و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

সম্মানিত প্রশ্নকারী!
পারিবারিক কলহ বিবাদের প্রশ্নগুলোর মাঝে আরো অনেকগুলো প্রশ্ন থাকে যেগুলো সরাসরি প্রশ্নকারীর কাছ থেকে জানতে হয় এবং সেই আলোকে সমাধান দিতে হয়। এজন্য পারতপক্ষে আমরা এজাতীয় প্রশ্নে হাত দিই না। কিন্তু কেন যেন আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে মন সায় দিল আল্লাহই মালুম। তবে আমাদের যে প্রশ্নগুলো সব থেকে বেশী পীড়া দেয় সেগুলো হয় দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি। রাগ অভিমানে সংসার ভেঙ্গে যাওয়া। সেজন্যই হয়তো আপনার প্রশ্নের উত্তর লিখছি। এই আশায় যেন, আপনার জীবনে এজাতীয় কিছু হয়ে না যায়।

প্রিয় ভাই!
ইসলামী শরীয়ত অত্যন্ত ভারসম্মপূর্ণ ।কুআনের ভাষায় এই উম্মতকে মধ্যমপন্থী উম্মত বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাই সবকিছুতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন। পারিবারিব খুনসুটি সব পরিবারেই থাকে। এর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মধুর হয়। ভালোবাসা অটুট হয়। কিন্তু এর সামাধান মাথা গরম করা নয়। বরং যা কিছু করবেন ঠান্ডা মাথায় করুন। আপনার/আপনাদের একটি ভুল/তড়িৎ সিদ্ধান্ত আপনাদের অনাগত সন্তানের জীবনে অন্ধাকার ডেকে আনতে পারে। কাজেই ধৈর্যধারণ করুন।

দাম্পত্য জীবন সুখেময় করার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উপকরণ হলো, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বুঝা। পারস্পরিক বুঝাপড়া না থাকলে দাম্পত্য সম্পর্ক সুখকর হয় না। তাই উভয়ের উচিত উভয়ের প্রতি ছাড় দেওয়ার মানসিকতা লালন করা। একজন রাগ করলে কখনো অপরজন রাগ করবেন না। অন্যের উপর রাখ- ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারা বীরত্ব নয়। বরং ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রর করাই বীরত্বের প্রতীক। নিচের হাদিসটি দেখুন।

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الغَضَبِ»

৫৬৮৪। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই প্রকৃত বাহাদুর, যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।
আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ (সহীহ বুখারী)
হাদীস নং: ৫৬৮৪ আন্তর্জাতিক নং: ৬১১৪
হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/5684

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় নারীদের জীবন যাপন স্বাভাবিক থাকে না। মন মেজাজ সবসময় এক রকম থাকে না। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম ইত্যাদিতে তাদের প্রচুর ঘাটতি হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে তারা সামান্যতেই রেগে যায়। কাজেই ওই সময় পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের উচিত বিশেষত স্বামীর জন্য আবশ্যক হলো, স্ত্রীকে সময় দেওয়া। তার ভালো মন্দ খোঁজ খবর নেওয়া। তার আব্দারগুলো (সম্ভব হলে) পুরন করা।

দাম্পত্য জীবন সুখময় করতে মাওলানা জুলফিকার আলী নকশবন্দী হাফিজাহুল্লাহ এর “সংসার সুখের হয় দুজনের গুণে” বইটি অবশ্যই পাঠ করুন। একা নয় উভয়ে পড়ুন। তাহলে আশা করি দাম্পত্য জীবনে মান অভিমান থাকলেও সম্পর্কের অবনতি হবে না। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কবুল করুন। আমিন।
উপরোক্ত বইটি রকমারী.কম সহ অন্যান্য অনলাইন বুকশপেও পাওয়া যাবে। এছাড়াও অনলাইনে পিডিএফও পেতে পারেন।

والله اعلم بالصواب