রাসূলুল্লাহ সা. কে “نَبِيُّ الأَنْبِيَاء বা নবীদের নবী বলা যাবে কি?
প্রশ্নঃ ৪৩৮৭৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কে "নবীদের নবী অর্থাৎ তিনি যেমন আমাদের জন্য নবী সমস্ত নবীদের জন্যও নবী" এ কথা বলা বলা যাবে কিনা? এ বিষয়ে দলিল ভিত্তিক আলোচনা জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।,
২৫ অক্টোবর, ২০২৩
XJPP+P৬৭
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
কুরআন সুন্নাহে সরাসরি কোথাও রাসূলুল্লাহ সা. কে “نَبِيُّ الأَنْبِيَاء (নবীদের নবী) বলা হয়নি। তাই তাঁকে نَبِيُّ الأَنْبِيَاء বলা যাবে কি না বিষয়টি কিছুটা আলোচনা সাপেক্ষ। আপনার প্রশ্নের দাবীর আলোকে আমরা বিষয়টি বিশদভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে।
রাসূলুল্লাহ সা. সকল আম্বিয়া আলাহিমুস সালাতু ওয়াসসালামগণ থেকে উত্তম এবং সকল নবীর সর্দার। এটা সর্বজন স্বীকৃত। এই কারণেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজের রাতে সমস্ত নবীদের ইমামতি করেছেন। তাঁর নবুয়ত হজরত আদম আ. থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত ব্যাপৃত। কেননা আল্লাহ তয়ালা সুরা আলে ইমরানের ৮১ নং আয়াতে সকল সকল নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তারা যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় পায় তবে তাঁরা তাঁর প্রতি বাহ্যিকভাবেও ইমান আনবেন এবং নিজ নিজ উম্মতকেও এব্যাপারে তাগাদা দিবেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
وَاِذۡ اَخَذَ اللّٰہُ مِیۡثَاقَ النَّبِیّٖنَ لَمَاۤ اٰتَیۡتُکُمۡ مِّنۡ کِتٰبٍ وَّحِکۡمَۃٍ ثُمَّ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَکُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِہٖ وَلَتَنۡصُرُنَّہٗ ؕ قَالَ ءَاَقۡرَرۡتُمۡ وَاَخَذۡتُمۡ عَلٰی ذٰلِکُمۡ اِصۡرِیۡ ؕ قَالُوۡۤا اَقۡرَرۡنَا ؕ قَالَ فَاشۡہَدُوۡا وَاَنَا مَعَکُمۡ مِّنَ الشّٰہِدِیۡنَ
অর্থ: এবং (তাদেরকে সেই সময়ের কথা স্মরণ করাও) যখন আল্লাহ নবীগণ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, আমি যদি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত দান করি, তারপর তোমাদের নিকট কোন রাসূল আগমন করে, যে তোমাদের কাছে যে কিতাব আছে তার সমর্থন করে, তবে তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তার সাহায্য করবে। আল্লাহ (সেই নবীদেরকে) বলেছিলেন, তোমরা কি একথা স্বীকার করছ এবং আমার পক্ষ হতে প্রদত্ত্ব এ দায়িত্ব গ্রহণ করছ? তারা বলেছিনে, আমরা স্বীকার করছি। আল্লাহ বললেন, তবে তোমরা (একে অন্যের স্বীকারোক্তি সম্পর্কে) সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী থাকলাম। (সূরা আলে ইমরান:আয়াত নং-৮১)
তাফসির,
অর্থাৎ প্রত্যেক নবী থেকেই প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছে যে, তার জীবদ্দশায় শেষনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আবির্ভাব ঘটলে যেন তাঁর প্রতি ঈমান আনে ও তাঁর সাহায্য করে। অন্যথায় যেন নিজ উম্মতকে ওসিয়ত করে যায়, যখন শেষনবীর আগমন হবে তখন যেন তারা তাঁর প্রতি ঈমান আনে। সুতরাং এ হিসেবেও দুনিয়ার সমস্ত জাতির কর্তব্য শেষনবীর প্রতি ঈমান আনা। -অনুবাদক HTTPS://MUSLIMBANGLA.COM/SURA/3/TAFSIR/81
এই আয়াত থেকে একথা স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহ তায়ালা সকল নবীর কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, যখনই তাঁদের পরে কোনো রাসূল আগমন করবেন, তখন তাদের জন্য আবশ্যক হলো, তাঁরা তাঁদের পূর্ববর্তী নবীর সত্যতা এবং তাঁর নবুয়তের ওপর ইমান আনবেন এবং তাঁর উম্মতকেও এই নির্দেশ দিবেন। কোরআনের এই বিধান থেকে এটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাপারেও নবীদের কাছ থেকে অনুরূপ অঙ্গীকার নিয়েছেন।
মুফাসসিরগণ উল্লেখ করেছেন যে, উপরোক্ত আয়াতে ‘রাসূল’ দ্বারা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. উদ্দেশ্য।
আল্লামা সুবাকি (রহঃ) তার "التعظیم والمنۃ فی لتومنن بہ ولتنصرنہ " গ্রন্থে উল্লেখ করেন,
میں فرماتے ہیں کہ " آیت میں رسول سے مراد محمد (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) ہیں اور کوئی نبی بھی ایسا نہیں گزرا جس سے اللہ تعالیٰ نے آپ کی ذات و صفات کے بارے میں تائید و نصرت اور آپ (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) پر ایمان لانے کا عہد نہ لیا ہو، اور کوئی بھی ایسا نبی نہیں گزرا جس نے اپنی امت کو آپ (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) پر ایمان لانے اور تائید و نصرت کی وصیت نہ کی ہو، اور اگر حضورِ اکرم (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) کی بعثت انبیاء کے زمانے میں ہوتی تو ان سب کے نبی آپ (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) ہی ہوتے اور وہ تمام انبیاء آپ (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) کی امت میں شمار ہوتے، اس سے معلوم ہوا کہ آپ (صلی اللہ علیہ وآلہ وسلم) کی شان محض "نبی الامت" ہی کی نہیں ہے، بلکہ "نبی الانبیاء" کی بھی ہے۔
অর্থ: "(এই) আয়াতে ‘রাসূল’ মানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্দেশ্য। কেননা এমন কোন নবী অতিবাহিত হয়নি আল্লাহ তায়ালা যার থেকে রাসূলুল্লাহ সা. এর জাত ও সিফাতের ব্যাপারে এবং তাকে সত্যায়ন ও সাহায্যের ব্যাপারে অঙ্গিকার নেননি। এবং এমন কোন নবী নেই যিনি তাঁর উম্মতকে তাঁর প্রতি ঈমান আনার এবং তাঁকে সমর্থন ও সহযোগিতা করার অসিয়ত করেননি। যদি অন্য কোনো নবীর সময়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হতেন তবে তিনি তাদের সকলের নবী হতেন এবং সেই সকল নবী তার উম্মত হতেন। এই থেকে প্রতিয়মাণ হয় যে, রাসূলুল্লাহ সা. শুধুমাত্র "উম্মতদের নবী" নন বরং তিনি, "নবীগণেরও নবী।
ফলে একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজেই বলেছেন যে, আজ যদি মূসা (আঃ) বেঁচে থাকতেন, তবে তাঁরও আমাকে অনুসরণ করা ছাড়া কোন উপায় থাকত না।
অন্য জায়গায় বলেছেন যে, ঈসা (আঃ) যখন আগমন করবেন তখন তিনিও কুরআনের বিধান এবং আপনার নবীর অনুসরণ করবেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
এ থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াত “সার্বজনীন বিস্তৃত” এবং পূর্ববর্তী সকল শরিয়ত তাঁর শরীয়তে একীভূত। এই আলোচনা থেকে রাসূলুল্লাহ সা. এর এই উক্তি “بعثت الی الناس کافۃ - আমি সকল মানুষের কাছে প্রেরিত হয়েছি”-এর সঠিক অর্থও বেরিয়ে আসে যে, হাদিসের মর্ম এ-ই বোঝায় যে, রাসূলুল্লাহ সা. এর নবুয়ত কেবল তার সময় থেকে কিয়ামত পর্যন্তই নয় বরং তাঁর নবুয়তের সময়কাল এতই বিস্তৃত যে এটি আদম (আঃ) এর নবুওয়াতের আগে থেকে শুরু হয়েছে। যেমনটি রাসূলু্ল্লাহ সা. এক হাদীসে বলেছেন, کنت نبیاً و اٰدم بین الروح والجسد". আমি তখন থেকেই নবী ছিলাম যখন আদম আ. রূহ এবং শরীরের মাঝে ব্যাপৃত ছিলেন।
হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালার কাছে ‘শাফায়াতে কুবরা’ এর জন্য অগ্রসর হওয়া এবং সমস্ত বনি আদম তাঁর ঝান্ডার নিচে সমবেত হওয়া এবং মিরাজের রজনীতে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাসে সমস্ত নবীদের উপস্থিতিতে ইমামতি করা রাসূলুল্লাহ সা. এর সার্বজনীন নেতৃত্য এবং সকল নবীদের সর্দার হওয়ার নিদর্শনই বহন করে। (তাফসিরে মাআরিফুল কুরআন 2/100 : মাকতাবা মাআরিফুল কুরআন)
অতএব, উপরোক্ত বিবরণ থেকে জানা যায় যে, এই অর্থে রাসূলুল্লাহ সা. কে “نَبِيُّ الأَنْبِيَاء (নবীদের নবী) বলাও যথার্থ হবে।
فتوی نمبر : 144103200579
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن
والله اعلم بالصواب
উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯০৪৯৪
হারাম টাকায় পোষাক বানিয়ে তা পরে ইবাদত করলে ইবাদত কবুল হবে?
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
G৯FW+M৫W

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
৯০৫৮৩
ভিন্ন দেশ থেকে ৩০ রোযা রেখে বাংলাদেশে গেলে রোযা রাখতে হবে? রাখলে ৩১টা হয়ে যায়। করণীয় কি?
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
대한민국 경기도 파주시 월롱면 통일로৬২০번길 ৮৯-৫৩ (KR)

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
৯০৩৪৪
‘‘এক বলেই আউট হয়ে যাবে’’ ‘‘নিশ্চিত আজকে ওরা হারবে’’ এধরণের বাক্য বলার দ্বারা কি শিরক হয়?
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
CG৩X+VQ

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে