আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৬৭১৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সালাতুল জুমআ এর নামাজ কত রাকায়াত এবং কি কি৷?,

১৮ জুন, ২০২১

বামনা - আমুয়া - কাঠালিয়া সড়ক

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


السلام عليكم ورحمة الله وبركاته



চার রাকাআত সুন্নাত মুয়াক্কাদাহ।
দু'রাকাআত ফরয।
চার রাকাআত সুন্নাত।
এরপর আবার দু রাকাত সুন্নত।

জুমআর সুন্নত সম্পর্কে হাদীসগুলো তুলে ধরা হচ্ছে:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:

১. হযরত আবূ হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন:

عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ مَنِ اغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ خُطْبَتِهِ ثُمَّ يُصَلِّىَ مَعَهُ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى وَفَضْلَ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ . أخرجه مسلم (٨٥٧)

অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি গোসল করলো, অতঃপর জুমআয় আসলো, এবং তৌফিক অনুসারে নামায পড়লো, এরপর ইমাম খুতবা শেষ করা পর্যন্ত চুপ রইলো এবং তার সঙ্গে নামায আদায় করলো তার পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৮৫৭।

২. হযরত সালমান ফারসী রা. বলেছেন:

قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ ثُمَّ يَخْرُجُ فَلَا يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الْإِمَامُ إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الْأُخْرَى. أخرجه البخاري (رقم ৮৮৩) وفي رواية له: ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ أَنْصَتَ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি জুমআর দিন গোসল করে, সাধ্যমতো পবিততা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে কিংবা ঘরে থাকা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর ঘর থেকে বের হয় এবং দুজনকে আলাদা না করে (অর্থাৎ দুজনের মাঝখানে না বসে), এরপর তাওফিক মতো নামায পড়ে, অতঃপর ইমাম যখন খুতবা দেয় তখন চুপ থাকে, তাহলে অন্য জুমআ পর্যন্ত তার পাপ ক্ষমা করা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮৩) বুখারী শরীফের অপর এক বর্ণনায় আছে, অতঃপর ইমাম (খুতবার উদ্দেশ্যে) বের হলে চুপ থাকে। (হাদীস নং ৯১০)

৩. এ মর্মে হযরত নুবায়শা আল হুযালী রা. থেকে আরেকটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

فَإِنْ لَمْ يَجِدْ الْإِمَامَ خَرَجَ صَلَّى مَا بَدَا لَهُ

অর্থাৎ যদি ইমামকে বের হতে না দেখে তবে যে পরিমাণ ইচ্ছা নামায পড়ে। .... (মুসনাদে আহমদ, ৫খ. ৭৫পৃ.)

৪. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বর্ণিত অপর একটি হাদীসে জুমআর পূর্বে নামায পড়ার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বলেছেন, ثم ركع ما شاء أن يركع অর্থাৎ তার যে পরিমাণ ইচ্ছা রুকু (নামায আদায়) করে। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৭৬৮)

এসব হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে নামায পড়তে উৎসাহিত করেছেন। এসব হাদীস পেশ করলে ঐ সব বন্ধু সুর পাল্টে বলেন, হ্যাঁ, নামায তো আছে, তবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নেই। অথচ মুয়াক্কাদা- গয়র মুয়াক্কাদা ফকীহগণের পরিভাষা। ফিকাহ শাস্ত্র ও ফকীহগণের কোন গুরুত্ব তাদের কাছে নেই। তারা তো দেখবেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে উৎসাহিত করেছেন কি না। তিনি উৎসাহিত করে থাকলে তারাও উৎসাহিত করবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎসাহিত করেছেন এমন বিষয়কেই তো সুন্নত বলা হয়। চাই তা মুয়াক্কাদা হোক বা গয়র মুয়াক্কাদা।

আসলে কোন আমলকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা রাতিবা আখ্যা দেওয়া মুজতাহিদ ফকীহগণের ইজতিহাদ বা সুচিন্তিত মত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক কোন আমলের প্রতি উৎসাহ প্রদান, উক্ত আমলের উপর তাঁর নিজের পাবন্দি ও সাহাবায়ে কেরামের আমল ও গুরুত্বারোপের আলোকেই ফকীহগণ উক্ত পরিভাষা ব্যবহার করে থাকেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে এই সুন্নতের প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তা পেছনের হাদীসগুলো থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাঁর নিজস্ব আমল এবং তাঁর সাহাবীগণের নির্দেশ ও আমল সংক্রান্ত হাদীসগুলো এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। তার আগে হাদীসশাস্ত্রবিদদের একটি সর্বস্বীকৃত মূলনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। নীতিটি তারাবীর আলোচনায় সবিস্তারে আসছে। তা হলো, কোন হাদীস যদি একাধিক সনদ বা সূত্র্রে বর্ণিত থাকে, আর পৃথক পৃথক ভাবে সবগুলো সূত্র দুর্বল হয়, তথাপি সেগুলোর সমষ্টি মিলে হাসান স্তরে উন্নীত হয় এবং প্রমাণযোগ্য বলে বিবেচিত্র্র হয়। পরিভাষায় এটাকেই হাসান লিগায়রিহী বলে। আর তদনুযায়ী সাহাবীগণের আমল পাওয়া গেলে তা আরো শক্তিশালী হয়। আর যদি মূল হাদীসটিরই কোন শক্তিশালী সনদ থাকে তবে তো কোন কথাই নেই। আলোচ্য বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল সম্পর্কে একাধিক হাদীস রয়েছে। সূত্র ও সনদের দিক থেকে এর কোন কোনটি বেশ শক্তিশালী। সেই সঙ্গে রয়েছে বহু সাহাবীর আমল। নিম্নে এগুলো তুলে ধরা হলো।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২০৬৬৯

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ক্বাবলাল জুমার কোন সুন্নাত সালাত আছে কি?হাদিস সহ জানতে চাই?

২১ জুলাই, ২০২২

বিশ্বম্ভরপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,

১৭৩৯২

তিন জুমা আদায় না করলে কি মানুষ কাফের হয়ে যায়?


১৮ অক্টোবর, ২০২৩

Tarumi, Kobe, Hyogo, Japan

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

১৩১০৬

জুমার নামাজ কত রাকায়াত


২৮ নভেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৪২৯৬০

যেখানে মসজিদ নেই সেখানে ঘরে জুমার নামাজের বিধান


১৬ অক্টোবর, ২০২৩

Racibórz, County Raciborski, Silesian, Poland

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy