প্রশ্নঃ ৬৬৫৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আস্সালামু ওয়ালাইকুম১) আমি এখন নিয়মিত নামাজ পড়ার চেষ্টা করছি। বলতে গেলে ৫ ওয়াক্তই পড়ছি। আমি কিছুদিন হলো জেনেছি সুন্নত মুয়াক্কাদা না পড়লে গুনাহ হয়। আবার ফরজ বাদ গেলে তার কাযা পড়ে নিতে হয়। এখন বিষয়টা হচ্ছে আমার নামাজের প্রাপ্ত বয়স হওয়ার পর আমি ঠিকমতোন নামাজ পড়তাম না পড়লেও ৫ ওয়াক্ত না। এখন আমি চাচ্ছি আগের নামাজ গুলোর কাযা পড়তে। কিন্তু বুঝতেছি না কোন সময়ের নামাজ থেকে কাযা হবে আমার নামায? আবার মাসিক ও হয়। আমি কিভাবে কোন সময়কে কেন্দ্র করে কাযা নামাজ আদায় করা শুরু করবো? আর কিভাবে বুঝবো আমার জিবনের সব কা্যা নামাজ আদায় করা হয়ে গেছে?২) যদি কোনো দিনের ইশার নামাজ + বিতরের নামাজ এবং তার পরের দিবসের ফজরের নামাজ মিস হয়ে যায় তাহলে কিভাবে কাযা আদায় করতে হবে? নিয়ম টা জানতে চাচ্ছি কবে এবং কখন।৩) কেউ যদি কুরআন শরীফের অনুবাদ পড়ে জানার জন্যে সেটাও কি কুরআন খতম বলে গন্য হবে? কুরআন খতমের পর যে দুয়া করতে হয় সেখানে কি আল্লাহর কাছে জীবিত বাবা মা এর জন্যে কিছু চাওয়া যাবে?৪) কাউকে পছন্দ করলে এবং তাকে হালাল উপায়ে পাওয়ার জন্যে কোনো আমল করা যায়? করা গেলে তা কি তা জানতে চাই। ৫) অনেকে বিপদের সময় বলে ৫/১০/১৫ বার দুয়া ইউনুস অথবা যে কোনো দুয়া পড়ে দিতে এটা কি বিদ'আত বলে গন্য হয়?৬) বাবা মা ছাড়া অন্য কারো জন্যে দুয়া করা কি ইসলামে নিষিদ্ধ? এমনকি নিজের ভাই বোনের জন্যে ও? আমার চাচু এক মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিল সেখানে নামাজ শেষে এটাই বলা হয়েছিল যে আমরা সন্তানরা বাবা মা ছাড়া কারো জন্যে দুয়া করবো না, দুয়া করলে তা বিদআত হিসেবে গন্য হবে।তাই জানতে চাচ্ছি কথাটা কতোটুকু সত্য।আশা করি আমার সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমার জ্ঞানের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১. পাঁচ ওয়াক্ত নামায জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যত্নের সঙ্গে ওয়াক্ত মতো আদায় করুন।
যখন থেকে আপনার মাসিক আরম্ভ হয়েছে তখন থেকে আপনি প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন। সেদিন থেকে পরিপূর্ণরূপে নামাজ ধরা পর্যন্ত হিসেব করুন, মোট কত বছর ফজর নামায পড়া হয়নি? খাতায় লিপিবদ্ধ করুন। এরপর (হারাম ওয়াক্ত বাদ দিয়ে) দিনে রাতে যখনই সুযোগ পাওয়া যায় ফজর নামায পড়তে আরম্ভ করুন।
এভাবে নিয়ত করুন, আমার জীবনের প্রথম যে ফজর নামায আমার যিম্মায় রয়েছে সেটি পড়ছি।
এভাবে পড়তে পড়তে হিসাব রাখবেন। যখন মনে হবে সবগুলো পড়া হয়েছে, তখন যোহর নামায পড়তে শুরু করুন। এভাবে সবগুলো ওয়াক্ত শেষ করুন। প্রয়োজনে দু-এক বছর অথবা তিন-চার বছর সময় লাগতে পারে। লাগুক।তারপরও নামাযগুলো নিজের জিম্মাদারি থেকে ফারেগ করুন।
২. প্রথমে চার রাকাআত ইশার ফরয, এরপর তিন রাকাআত বিতর, এরপর দু'রাকাআত ফজর পড়বেন।
উল্লেখ্য, আজকের দিনের ফজর নামায যোহরের আগে কাযা পড়লে দুই রাকাআত সুন্নত সহ পড়বেন। অর্থাৎ দুই রাকাআত সুন্নত পড়ে তারপর দুই রাকাআত ফরয পড়বেন। ফজরের কাযা যোহরের পরে পড়লে ফজরের সুন্নত পড়তে হবে না।
৩. কুরআনুল কারীমের শুধু অনুবাদ পড়লে সওয়াব আছে। কিন্তু তিলাওয়াতের সময় যে রকম প্রতি হরফে নেকী হয় সেভাবে হবে না।
কুরআনুল কারীম খতমের পর যেকোন জায়েয দোয়া কবুল হয়।
অতএব জীবিত মা-বাবার সুস্থতা, নিরাপত্তা, ঈমানদারী ও হিদায়াতের জন্য দোয়া করতে পারবেন।
৪. আল্লাহ তাআলার কাছে এভাবে দোয়া করুন।
হে আল্লাহ ! ঐ ছেলেটি যদি আমার ইহজীবন পরজীবনে কল্যাণকর হয়, তবে তাকে আমার জন্য মিলিয়ে দাও এবং কল্যাণ করো।
আর যদি তার সঙ্গে আমার কল্যাণ না থাকে, তবে তার থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দাও। আমার থেকেও তাকে দূরে সরিয়ে দাও এবং যেখানে কল্যাণ আছে সেখানে সহজে ব্যবস্থা করে দাও।
৫. দোয়া ইউনুস কুরআনুল কারীমের শেখানো একটি দোয়া। বিপদে পড়ে ইউনুস আলাইহিস সালাম এই দোয়া করে আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে নাজাত লাভ করেছেন।
আপনি আমি এই দোয়া পড়ে অবশ্যই আল্লাহর কাছ থেকে বিপদ মুক্তি পেয়ে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
৬. আল্লাহ তাআলা সকলের মালিক। সকলের রব। সকলের স্রষ্টা। সবকিছু আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে চেয়ে নিতে হবে।
আল্লাহ তাআলার কাছে চাইলে আল্লাহ খুশি হন। না চাইলে রাগান্বিত হন।
পিতা-মাতা যেমন দোয়ার মুহতাজ। অন্যান্যরাও দোয়ার মুহতাজ। যে কারো জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করতে পারবেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ওমর এর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন