পারিবারিক কলহ বিবাদ
প্রশ্নঃ ৮১৯৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার দুইটি প্রশ্ন সিলো.১.জায়গা সম্পত্তি জনিত বা বিভিন্ন কারণে আমাদের মনে আমার ভাই আর আমার দাদা বাড়ির সাথে রিলেসন ভালোনা..এটা মূলত আম্মু লাইক করতোনা.তাই আসলে ওরকম দাদা বাড়ি যায়না.কারন ওনারা নানা খারাও কাজ কোর্সন.আর শুনসিলাম.ব্ল্যাক ম্যাজিক ও করসিল একজন আম্মুর উপর.এজন্য আম্মু ভয় পাই বা আমাদের নিতে চাইনা দাদা বাড়ি.এখনো রেশারেশি লাগি থকা.বলতে গেলে একদম এই যোগাযোগ নাই.আব্বুর আসে.কিন্তু আমার আর আমার ভাই এর নাই.যোগাযোগ.এখন এটা কি আত্তিও এর সম্পর্ক নষ্ট করা হলো???আসলে আগে উপায় সিলোনা ছোট সিলাম.আমি মেয়ে হিসেবে যেতে পারিনা এ বাড়ি.আমার ভয় হোসেই এজন্য কি আমার গুনাহ হোসে কিনা.২. আমি এখন ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটি তে পড়তেসে.এখন আমার বাসায় একদিন আম্মজ আরকি প্রস্তাব অংশে একটা সেলের তো আমি অনেকখেপি.অনেক চিল্লাই আর বকা ঝকা করসি আম্মুকে.কারণ আসলে আমি একজন কে লাইক করি. ঐটা আম্মুকে বলা যাবেনা আপাতত.বললেও ১০০% মানবেনা.এজন্য বলিনা.এখন বিয়ে ঠেকাতে আমার চিল্লানোটা কি ইল্লজিকাল?বা এটাতে কি গুনাহ হোসে??আমি এখন পৰা কমপ্লিট করতে .
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শুধুমাত্র সন্দেহ-সংশয় এর ভিত্তিতে নিজের আপন আত্মীয়স্বজনের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা জায়েজ নয়।
বরং হাদীছ শরীফ-এ তো বলা হয়েছে যে তোমার সাথে আত্মীয়তা বিচ্ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে আত্মীয়তা বজায় রাখ।
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم صِلْ مَنْ قَطَعَكَ وَأَعْطِ مَنْ حَرَمَكَ وَاعْفُ عَمَّنْ ظَلَمَكَ
উক্ববাহ বিন আমের রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমার সঙ্গে যে আত্মীয়তা ছিন্ন করেছে, তুমি তার সাথে আত্মীয়তা বজায় রাখ, তোমাকে যে বঞ্চিত করেছে, তুমি তাকে প্রদান কর এবং যে তোমার প্রতি অন্যায় আচরণ করেছে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও।”
(মুসনাদ আহমাদ ১৭৪৫২, হাকেম ৭২৮৫, ত্বাবারানী ১৪২৫৮, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৮০৭৯, সিঃ সহীহাহ ৮৯১ নং)
স্বামী-স্ত্রী যথাসম্ভব একত্রে থাকাই হল কাম্য। আপনার বাবা-মা যদি দুজন দুই জায়গাতে বসবাস করেন এবং তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী সুলভ সুসম্পর্ক বজায় রাখেন না, তাহলে তো একজন আরেকজনের প্রতি জুলুম করছেন। বিষয়টি এমন হয়ে থাকলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
ব্ল্যাক মেজিক, জাদু টোনা ইত্যাদি শরীয়তে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং এগুলোর অধিকাংশই কুফর শিরিকের মাধ্যমে করা হয়। যার ফলে ঈমান-আমল সব ধ্বংস হয়ে যায়।
একটা সময় আপনি ছোট ছিলেন। কিছু করার ছিল না। এখন যেহেতু আল্লাহ তাআলা আপনাকে শুভবুদ্ধি দান করেছেন, আপনি আত্মীয়তার বজায় রাখার চেষ্টা করুন এবং আপনাদেরকে যেন ব্ল্যাক ম্যাজিক না করতে পারে এজন্য নিজের সেফটি ও প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করুন।
এভাবে-
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর
দুরুদ শরীফ তিনবার
সুরাতুল ফাতিহা তিনবার
আয়াতুল কুরসী তিনবার
সূরা ফালাক্ব তিনবার
সূরা না-স তিনবার
দুরুদ শরীফ তিনবার পড়ে দুই হাতের তালুতে ফু দিয়ে প্রথমে চেহারা, মাথা, শরীরের সামনের অংশ, এরপর যথাসম্ভব পুরো শরীর মাসাহ করে দিবেন।
রাতে ঘুমানোর সময় এই আমলটি আরেকবার করবেন।
কোনো ওয়াক্তে আমল করতে ভুলে গেলে স্মরণ আসামাত্রই আমল করে নেবেন।
বিবাহ বহির্ভূত প্রেম ভালোবাসা জায়েজ নয়। এটি অশ্লীলতা। এটি হারাম।
কোন উপযুক্ত পাত্রকে পছন্দ হয়ে থাকলে তিনি যদি শরীয়তের মানদণ্ডে আপনার উপযুক্ত হয়ে থাকেন তবে শরীয়তের নীতিমালা অনুযায়ী পারিবারিকভাবে তাকে বিবাহ করে নিন। পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। অযথা নিজের পরিবারে গোলযোগ সৃষ্টি করার কোনই অর্থ নেই। বিবাহের বয়স হয়ে থাকলে বিবাহে দেরি করা উচিত নয়।
উপযুক্ত প্রস্তাব এলে বিবাহ করাতে গড়িমশি নয়:
আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِذَا خَطَبَ إِلَيْكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ ، إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ
তোমরা যে ছেলের দ্বীনাদারি ও চরিত্রের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হতে পার সে যদি প্রস্তাব দেয় তাহলে তার কাছে বিয়ে দাও। যদি তা না কর তাহলে পৃথিবীতে মহা ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হবে। (তিরমিযী ১০৮৪)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন