎ এক আয়াত দ্বারা অন্য আয়াত রহিত হয়ে গেছে,এখন কোন ব্যক্তি যদি ওই আয়াতগুলো অস্বীকার করে তাহলে কি সে কাফের হয়ে যাবে? না তার ঈমান ভয় থাকবে? দলিলসহ জানালে উপকৃত হব।

২৪ নভেম্বর, ২০২৪
Keraniganj

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআন আল্লাহ তা'আলার নাযিলকৃত কিতাব। মানুষের জন্য জীবন বিধান। স্রষ্টা সৃষ্টির জন্য যা ভালো মনে করেন তাই করতে পারেন। এটি স্রষ্টার সম্পূর্ণ ইখতিয়ারাধিন। প্রশ্নোল্লেখিত বিষয়ে তিনি বলেন, مَا نَنۡسَخۡ مِنۡ اٰیَۃٍ اَوۡ نُنۡسِہَا نَاۡتِ بِخَیۡرٍ مِّنۡہَاۤ اَوۡ مِثۡلِہَا ؕ اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ আমি যখনই কোনও আয়াত মানসূখ (রহিত) করি বা তা ভুলিয়ে দেই, তখন তার চেয়ে উত্তম বা সে রকম (আয়াত) আনয়ন করি। তোমরা কি জান না, আল্লাহ সকল বিষয়ে ক্ষমতা রাখেন? (সূরা বাকারাহ, আয়াত ১০৬)

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকিদা হল, কুরআনে তিন ধরনের নসখ (রহিতকরন) হয়েছে। আর এটি সম্পূর্ণ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকেই হয়েছে।
(১) কোন আয়াতের বিধান বাতিল করে তার তিলাওয়াত বাকি রাখা হয়েছে। যেমন,
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجاً وَصِيَّةً لِّأَزْوَاجِهِم مَّتَاعاً إِلَى الْحَوْلِ (الآیة)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَاجَيْتُمُ الرَّسُولَ فَقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَةً (الآیة)

(২) তিলাওয়াত রহিত করে বিধান বাকি রাখা হয়েছে। যেমন,
یروی عن عمیر -رضي اللہ عنہ- أنہ قال: کنا نقرأ آیة الرجم: الشیخ والشیخة إذا زنیا فارجموھما البتة نکالا من اللہ واللہ عزیز حکیم ۔

(৩) তিলাওয়াত এবং বিধান উভয়টি রহিত করা হয়েছে।
فھو ما ورت عائشة -رضي اللہ عنھا- إن القرآن قد نزل في الرضاع بعشر معلومات ثم نسخن بخمس معلومات فالعشر مرفوع التلاوة والحکم جمیعا والخمس مرفوع التلاوة باقي الحکم (تفسیر کبیر: ج۳ ص۲۰۹، ط بیروت)

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই! কুরআনের অসংখ্য জায়গায় এমন নসখ হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় হয়েছে। তিনি বান্দার জন্য উপযুক্ত বিধান উপযুক্ত সময়ে দিয়েছেন আবার তিনি রহিতও করেছেন। যিনি স্রষ্টা তিনিই এসব করতে পারেন। সুতরাং আয়াতে মানসুখাহ (যে সমস্ত আয়াতের তিলাওয়াত বা বিধান রহিত করা হয়েছে) তার ব্যপারে ঠিক তেমনই আকিদা রাখা উচিত, যেমনটি সালাফরা রেখেছেন। কোন সাহাবা বা তাবেয়ীন, সালফে সালেহীন থেকে আয়াতে মানসুখা অস্বীকার করার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না। তাই আমাদেরও এর থেকে বিরত থাকা উচিত। কেউ যদি কুরআনে থাকা কোন আয়াত অস্বীকার করে সে ঈমানের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে।

ইমাম কুরতুবী স্বীয় তফসীরে বলেনঃ
مَعْرِفَةُ هَذَا الْبَابِ أَكِيدَةٌ وَفَائِدَتُهُ عَظِيمَةٌ، لَا يَسْتَغْنِي عَنْ مَعْرِفَتِهِ الْعُلَمَاءُ، وَلَا يُنْكِرُهُ إِلَّا الْجَهَلَةُ الْأَغْبِيَاءُ
(নসখ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা খুবই জরুরী এবং এর উপকারিতা অনেক। আলিমগণ একে উপেক্ষা করতে পারেন না। একমাত্র মূর্খ ও নির্বোধ ছাড়া কেউ নস্থ অস্বীকার করতে পারে না।) সূরা বাকারা ১০৬ নং আয়াত দ্র:।

المنسوخ إما أن یکون ھو الحکم فقط أو التلاوة فقط أو ہما معًا (تفسیر کبیر: ج۳ ص۲۰۸، ط بیروت)

ویکفر إذا أنکر آیةً من القرآن". ( البحر الرائق : باب أحکام المرتدین : 5/205)

"أنکر آیةً من القرآن کفر". ( شرح الفقه الأکبر لملا علي القاری ص: 167)(وكذا في الفتاوى الهندية، 2/266 رشیدیه) فقط
বিস্তারিত জানতে পড়ুন, https://shorturl.at/UIU2A

والله أعلم بالصواب

والله اعلم بالصواب

মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর