দাম্পত্য কলহ
প্রশ্নঃ ৬০৭৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের বিবাহ হয়েছে ৩ বছরের মতন হবে। দুর সম্পর্কের আত্নীয়ের মধ্যেই বিয়ে হয়। মেয়ে বিবাহের লায়েক হওয়ার পরই তার বাবা বিবাহের কথা চিন্তা করেন। বিবাহের আগে মেয়ে সম্পর্কে ২টি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, মেয়ে নামাজি কিনা, পর্দানশীন কিনা। তার পরিবার থেকে বলা হয়েছিল মেয়ে নামাজি এবং পর্দা করে। আমার অনিচ্ছা সত্তেও ২ পরিবার ৫ লক্ষ টাকা মোহরানা ধার্য করে। আমি এত দিতে চাই নি, কারন তখন এত সামর্থ ছিলো না। নবীজি সা. সুন্নাহ মোতাবেক তাকে স্পর্শ করার আগেই তার হক্ব পরিশোধ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারে দ্বীণের চর্চা না থাকলে যা হয়। যাই হোক, অলংকার বাবদ ৩,৬০,০০০ টাকার মতন মোহরানা দিয়েছিলাম বাকিটা আল্লাহর রহমতে বিয়ের ১০ মাসের মধ্যেই দিয়ে দেই।বিয়ের পর কিছুদিন ভালই যাচ্ছিলো, কিন্তু কিছু দিন পর লক্ষ্য করলাম মেয়ে নামাজে তেমন আগ্রহ নেই, পর্দা বাধ্য না করলে করে না। আমি সবর করলাম, মনে করলাম বয়স অল্প ধীরে ধীরে ঠিক হবে, কিন্তু বিধি বাম, ঠিক হয়নি। এই ৩ বছরের সংসার জীবনে, আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ আমি তাকে সময় দেই না, তার মন বুঝি না ( মন বুঝি না, এটা সত্য কথা, নরীর মন বুঝা আসলেই কঠিন), তার সাথে কথা বলি না, তার দিকে তাকাই না। অথচ তাকে নিয়ে প্রায়ই বাইরে বেড়াতে যেতাম। তবে এটা ঠিক, আমি তার তমন ততটা রোমান্টিক না। সে বলত খুব ইচ্ছা ছিল প্রেম করব, প্রেম করে বিয়ে করব। বলতাম দেখ, আল্লাহ তোমাকে হারাম থেকে বাঁচিয়েছেন, আল্লাহর শুক্রিয়া আদায় কর।গত এক বছর ধরে সে আমাকে বলছে, আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন, আপনার সাথে আমার থাকতে ভালো লাগে না। এমন প্রতি রাতেই বলত। আমি বলতাম, সবর কর, ইন শা আল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে। তখন মজা করে বলতাম, দেখ কাওকে পছন্দ হয় নাকি। হলে তোমার বাপরে বলব; আমি আপনার মেয়ের কাছে যথেষ্ট না, আমি তাকে ছেড়ে দেই, এই ছেলে তার পছন্দ। দেখে শুনে বিয়া দেন। বিয়ের দেড় বছর বা কিছু সময় পরে তার মেসেঞ্জারে দেখলাম বেগানা পুরুষ, আমি নিষেধ করলাম। এরপর দেখলাম সে মুখ খোলা রেখে এক ছেলেকে তার ছবি দিয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। আমি দাইয়ুস হতে চাই না, আমার আখিরাতের ভয় আছে। তার বাবাকে জানালে উনি বলেন, এটা আপনারা নিজেরা কথা বলে ঠিক করে নেন। আমার স্ত্রীও মাফ চাইল, আমি মেনে নিলাম, মাফ করে দিলাম। তার নামাজ পর্দা সেই সময়ও ঠিক হয় নাই।।কোন মতে ফরজ নামাজ আদায় করত, বাইরে গেলে জোর না দিলে হাত পা ঢাকত না, মুখ খুলে রাখত। ২০২১ জানুয়ারি মাসে সে নিজে আমার কাছে ক্ষমা চায়, যে সে পর পুরুষের সাথে কথা বলে, সে অনেক বড় অন্যায় করেছে; তাকে যেন আমি মাফ করে দেই। আমি মাফ করে দিলাম। আমার ভগ্নিপতি অসুস্থ থাকায় আমি সে বিষয় এ আর নজর দিতে পারি নাই, আমরা ২ ভাই ছাড়া ঢাকায় আমার বোনের আর কেও নেই তেমন, সারাদিন অফিস, হাসপাতাল কাটত আমার। হঠাত একদিন তার মোবাইল একটা কাজের জন্য ওপেন করে দেখি ২-৩ জন ছেলের সাথে তার যোগাযোগ এবং সে বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি পাঠিয়েছে কয়েকজনকে। যা আমি আর সহ্য করতে পারি নাই, তার বাবাকে সব দেখায় বলি আপনার মেয়ে আপনি নিয়ে যান, আমি তার সাথে আর সংসার করব না। এর মাঝে আমার ভগ্নিপতি আল্লার ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যায়, আমি আর তার সাথে কোন যোগাযোগ করি নাই। তার পরিবার থেকে ২ বার সমঝোতার জন্য বসেছে। তাদের কথা, তাদের মেযে এমন না, সে ভুল করেছে, এখন বুঝতে পেরেছে এই সেই। কিন্তু আমি অনড় আমি সংসার করব না। তাকে আমি কয়েকবার সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু আর পারছি না। তাকে দেখলেই এখন ঘৃণা হয়। আমি তাকে তালাক দিতে চাচ্ছি। এমন মেয়ের সাথে সংসার করা আমার সম্ভব না। এমন মেয়ে আমার সন্তানের মা হবে এটা আমি মানতে পারি না। আমার প্রশ্ন -- তাকে তালাক দিলে কি আমাকে আল্লাহর কাছে এই জন্য জবাব দিতে হবে? কারন আমার গাফলতি আমি তাকে যথেষ্ট গাইডে রাখতে পারি নাই। আল্লাহ যদি পাকরাও করেন, তাহলে বাঁচার উপায় নেই। -- আমি জানি মোহরানা তার, পরিশোধ করার পর বলেছিলাম, আপনার সম্পদ, আপনি যেভাবে মন চায় খরচ করেন। কিন্তু খরচ হয়নি, আমার আম্মার হেফাজতেই আছে। আমি কি তার থেকে মোহরানার টাকা ফেরত পেতে পারি?,
১৩ জানুয়ারী, ২০২৫
Dhaka, Dhaka, Bangladesh
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের ব্যাপারে উম্মতকে কল্যাণের উপদেশ দিয়েছেন। বলেছেন, তাদেরকে বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু বক্রতা থাকবেই। এই বক্রতা নিয়ে যদি তাদের থেকে উপকৃত হতে চাও, তোমরা উপকৃত হতে পারবে।
নবীজির উপদেশ সামনে রেখে আপনাকে অনুরোধ করব, তাকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আবার দিন।
তার শারীরিক-মানসিক সকল চাহিদা আপনার মাধ্যমেই পূরণ হোক। মাঝে মাঝে আল্লাহ ওয়ালাদের নসীহত শোনান। মেয়েদের জন্য লিখিত কিতাবাদি পড়তে দিন। আপনি পড়ে শোনান। মহিলা সাহাবীদের জীবনী, উম্মতের মায়েরা যুগে যুগে এই সব বই পড়তে দিন। অথবা রাতে ঘুমানোর পূর্বে আপনিই কিছু অংশ পড়ে শোনান। নবীজির সীরাত, কুরআনুল কারীমের তাফসীর অধ্যায়ন করা ইত্যাদিতে ব্যস্ত রাখুন। সকালে অফিসে যাওয়ার পূর্বে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ টার্গেট দিয়ে যান। সন্ধ্যায় এসে ওইটুকু পড়া তার কাছ থেকে পরীক্ষা নিন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পুরস্কার দিন। অফিস থেকে ফেরার সময় পছন্দনীয় গিফট নিয়ে আসুন। তাকে সারপ্রাইজ দিন। একেকটা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে, এক একটি সারপ্রাইজ দিবেন। হতে পারে সেটি ৫ টাকা মূল্যের।
এছাড়া নিঃসন্তান থেকে গেলে অলসতা ও অবসরে শয়তান জেঁকে বসে। অবসর ও অলসতা শয়তানের খুব পছন্দ। এজন্য সন্তান হয়ে গেলে সন্তানের খিদমতে ব্যতিব্যস্ত থাকবে। তখন অনেক পাপাচার থেকে, শয়তানের শয়তানি থেকে হেফাজত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল। ক্ষমা পছন্দ করেন। দেখুন, আবার ক্ষমা করে দেখুন।
আল্লাহ তাআলা আপনাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রকৃত প্রেম, মোহাব্বত, ভালোবাসা, দুনিয়ার জীবনের শান্তি, আখিরাতের জীবনের সফলতা নসীব করুক। আমীন
والله اعلم بالصواب
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
২৭৩০৬
ছেলে-মেয়ে রাজি, কিন্তু অভিভাবক রাজি নয়; তাহলে গোপন-বিয়ের অনুমতি আছে কি?
২ জানুয়ারী, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
৩০২৮১
ব্যাংকারের মেয়েকে বিবাহ করা বা ব্যাংকার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়া কি জায়েজ?
১৬ আগস্ট, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে