আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ফাসেকের ইমামতি

প্রশ্নঃ ৪৩৯৫৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফাসেক কাকে বলে? কী কী কাজ করলে ফাসেক হয়? এবং ফাসেকের ইমামতির মাসয়ালা কী? একটু বিস্তারিত আলোচনা করার অনুরোধ রইল?,

৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

চককাউরিয়া

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


এক–ইমাম ও ইমামতি ইসলাম ধর্মের এবং মুসলিম সমাজের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল প্রয়োজনীয় বিষয়। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামায সম্পাদন করা ইসলামের দ্বিতীয় রোকন এবং ইসলামের স্পষ্ট প্রতীক যা মহান আল্লাহ জামাআতবদ্ধভাবে আদায় করার আদেশ করেছেন। আর সেই আদেশ ইমাম ব্যতীত বাস্তবায়িত হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের ব্যাপারে বলেছেন,
ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺿﺎﻣﻦ ﻭﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻣﺆﺗﻤﻦ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﺭﺷﺪ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﺍﻏﻔﺮ ﻟﻠﻤﺆﺫﻧﻴﻦ
‘ইমাম হচ্ছে দায়িত্বশীল আর মুয়াজ্জিন আমানতদার, হে আল্লাহ! ইমামদের সঠিক পথ দেখান এবং মুয়াজ্জিনদেরকে ক্ষমা করুন’। (তিরিমিযী ২০৭)

দুই–একারণেই মুসলিম সমাজের কর্তব্য হল, ইলম ও আমলে কোরআন-সুন্নাহর যথাযথ অনুসারী যোগ্য ইমাম নির্বাচন করা। কারণ ইমামতো তাকেই বলা হয়, মানুষ যার অনুসরণ করে। (লিসানুল আরব, ইবনে মনজুর,১২/২৪) আর অনুসরণীয় লোকটি যদি নিজেই বিদআত ও প্রকাশ্যে কবিরা গোনাহয় লিপ্ত থাকে, তাহলে সমাজের মানুষগুলো আর কাকে অনুসরণ করবে! মনে রাখবেন, যোগ্য ইমাম নির্বাচনে ভুল করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ (বিশেষতঃ মসজিদ কমিটি) সমাজের সকলের হক নষ্টকারী হিসেবে আল্লাহর কাছে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,ألا كُلُّكُمْ راعٍ ، وكُلُّكُمْ مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ’ তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল আর তোমাদের প্রত্যেককে সে দায়িত্ব সম্পর্কে জবাব দিতে হবে।’ ( বুখারি ৭১৩৮)

তিন–একজন ইমাম যদি কিয়াম করেন, তাহলে তিনি বেদআতি, আর যদি দাঁড়ি এক মুষ্ঠির কম রাখেন এবং প্রকাশ্যে পর্দা লংঘন করেন তাহলে তিনি ফাসেক। এ জাতীয় ইমাম নিঃসন্দেহে ইমামতির যোগ্যতা রাখে না, বরং তার পেছনে নামাজ আদায় করা মাকরূহে তাহরীমী। ফিকাহর কিতাবসমূহে এসেছে, إن إمامةالفاسق مكروه تحريما‘ফাসিক ব্যক্তির ইমামতি মাকরূহে তাহরীমী।’ (তাহত্বাভী পৃ: ২৪৪) সুতরাং এমন ইমামের দায়িত্ব হল, এহেন গর্হিত কাজগুলো থেকে তাওবা করা। যদি তিনি তাওবা করে ফিরে না আসেন তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব হল, তাকে অনতিবিলম্বে অপসারণ করা।

পরিশেষে এ মর্মে একটি হাদিস পেশ করছি। আশা করি, আপনাদের বোধদয় হবে।

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم: ثَلاَثَةٌ لاَ تُقْبَلُ لَهُمْ صَلاَةٌ الرَّجُلُ يَؤُمُّ الْقَوْمَ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ وَالرَّجُلُ لاَ يَأْتِي الصَّلاَةَ إِلاَّ دِبَارًا – يَعْنِي بَعْدَ مَا يَفُوتُهُ الْوَقْتُ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যাক্তির নামাজ কবূল হয় না, যে ব্যাক্তি লোকেদের ইমামতি করে তাকে তারা অপছন্দ করা সত্ত্বেও, যে ব্যাক্তি নামাজের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর নামজ পড়ে এবং যে ব্যাক্তি কোন স্বাধীন ব্যাক্তিকে দাস বানায়।(ইবন মাজাহ ৯৭১) (শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী)




আর "ফাসিক" এমন ব্যক্তিকে বোঝায় যে ঈমান আনার পর আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। এবং শরীয়তের কিছু বা সমস্ত আদেশকে অবহেলা করে এবং যে বড় গুনাহ করে বা ছোট গুনাহ বারবার করতে থাকে।



حاشية الطحطاوي على مراقي الفلاح (1 / 303):
"والفسق لغةً: خروج عن الاستقامة وهو معنى قولهم: خروج الشيء عن الشيء على وجه الفساد. وشرعًا: خروج عن طاعة الله تعالى بارتكاب كبيرة. قال القهستاني أي أو إصرار على صغيرة".

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের
মুহাদ্দিস, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৬১৮২৬

শিয়াদের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকিদা


৫ জুলাই, ২০২৪

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৭৬৭৮

রজম সংক্রান্ত বুখারী শরীফের একটি হাদীসের ব্যাখ্যা


৮ আগস্ট, ২০২৩

টঙ্গী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

৭০৭৬৬

সাউন্ড ইফেক্ট (Sound Effect) ব্যবহার করা জায়েজ?


২৮ আগস্ট, ২০২৪

কেরাণীগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৭৫৯৯৯

কারো মৃত্যুতে আলহামদুলিল্লাহ বলা


২১ অক্টোবর, ২০২৪

গোপালগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy