আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৪২৫৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম, ভালো আছেন শায়েখ? ইসলামিক ভিডিও দেখা,তোলা কী জায়েজ আছে? দলীল সহ উত্তর দিবেন?,

৮ জানুয়ারী, ২০২১

ভালুকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


وعلیکم السلام ورحمة الله وبركاته

ভিডিওর বিষয়টি মতবিরোধপূর্ণ।
একদল মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরামের মতে ছবি ও ভিডিওর একই হুকুম। ছবি যেমন নাজায়েজ, ভিডিও তেমনি নাজায়েজ। ছবি নাজায়েজ হওয়ার বিষয়টি তো হাদীস দ্বারা সুস্পষ্ট প্রমাণিত। নবীজির যুগে ভিডিওর অস্তিত্ব না থাকায় হাদীসে এর আলোচনার নেই। বিধায় এটিকে ছবির হুকুমে ধরে নিয়েছেন। কোন বিষয়ে জায়েজ নাজায়েজ সন্দেহ সন্দেহপূর্ণ হলে তারা সতর্কতামূলক এটিকে নাজায়েজ ধরে নেন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, হালাল স্পষ্ট। হারাম স্পষ্ট। উভয়ের মাঝে আছে কিছু সন্দেহপূর্ণ বিষয়। যারা সন্দেহপূর্ণ বিষয় থেকে বেঁচে থাকে, তারা হারাম থেকে বেঁচে থাকতে পারে। আর যারা সন্দেহপূর্ণ বিষয়ে লিপ্ত হয়ে যায়, তারা হারামে লিপ্ত হয়ে যায়। নবীজির এই হাদীসের আলোকে তারা ছবি ভিডিওকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দেন।

আরেকদল ওলামায়ে কেরাম স্থিরচিত্র যা কাগজে বা কাপড়ে প্রিন্ট করা হয়েছে, এগুলোকে নাজায়েজ মনে করেন। ডিজিটাল ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত এবং ভিডিওকে তারা জায়েজ মনে করেন। যেহেতু ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ছাড়া তার অস্তিত্ব দেখানো সম্ভব নয়। বাস্তবতায় তার অস্তিত্ব চাক্ষুষ করানো যায় না। এমন ছবিকে তারা আয়নায় প্রতিচ্ছবির হুকুমে মনে করেন। অবশ্য সেটি নিঃশর্তভাবে নয়। এসব ভিডিও অশ্লীল ও গায়রে মাহরামের না হলে তা দেখা যাবে বলে ফতোয়া দিয়েছেন।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ وَأَهْوَى النُّعْمَانُ بِإِصْبَعَيْهِ إِلَى أُذُنَيْهِ ‏ "‏ إِنَّ الْحَلاَلَ بَيِّنٌ وَإِنَّ الْحَرَامَ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيهِ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ أَلاَ وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلاَ وَهِيَ الْقَلْبُ ‏"‏ ‏.‏

নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি শুনেছিঃ অর্থাৎ- বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, রাবী বলেনঃ (এ সময় নু’মান তাঁর আঙ্গুল দ’টি দ্বারা কানের দিকে ইশারা করেন, নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যাক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেক দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদের রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান! আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশ্‌ত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো ‘কাল্‌ব’ হৃদয়।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৯৮৬

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ، تَقُولُ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ سَتَرْتُ سَهْوَةً لِي بِقِرَامٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ فَلَمَّا رَآهُ هَتَكَهُ وَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ وَقَالَ ‏ "‏ يَا عَائِشَةُ أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُضَاهُونَ بِخَلْقِ اللَّهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقَطَعْنَاهُ فَجَعَلْنَا مِنْهُ وِسَادَةً أَوْ وِسَادَتَيْنِ ‏.‏

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন, সে সময় আমি আমার একটি তাক পর্দা দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম, যার মধ্যে ছবি ছিল। তিনি সেটি দেখতে পেয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং তাঁর চেহারা বিমর্ষ হয়ে গেল। তিনি বললেন, হে ‘আয়িশাহ্! কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট ঐ সমস্ত ব্যক্তি ভয়ঙ্কর শাস্তি আস্বাদন করবে, যারা আল্লাহ্‌র সৃষ্টির অনুরূপ সৃষ্টি করে।
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমরা সে সময় সেটি কেটে ফেললাম এবং সেটা দ্বারা একটা বা দু’টো বালিশ তৈরি করলাম।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৪২১

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৪১৪৯

মায়ের মিশ্রিত পরিবেশে চাকরি করার কারণে ছেলে দাইয়ুস হয়ে যাবে কি?


২২ জুন, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪২৩০৩

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৪১৩৩৪

ব্যাংকের অনুদান গ্রহণ করা জায়েজ?


৩ অক্টোবর, ২০২৩

শ্রীনগর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের

৩৪০১৭

নিজের হক আদায়ে জন্য মিথ্যা বলার হুকুম।


৯ জুন, ২০২৩

ত্রিশাল

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আবু সাঈদ

৪১২২৭

নাপাক অবস্থায় নামাজ পড়লে কি মানুষ মুরতাদ হয়ে যায়?


২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

আশুলিয়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy