আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৫১৬৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুসলিম হিসেবে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে।আমি একজন নারী। প্রশ্ন: ১.সেক্ষেত্রে আমার আত্মীয় কারা যাদের সাথে সবসময় সুসম্পর্ক রক্ষা করতে হবে? আর২. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার ক্ষেত্রে কি কি বিষয়ে তাদেরকে সাহায্য করতে হবে?,

১৪ মার্চ, ২০২১

কুমিল্লা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলামী শরিয়তে প্রত্যেকের সাধ্যানুযায়ী আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ওয়াজিব। তবে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে অধিক নিকটতম আত্মীয়রা অগ্রাধিকার পাবে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সেই সম্পর্ক রক্ষা করে, যা রক্ষার নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন।’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১৩৮)

আল্লাহ মানুষের ভেতর যে পারস্পরিক সম্পর্ক দান করেছেন তার রক্ষা ও আত্মীয়-স্বজনের অধিকার আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনেই ইরশাদ হয়েছে, ‘আর নিকটাত্মীয়ের অধিকার রক্ষা করো।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৬)

আত্মীয় হিসেবে পরস্পরের ও যেসব অধিকার আছে তার কয়েকটি হলো—

১. যোগাযাগ রক্ষা করা : আত্মীয়রা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে। এমনকি কেউ বিচ্ছিন্ন থাকলেও তার সঙ্গে অন্যরা যোগাযোগ রক্ষা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘... প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী সেই যে ব্যক্তি তার আত্মীয় তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে তা রক্ষা করে চলে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৯১)

২. ভালো আচরণ করা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মা-বাবার সঙ্গে উত্তম আচরণ করো, আর উত্তম আচরণ করো নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬)

৩. অভাবগ্রস্ত হলে সহযোগিতা করা : অভাবগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতার তাগিদ দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো মিসকিনকে দান করলে শুধু দানের সওয়াব আর আত্মীয়কে সহযোগিতা করলে দুটি সওয়াব—দান ও আত্মীয়তা রক্ষা।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৫৮২)

৪. মেহমানদারি করা : মেহমানদারি সাধারণ মুসলমানের অধিকার। আত্মীয় হলে তা আরো দৃঢ় হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন মেহমানকে সম্মান করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১৩৮)

৫. অসুস্থ হলে সেবা করা : আত্মীয়-স্বজন অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া এবং খোঁজখবর নেওয়া আবশ্যক। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে আহার করাও, রোগীর শুশ্রূষা করো এবং বন্দিদের মুক্ত করো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৭৩)

৬. দ্বিনের ব্যাপারে সতর্ক করা : আত্মীয়রা পরস্পরের জাগতিক কল্যাণ কামনার মতো পরকালীন কল্যাণের ব্যাপারে সচেতন ও সতর্ক করবেন। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদেরকে এবং পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করো জাহান্নামের আগুন থেকে, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৬)

সামাজিক অধিকারে আত্মীয়রা এগিয়ে

মুসলিম হিসেবে অন্যদের যেসব অধিকার রয়েছে আত্মীয়রা তাতে অগ্রাধিকার লাভ করবে। শায়খ আবদুর রহমান বিন আয়িদ এমন ১৪টি অধিকার বর্ণনা করেছেন। যার মধ্যে আছে—
সালাম আদান-প্রদান, স্নেহ ও সম্মান করা, আনন্দ-বেদনার অংশীদার হওয়া, দাওয়াত কবুল করা, জানাজায় অংশ নেওয়া, পরস্পর হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়া, বিবাদ হলে মিটিয়ে দেওয়া, অনুপস্থিতিতে দোয়া করা ইত্যাদি।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৬৬৫১৯

শশুর শাশুড়ীকে আব্বু-আম্মু ডাকার বিধান


৫ জুলাই, ২০২৪

খুলনা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৮৯০৭

স্ত্রীর নামের সঙ্গে স্বামীর নাম-পদবি যোগ করা যাবে কি?


৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আশুগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৮৩২০

শ্বশুর-শাশুড়িকে কি বাবা-মা ডাকা যাবে?


১৩ অক্টোবর, ২০২৩

রায়পুরা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy