কাজা রোজা রেখে নফল রোজা আদায়ের বিধান
প্রশ্নঃ ৬৪৫৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর এক মহিলা আত্মীয় আমাকে প্রশ্ন করতেছেন যে তার কিছু ফরজ রোজা রয়েগেছে এখন সে নফল রোজা করতে চায় । এখন তার কথা হল যে সে কোনটা আগে করবে? ফরজ রোজার আগে যদি নফল রোজা করে তাহলে নফল রোজা কি হবে ?হুজুর রোজা চলাকালীন অবস্থায় আমি আমার চাচা চাচিকে দেখছি তারা একসাথে ঘুমিয়ে রয়েছে । এখন প্রশ্ন হল যে আমি অন্যান্য হুজুরদের কাছ থেকে শুনেছি তারা বলেছেন যে রোজা অবস্থায় স্ত্রী স্বামী যেন এক জায়গায় না থাকে অর্থাৎ একসাথে যেন দিনের বেলায় না ঘুমায়। এখন এই যে আমি আমার চাচা চাচিকে যে একসাথে শুয়ে থাকা দেখলাম এই বিষয়ে হাদিস ও কোরআনের সমাধান কি ?আজকের শেষ প্রশ্ন হল যে । গ্রামের মধ্যে আমি একদিন দেখলাম যে এক হুজুর মসজিদে নামাজ পড়াচ্ছে এখন সে প্রথম রাকাতে লিই-লাফি কুরাইশ সূরা পড়ছে আর দ্বিতীয় রাকাতে ইন্না আতাইনা পড়েছে এখন পরে গ্রামেরই এক হুজুর এসেছে এমন টা কি জন্য করলে এরকম করা নিষেধ তুমি এরকম কেন করলে এখন আমার প্রশ্ন হল যে, এরকম করাটা কি ভুল হয়েছে না কি কারণ হতে পারে বাঁচার জন্য কি নামাজ হবে কি হবে না এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানালে অনেক উপকৃত হতাম এবং গ্রামের মানুষ রাও অনেক উপকৃত হত।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১. কাজা রোযা না শেষ না করে নফল রোযা রাখা যাবে না, এমন কোন মাসআলা নেই। বিশেষত শাওয়ালের ছয় রোযা রাখার জন্য শাওয়াল মাসই সময়। কাজা রোযাগুলো আদায় করার জন্য সামনে আর এগারো মাস সময় রয়েছে। এখানে এই যুক্তি ঠিক নয় যে কাযা রোযা ফরয। ফরয না করে নকল করা যাবে না।
২. নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এমন আস্থা থাকলে রোযা অবস্থায় স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে ঘুমাতে অসুবিধা নেই।
حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أَبِي سَلَمَةَ، حَدَّثَتْهُ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ قَالَتْ حِضْتُ وَأَنَا مَعَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم فِي الْخَمِيلَةِ، فَانْسَلَلْتُ فَخَرَجْتُ مِنْهَا، فَأَخَذْتُ ثِيَابَ حِيضَتِي فَلَبِسْتُهَا، فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنُفِسْتِ ". قُلْتُ نَعَمْ، فَدَعَانِي فَأَدْخَلَنِي مَعَهُ فِي الْخَمِيلَةِ. قَالَتْ وَحَدَّثَتْنِي أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ، وَكُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ مِنَ الْجَنَابَةِ.
উম্মু সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শায়িত অবস্থায় আমার হায়েয দেখা দিল। তখন আমি চুপিসারে বেরিয়ে এসে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। আল্লাহ্র রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে ডেকে নিয়ে তাঁর চাদরের নীচে স্থান দিলেন। বর্ণনাকারী যায়নাব (রহঃ) বলেনঃ আমাকে উম্মু সালামা (রাঃ) এও বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা রাখা অবস্থায় তাকে চুমু খেতেন। [উম্মে সালামা (রাঃ) আরও বলেন] আমি ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র হতে পানি নিয়ে জানাবাতের গোসল করতাম।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২২
৩. ভুলক্রমে এমনটি করে থাকলে নামাযের কোন ক্ষতি হয়নি। ইচ্ছাকৃত করলে মাকরুহ হবে। কিন্তু নামায হয়ে গেছে।
নামাযের মধ্যে কিরাতের ক্ষেত্রে কুরআনুল কারীমের ধারাবাহিকতা অর্থাৎ বিন্যাস ঠিক রাখা চাই। এর বিপরীত করা মাকরূহ।
নামাযের প্রথম রাকাআতে কিরাআত যেখানে শেষ করেছে, দ্বিতীয় রাকাআতে তারপর থেকে পড়া চাই। মাঝখানে বাদ দিলে দীর্ঘ অংশ বাদ দেওয়া চাই। যদি এত ক্ষুদ্র ছোট সূরা বাদ দিলো, যে সূরা দিয়ে দু'রাকাখত নামায পড়া যায় না, সেক্ষেত্রে ঐ সূরার প্রতি অবজ্ঞা বোঝায়। যা উচিত নয়।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন